ডায়াবিটিস একবার দেখা দিলে নানারকম ওষুধ লিখে দেন চিকিৎসক। পাশাপাশি খাওয়াদাওয়ার ক্ষেত্রে নানারকম বিধিনিষেধ মেনে চলতে হয়। সেসব পরামর্শ ঠিকভাবে মেনে না চললে সমস্যা আরও বাড়ে। ডায়াবিটিস ডেকে আনে আরও নানারকম মারাত্মক রোগ।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, ওষুধ ও খাওয়াদাওয়ার পাশাপাশি কয়েকটি ভালো অভ্যাসের মাধ্যমেও ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এর মধ্যে অন্যতম হল স্ট্রেস ম্যানেজ করা। স্ট্রেস বা চাপ নিয়ন্ত্রণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ভীষণভাবে জরুরি। রোজকার জীবনযাপনে নানা রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় মানসিক ও শারীরিক চাপ।
এই চাপের কিছু ভালো দিক রয়েছে। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ চাপ আমাদের দৈনন্দিন কাজগুলো মিটিয়ে নিতে সাহায্য করে। সময়মতো কাজ মিটিয়ে ফেলার জন্য এই চাপ দরকারি, এমনটাই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তবে একটি নির্দিষ্ট মাত্রা ছাড়ালেই চাপ শরীর ও মনে খারাপ প্রভাব ফেলতে শুরু করে। অতিরিক্ত চাপ যেমন পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলে, তেমনই সমস্যা ডেকে আনে ব্যক্তিগত জীবনেও। দেখা গিয়েছে, হৃদরোগ, রক্তচাপ ও ডায়াবিটিসের মতো সমস্যার পিছনে স্ট্রেস বা চাপ একটি প্রধান কারণ। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক ও মানসিক চাপে ভুগলে এই রোগগুলো দেখা দেয়।
চাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে নিয়মিত ওষুধ ও ডায়েট মেনে চলার পরেও রোগ কমে না। বরং রক্তে শর্করার পরিমাণ আগের মতোই বেশি থাকে।
সারদা হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ শ্রেয়া শ্রীবাস্তব জানাচ্ছেন, শারীরিক ও মানসিক চাপ সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এর জন্য নিয়মিত ডিপ ব্রিদিং-এর ব্যায়াম করা জরুরি।
কীভাবে ডিপ ব্রিদিং ডায়াবিটিস কমায়?
উদ্বেগ, অবসাদ ও চাপ ডায়াবিটিস রোগীদের মধ্যে প্রায়ই দেখা যায়। অ্যাড্রিনালিন, নন-অ্যাড্রিনালিন, কর্টিক্যাল ইত্যাদি হরমোন ইনসুলিনের কাজে বাধা দেয়। একইসঙ্গে হরমোনগুলো মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও অবসাদ বাড়ানোর জন্যও দায়ী। ডিপ ব্রিদিং-এর ব্যায়াম করার সময় আমাদের শরীরে এনডরফিন হরমোনটির ক্ষরণ বেড়ে যায়। এই এনডরফিন হরমোনটি অ্যাড্রিনালিন ও কর্টিক্যাল হরমোনগুলির ক্ষরণ কমিয়ে দেয়। এর ফলে অতিরিক্ত চাপ, অবসাদ, উদ্বেগ নিয়ন্ত্রণে থাকে।
চিকিৎসকের মতে, এই অভ্যাসটি নিয়মিত থাকা দরকার। প্রতিদিন দশ থেকে ১৫ মিনিট এই ব্যায়াম করলে শরীর কিছুদিনের মধ্যেই অতিরিক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। এর ফলে ইনসুলিন তার কাজ স্বাভাবিকভাবে করতে পারে। ইনসুলিন স্বাভাবিকভাবে কাজ করলেই রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।