চিনের পরিস্থিতি নতুন করে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে অনেকের মধ্যেই। সারা পৃথিবীতেই আবার নতুন করে করোনা দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। ভারতেও সরকারি স্তরে ভাবনাচিন্তা চলছে করোনা মোকাবিলার। এই পরিস্থিতি ভারতে সত্যিই ভয় কতটা? চিনে যে হারে করোনা সংক্রমণ বাড়ছে, ভারতেও কি ভয় ততটাই? এই ওমিক্রন BF.7 কি ভারতেও আবার জটিলতা সৃষ্টি করবে? বিশেষজ্ঞরা তিনটি বিষয় মনে রাখতে বলছেন।
প্রথমত, ভারতের টিকা চিনের টিকার চেয়ে দ্রুত কাজ করে
ভারতে যত করোনা টিকার ব্যবহার হয়েছে, তার মধ্যে বেশির ভাগই হয় কোভিশিল্ড, নয় কোভ্যাক্সিন। তার পাশাপাশি চিনে মূলত ব্যবহার হয়েছে করোনাভ্যাক আর সিনোফার্ম। ব্রাজিলে এই সব টিকার নিয়ে সমীক্ষা চালিয়ে দেখা গিয়েছে, সিনোফার্মের টিকার কার্যক্ষমতা ভালো হলেও, বয়স্কদের উপর করোনাভ্যাকের প্রভাব বেশ কম। ফলে বিশেষজ্ঞদের ধারণা, চিনের মতো দেশে যেখানে বড় সংখ্যক বয়স্করা এই নতুন ওমিক্রনে কাহিল হচ্ছেন, ভারতে তার আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম।
দ্বিতীয়ত, লকডাউনের কারণে চিনে এর আগে সংক্রমণও কম হয়েছে
ভারতে ওমিক্রনের সময়ে বেশির ভাগ মানুষই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এমন কোনও মানুষ পাওয়া বিরল, যাঁর নিজের বা তাঁর পরিবারের কারও কোভিড সংক্রমণ হয়নি। চিনে এই ঘটনাটাই ঘটেনি। সেখানে দীর্ঘ দিন ধরে কড়া লকডাউন চলেছে। ফলে বেশি ভাগ মানুষ কোভিডের সংস্পর্শে আসার সুযোগ পাননি। তাতে কোভিডের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ শক্তিও তৈরি হয়নি তাঁদের মধ্যে। হালে লকডাউন শিথিল করার পরেই বাড়ছে কোভিডের সংক্রমণ। এটি ভারতে হওয়ার আশঙ্কা অত্যন্ত কম বলেও মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ।
তৃতীয়ত, নতুন ওমিক্রন ভারতে জুলাই থেকেই আছে
বর্তমানে চিনে যে ওমিক্রন আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে, সেটি ভারতে জুলাই মাস থেকেই আছে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। হালে ভারতে করোনার জিনোম সিক্যুয়েন্সিংয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে BF.7 নামের ওমিক্রনটি ভারতে বহু দিন ধরেই রয়েছে। এমনকী গত অক্টোবরেও ওমিক্রনের এই উপরূপে কেলউ কেউ আক্রান্ত হয়েছেন বলেও শোনা যাচ্ছে। ফলত এটি ভারতে নতুন করে মারাত্মক আকার নেওয়ার আশঙ্কা বেশ কম বলেই আশা অনেকেরই।
সব মিলিয়ে ভারতে পরিস্থিতি খুব আশঙ্কাজনক নয় বলেই মনে করছেন চিকিৎসকদের অনেকে। তবে এর পরেও সাবধান থাকার, স্বাস্থ্যবিধি মেনে তলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে সকলকে।