মানব শরীরে কিছু হরমোন রয়েছে যা আমাদের সুখ, আনন্দ এবং ভালো থাকার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। এই হরমোনগুলির মধ্যে প্রধান হল -
- ডোপামিন: এটি একটি নিউরোট্রান্সমিটার যা আপনার মস্তিষ্কের রিওয়ার্ড সিস্টেমের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি আনন্দদায়ক অনুভূতি, শিক্ষণ, স্মৃতিশক্তি এবং আরও অনেক কিছুর সঙ্গে যুক্ত।
- সেরোটোনিন: মেজাজ, ঘুম এবং হজম নিয়ন্ত্রণ করে।
- অক্সিটোসিন: সামাজিক বন্ধন এবং বিশ্বাস বাড়ায়।
- এন্ডরফিন: প্রাকৃতিক ব্যথানাশক হিসেবে কাজ করে এবং সুখের অনুভূতি প্রদান করে।
এই হরমোনগুলির মাত্রা প্রাকৃতিকভাবে বাড়ানোর জন্য নিম্নলিখিত উপায়গুলি অনুসরণ করা যেতে পারে।
আরও পড়ুন - Mental Health: ব্যস্ততার ফাঁকে প্রতিদিন বসে বসে ধ্যান করুন, এর প্রয়োজনীয়তা জানলে চমকাবেন
১. পর্যাপ্ত সূর্যালোক গ্রহণ
সূর্যালোক সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়াতে সহায়তা করে, যা মেজাজ ভালো রাখে এবং মনোবল বৃদ্ধি করে। প্রতিদিন সকালে কিছু সময় সূর্যের আলোয় থাকার চেষ্টা করুন।
২. নিয়মিত শারীরিক কার্যক্রম
ব্যায়াম, যেমন - দৌড়ানো বা সাইক্লিং, এন্ডরফিনের নিঃসরণ বাড়ায়, যা স্ট্রেস কমায় এবং সুখের অনুভূতি প্রদান করে।
৩. হাসার অভ্যাস
হাসলে ডোপামিন এবং এন্ডরফিনের মাত্রা বাড়ে যা মন ভালো রাখতে ও স্ট্রেস কমাতে সহায়ক। বোকা বোকা আনন্দের মধ্যে হলেও নিজেকে যুক্ত রাখুন বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান।
৪. সঠিক খাদ্যাভ্যাস
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- মাছ, এবং প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবার, যেমন- দই, সেরোটোনিনের উৎপাদন বাড়াতে সহায়তা করে।
৫. সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ
কিছু সাপ্লিমেন্ট হ্যাপি হরমোনের মাত্রা বাড়াতে পারে।
- টায়রোসিন: ডোপামিন উৎপাদনে সহায়তা করে।
- গ্রিন টি বা এর এক্সট্র্যাক্ট: ডোপামিন এবং সেরোটোনিন বৃদ্ধি করতে পারে।
- প্রোবায়োটিকস: সেরোটোনিন এবং ডোপামিন উৎপাদনে সহায়ক।
- ট্রিপটোফ্যান: সেরোটোনিনের পূর্বসূরি হিসেবে কাজ করে।
তবে সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৬. গান শোনা
২০১৬ এর একটি গবেষণা অনুযায়ী অনেক মানুষের মাঝে বসে গান গাইলে বা গান শুনলে ডোপামিনের নিঃসরণ বাড়ে। এমনকি পছন্দের গান শোনাও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
৭. ধ্যান ও যোগব্যায়াম
ধ্যান এবং যোগব্যায়াম সেরোটোনিনের মাত্রা বাড়ায়, যা মানসিক শান্তি এবং সুখের অনুভূতি প্রদান করে। মন অযথা উত্তেজিত হয় না।
৮. সামাজিক সংযোগ
প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানো, আলিঙ্গন বা হাত ধরা অক্সিটোসিনের নিঃসরণ বাড়ায়, যা সম্পর্ক মজবুত করে এবং সুখের অনুভূতি বৃদ্ধি করে।
৯. পোষ্যর সঙ্গে সময় কাটানো
পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো অক্সিটোসিনের মাত্রা বাড়ায়। বাড়ির কুকুর বা বেড়ালকে আদর করুন, মন ভালো থাকবে।
১০. পর্যাপ্ত ঘুম
প্রতিদিন ৭-৯ ঘণ্টা ঘুম ডোপামিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা মনকে চাঙ্গা রাখে এবং মনোযোগ বাড়ায়।
আরও পড়ুন - Child Mind Health Tips: শিশুর মন নিয়ে আপনি কি সচেতন? জেনে নিন শিশুদের মন ভালো রাখার সহজ উপায়
এই অভ্যাসগুলি দৈনন্দিন জীবনে অন্তর্ভুক্ত করে আপনি প্রাকৃতিকভাবে হ্যাপি হরমোনের মাত্রা বাড়াতে পারেন, যা আপনার সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়তা করবে। :
পাঠকদের প্রতি : প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সাধারণ জ্ঞানের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এখানে লেখা কথার ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ না করার অনুরোধ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য নিয়ে যে কোনও প্রশ্ন, যে কোনও সমস্যার সমাধানের জন্য চিকিৎসক বা পেশাদার বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।