কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় আমাদের দেশের অনেকেই নিত্য ভুক্তভোগী। এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকেই বেছে নেন ঘরোয়া প্রতিকার। কিন্তু ঘরোয়া প্রতিকারে আদৌ কি কাজ হয়? নাকি ওষুধই এর আসল সমাধান? এই নিয়ে বিশদে আলোচনা করলেন মণিপাল হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএনট্রোলজিস্টের ডাইরেক্টর চিকিৎসক প্রদীপ্ত শেট্টি।
ওষুধ না ঘরোয়া প্রতিকার?
খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন, জলশূন্যতা বা ভ্রমণের কারণে যদি কোষ্ঠকাঠিন্য হয় তবে ঘরোয়া প্রতিকারগুলি সাময়িক উপশম দিতে পারে। ওষুধের মতো নয়, প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলিতে সক্রিয় উপাদানগুলির ঘনত্ব পরিবর্তনশীল থাকে। এই অসঙ্গতি সেগুলিকে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমাধানের জন্য অবিশ্বাস্য করে তোলে। ঘরোয়া প্রতিকারগুলি মল নরম করতে বা হজমকে সামান্য উদ্দীপিত করতে সাহায্য করতে পারে, তবে তারা কোষ্ঠকাঠিন্যের মূল সমস্যা, শক্ত মল বা অন্যান্য চিকিৎসাজনিত অবস্থার চিকিৎসা করে না। সুতরাং, কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য এগুলি নির্ভরযোগ্য নিরাময় নয়। এর তুলনায়, ল্যাক্সেটিভ এবং স্টুল সফটনারের মতো চিকিৎসাগতভাবে সমর্থিত চিকিৎসা বিকল্পগুলিতে প্রচুর পরিমাণে সক্রিয় উপাদান থাকে এবং এগুলি দ্রুত ও কার্যকর উপায়ে মলত্যাগ সহজ করতে সহায়তা করতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রতিকার হিসেবে যেগুলি ভুল
১. জোয়ানের জল বা ক্যারম বীজ দিয়ে ফোটানো জল খাওয়ার উদাহরণ নেওয়া যাক, যা বেশিরভাগ ভারতীয় রান্নাঘরে একটি সাধারণ জিনিস। ক্যারম বীজ থাইমল (thymol) নামক একটি বায়োঅ্যাকটিভ যৌগে সমৃদ্ধ, যা এর তীব্র সুগন্ধ এবং ঔষধি গুণ দেয়। থাইমল গ্যাস্ট্রিক রসের নিঃসরণকে উদ্দীপিত করে, যা হজম উন্নত করতে সাহায্য করে এবং গ্যাস ও পেট ফাঁপা কিছুটা কমাতে পারে, তবে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে এটি কোনো কাজ করে না।
২. আরেকটি সাধারণ প্রতিকার পাকা কলা খাওয়া, যার মধ্যে পেক্টিন (pectin) থাকে—এক ধরনের দ্রবণীয় ফাইবার যা মলের পরিমাণ বাড়িয়ে মলত্যাগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। ফাইবার মলের পরিমাণ এবং কোমলতা যোগ করে, যা হালকা কোষ্ঠকাঠিন্য সহজ করতে পারে। তবে, আপনি প্রতিদিন একটি কলা খেলেও রাতারাতি কোষ্ঠকাঠিন্য কমবে না। আবার, ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন পাকা কলা খেতে পারেন না কারণ এটি তাদের রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।