হাই ব্লাড প্রেসার এবং হার্টের সমস্যার মতো আরও একটি গুরুতর সমস্যা হলো সুগার বা মধুমেয় রোগ। এবার এই মধুমেয় রোগকে সম্পূর্ণভাবে নিরাময় করার যুগান্তকারী আবিষ্কার করে ফেললেন চীনা গবেষকরা। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই আবিষ্কারকে যুগান্তকারী সাফল্য বলে বিবেচনা করা হচ্ছে।
চাইনিজ অ্যাক্যাডেমি অফ সায়েন্স এন্ড রেনজি হাসপাতালের অধীনে চীনের সাংঘাই চাংঝেং হাসপাতাল এবং সেন্টার ফর এক্সিলেন্স ইন মলেকিউলার সেল সাইন্সের একদল বিজ্ঞানী এই যুগান্তকারী সাফল্য অর্জন করেন। সাউথ চায়না মর্নিং পোষ্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৫৯ বছর বয়সী এক ব্যক্তি ২৫ বছর ধরে টাইপ টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন। ২০১৭ সালে ওই ব্যক্তির একটি কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়।
কিডনি প্রতিস্থাপন করার পরবর্তী সময়ে কিছুদিন সুস্থ থাকার পর তিনি তাঁর অগ্নাশযের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন, যার রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। অবশেষে সমস্যা এতটাই গুরুতর হয়ে যায় যে তিনি প্রতিদিন একাধিক ইনসুলিন ইনজেকশনের উপর সম্পূর্ণভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়েন।
সাংঘাই চাংঝেং হাসপাতালের একজন শীর্ষস্থানীয় গবেষক ইয়িন হাও বলেন, ওই ব্যক্তি ২০২১ সালের জুলাই মাসে 'উদ্ভাবনী কোষ প্রতিস্থাপন' সেবা পেয়েছিলেন। প্রতিস্থাপনের ১১ সপ্তাহ পর থেকে তাঁর ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। বর্তমানে তাঁকে আর ইনসুলিন ইনজেকশন দিতে হয় না। ধীরে ধীরে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ওষুধের ডোজও কমিয়ে দেওয়া হয়। এক বছর পর অর্থাৎ ২০২২ সালে ওরাল ওষুধও সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়।
বর্তমানে ওই ব্যক্তির অগ্নাশয় আইলেটের কার্যক্ষমতা পুনরায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন তিনি সম্পূর্ণভাবে সুস্থ। এই সফলতার প্রশংসা করি ব্রিটিশ কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক টিমোথি কিপার বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটি একটি অনেক বড় সাফল্য। এই গবেষণাটি ডায়াবিটিসের জন্য কোষ থেরাপির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ একটি নিদর্শন হয়ে থাকবে।’
(আরও পড়ুন: খিচুড়ি থেকে পায়েস, গুরু পূর্ণিমায় এই ৫ পদ গুরুকে নিবেদন করতে চান? রইল রেসিপি)
প্রসঙ্গত, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে ৭৭ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে টাইপ টু ডায়াবিটিস রয়েছে, তাদের মধ্যে প্রায় ২৫ মিলিয়ন ডায়াবিটিসের হাই রিস্কের রেঞ্জ রয়েছেন। চীনে ১৪০ মিলিয়ন লোকের মধুমেয় রোগ রয়েছে, যাদের মধ্যে ৪০ মিলিয়ন মানুষ ইনসুলিনের ওপর নির্ভরশীল। চীন গবেষক দ্বারা আবিষ্কৃত এই নতুন সেল থেরাপি মধুমেয় রোগের এই বিপুল অংক কিছুটা হলেও কমিয়ে দিতে পারে।