মহিলারা সমাজের একটা বর অঙ্গ। তবে নানা সময় দেখা গিয়েছে মা ও শিশু শিকার হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদি জটিলতার। বড় থেকে ছোট সব হাসপাতালে কমেছে প্রসব কিন্তু বাড়ছে শিশু ও মায়ের মৃত্যু। প্রসব পরবর্তী নানা জটিলতা নিয়ে হাসপাতালে এলেও শেষ রক্ষা হচ্ছে না।
আপনি কী জানেন? রোজ কয়েকশ শিশুর মাতৃগর্ভেই মৃত্যু হয়। শুধুমাত্র পুষ্টির অভাবে। এবং জন্মকালীন সতর্কতা না মেনে চলার কারণে। এরকম ঘটনা বিশেষ করে লক্ষ্য করা যায় গ্রামীণ এলাকায়। সমস্যা সমাধানে গ্রামীণ প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবাকেন্দ্রগুলিকে সচল রাখার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে গ্রামে এখনও অবধি অনেক সুযোগ সুবিধে পৌঁছতে পারেনি। দুর্বল রাস্তাঘাট, শিক্ষার অভাব যার জন্য দায়ি। এখনও গ্রামের লোকেরা বেশ কিছু কুসংস্কার মেনে চলে প্রসবের সময়, যা একদমই উচিত না।
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের স্বাস্থ্য কতটা নিরাপদ? এ বিষয়ে সরকারি বেসরকারি নানা উদ্যোগ যদিও নেওয়া হয়। তবে সেই উদ্যোগ যথেষ্ট নয়। বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প, উদ্যোগ নেওয়ার পরও শিশু ও মহিলার মৃত্যু বাড়ছে। জন্ম নেওয়ার পর মারা যাচ্ছে শিশু। তার কারণ হতে পারে মায়ের অসুস্থতা। মায়ের শরীরের ভাইরাস রক্তের মাধ্যমে শিশুর শরীরে প্রবেশ করে। গ্রামে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম না থাকার কারণে সেই রোগীর সঠিক চিকিৎসা করা সম্ভব হয় না। ফলে জন্মের আগে অথবা জন্মের পরেই শিশুটি ঢলে পড়ছে মৃত্যুর মুখে।
গর্ভাবস্থায় একজন মহিলার যে বিষয়ের উপর সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হয় তা হল মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য। ডাক্তাররা মনে করেন তাঁর জন্য গর্ভবতী মাকে অন্ত্যত তিনবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রু্টিন চেকাপ করা দরকার। এছাড়া যে সমস্যাগুলি রয়েছে তা হল পর্যাপ্ত হাসপাতালের অভাব। প্রসূতি বিভাগের অভাব, হাসপাতালে কাজ করার জন্য কর্মীর অভাব সঙ্গে অনুন্নত যোগাযোগ ব্যাবস্থা।
উল্লেখ্য, গবেষণায় ধরা পড়েছে ১৫-২৯ বছর বয়সি মহিলাদের মধ্যে ৫০% মারা গিয়েছে প্রসবের সময়। এই গবেষণায় এমন তথ্যই ধরা পড়েছে। এখানে বলা হয়েছে মায়ের চেয়ে সদ্যোজাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে বেশি। যার কারণ গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ঠিক করে যত্ন নেওয়া হয় না। তাঁরা পায় না দরকারি পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ।
মাতৃত্বকালীন যে সব সুপার স্পেশালিটি হসপিটালগুলি রয়েছে তা বেশিরভাগই অনেক প্রত্যন্ত অঞ্চলে। গ্রামের অনেক ভেতরে হওয়ার জন্য দরকারে সেখানে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব। যাঁর অন্যতম কারণ অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। রোগীকে নিয়ে যাওয়ার আগেই সে মারা যায় অথবা এমন অবস্থায় হাসপাতালে যায় যে, গর্ভজাত শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয় না। এমনটাই মন্তব্য করে থাকেন ডাক্তাররা।
বর্তমানে মেয়েদের নানা ভাবে শিক্ষিত করার চেষ্টা করছে সরকার। চালু হয়েছে নানা সরকারি উদ্যোগ। কিন্তু তা সত্বেও থেকে যাচ্ছে ফাঁক। তাদের মধ্যে এখনও আছে সচেতনতার অভাব। তাই প্রাথমিকভাবে একজন মেয়েকে শিক্ষিত করা অবশ্যই দরকার। একমাত্র তাহলেই কমতে পারে শিশুমৃত্যুর হার।