পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক অংশের মহিলাদের থেকে সস্তায় মাতৃদুগ্ধ কিনছে বিভিন্ন কোম্পানি। প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করেই তৈরি হচ্ছে গুঁড়ো দুধ। অভিযোগ পাওয়ার পরেই কড়া হুঁশিয়ারি এফএসএসএআই-এর। মাতৃদুগ্ধ বিক্রি ও ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ফুড সেফটি অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্স অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (এফএসএসএআই)। এই নির্দেশিকা অনুসারে, মাতৃদুগ্ধ সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিজ্ঞাপন, বিক্রি এবং এমনকি মাতৃদুগ্ধ দিয়ে তৈরি পণ্যের ব্যবসাও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। লাইসেন্স বাতিল হয়েছে বেঙ্গালুরু ভিত্তিক ব্রিটিশ সংস্থা নিওলাক্টার। এই পদক্ষেপ নেওয়ার পেছনে মূল কারণ হল, বাজারে মাতৃদুগ্ধের অবৈধ ব্যবসার বিস্তার।
অভিযোগ রয়েছে, কিছু সংস্থা আর্থিকভাবে দুর্বল মহিলাদের কাছ থেকে মাতৃদুগ্ধ সংগ্রহ করে তা গুঁড়ো দুধে রূপান্তরিত করে বাজারে বিক্রি করছে। এফএসএসএআই স্পষ্ট করেছে যে ২০০৬ সালের এফএসএস আইন অনুযায়ী মাতৃদুগ্ধ বিক্রি বা এর তৈরি পণ্য বিক্রি করা সম্পূর্ণ বেআইনি। এই নির্দেশিকা লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। মাতৃদুগ্ধের বাণিজ্যিকীকরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর মধ্যে রয়েছে সংগ্রহ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, বিজ্ঞাপন এবং বিক্রি।
মাতৃদুগ্ধ দিয়ে তৈরি পণ্যের ব্যবসাও নিষিদ্ধ। এতে গুঁড়ো দুধ, সাবান, ক্রিম, ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত। এফএসএসএআই বৈধ লাইসেন্স থাকা সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেও মাতৃদুগ্ধ ব্যবহার করার প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হতে পারে। আর্থিকভাবে দুর্বল মহিলাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণের অভিযোগটিও অন্যমাত্রা যোগ করেছে এই ক্ষেত্রে৷ মাতৃদুগ্ধ শিশুদের জন্য সবচেয়ে ভালো খাদ্য। এই নিষেধাজ্ঞা মেনে সংস্থাগুলো চললে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের শিশুরা নিরাপদ এবং স্বাস্থ্যকর মাতৃদুগ্ধ পান করতে পারে। এরসঙ্গে জড়িয়ে আছে, বেআইনি ব্যবসা বন্ধ থেকে জনসচেতনতার দিকটিও। দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন এনজিও, সমাজসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে অভিযোগ উঠছে মাতৃদুগ্ধ অল্প দামে কিনে তা দিয়ে প্রক্রিয়াজাত দুগ্ধ খাবার মূলত গুঁড়ো দুধ উৎপাদন করার। এবার এফএসএসএআই-এর কড়া প্রতিক্রিয়ার পরে এই অবস্থায় বদল ঘটে কিনা সেটাই এখন দেখার।