মাথাব্যথার কারণে আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন প্রভাবিত হয়। বর্তমানে দৌড়ঝাপের জীবনে আট থেকে আশি মাথা ব্যথা সকলেরই হয়ে থাকে। এই ব্যথাই মাঝে মাঝে অসহনীয় হয়ে ওঠে। এমনই এক মাথা ব্যথার সমস্যা হল মাইগ্রেনের সমস্যা।
মাইগ্রেন কী
মাইগ্রেন হলে মাথার অর্ধেক অংশ ব্যথা করে। এই ব্যথা মাঝে মাঝে হয় আবার নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যায়। অনেক সময় পুরো মাথা ব্যথা করতে শুরু করে। কয়েক মিনিট থেকে শুরু করে কয়েকদিন পর্যন্ত এই ব্যথা থাকে। এটি একটি নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। এতে মাথা ব্যথার পাশাপাশি অনেকের বমি বা সর্দির সমস্যা হতে শুরু করে। তবে সমস্ত মাথা ব্যথা মাইগ্রেন হয় না।
মাইগ্রেন কত প্রকারের
চিকিৎসকদের মতে মাইগ্রেনের ব্যথা হেরিডিটারি। যে কোনও বয়সের ব্যক্তিকে এই ব্যথা হতে পারে। দু ধরণের মাইগ্রেন হয়— ক্লাসিকাল মাইগ্রেন ও নন ক্লাসিকাল মাইগ্রেন। ক্লাসিকাল মাইগ্রেন হলে ব্যক্তির মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যায়। নন ক্লাসিকাল মাইগ্রেনে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তীব্র মাথা ব্যথা হয়। তবে এর অন্য কোনও লক্ষণ দেখা যায় না। মাইগ্রেনের ব্যথা হলে নিজের ইচ্ছানুযায়ী কোনও ওষুধ খাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
মাইগ্রেনের লক্ষণ
- খিদে কমে যাওয়া।
- কোনও কাজে মনোনিবেশ করতে না পারা।
- পুরো বা অর্ধেক মাথায় তীব্র ব্যথা।
- অধিক ঘাম হওয়া।
- তীব্র শব্দ ও আলোয় ঘাবড়ে যাওয়া।
- কোনও খাবার-দাবারের প্রতি অ্যালার্জি হওয়া।
- বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব থাকা।
দুর্বলতা অনুভতবে যাঁদের মাইগ্রেনের সমস্যা রয়েছে, তাঁদের কিছু কিছু অভ্যাস এড়িয়ে যাওয়া উচিত—
পেট খালি রাখবেন না - পেট খালি থাকলে মাইগ্রেনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। খালি পেটে গ্যাসট্রিক হয় যা মাইগ্রেনকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
আবহাওয়া- রোদে ঘোরাঘুরি করলে মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। এছাড়াও অতিরিক্ত গরম, আর্দ্রতার তারতম্য হলেও মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে।
মানসিক চাপ- কাজের অত্যধিক চাপ নিলেও এই ব্যথা হয়। নিজের খাওয়া-দাওয়া বা ঘুমের নির্দিষ্ট সময় মেনে চলতে না পারলে মাইগ্রেনে আক্রান্ত হতে দেখা যায়। তাই মানসিক চাপ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। মানসিক চাপে থাকলে এক কাপ লেবু চা খান। এতে স্বস্তি পেতে পারেন।
অতিরিক্ত চিনি জাতীয় খাবার খাওয়া- অত্যধিক মিষ্টি রক্তে শর্করার পরিমাণ বৃদ্ধি করে। শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখলে ইনসুলিন উৎপাদন হতে শুরু করে। এর ফলে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে যায়। রক্তে শর্করার পরিমাণের তারতম্যের কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে।
অতিরিক্ত আওয়াজের কারণেও সমস্যা দেখা দিতে পারে- খুব জোরে গান শোনা ইত্যাদি কারণেও মাইগ্রেনের ব্যথা হতে পারে। প্রচণ্ড জোরে আওয়াজ হলে টানা দুদিন এই ব্যথা হতে পারে।
অতিরিক্ত ঘুম- ঘুমের অনিয়ম হলে শরীরের ওপর খারাপ প্রভাব পড়ে। নিয়মিত ৫-৬ ঘণ্টা ঘুমের অভ্যাস থাকে যে ব্যক্তির, সে যদি কোনও একদিন হঠাৎ বেশি ঘুমিয়ে ফেলেন, তখনও মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু।