সন্তান আসা মানে বাড়িতে খুশির হাওয়া বইতে থাকা। তবে সন্তান হওয়ার পর মা যদি সঠিক খাবার না খায় তাহলে তা শিশুর স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। মাকে এই সময় নানান দিকে খেয়াল রাখতে হয়। বাড়ির সকলেও বাড়ির নতুন সদস্যকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, আর এর মাঝে অনেকেই মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা ভুলে যান। শুধু শরীর না মন এবং মানসিক স্বাস্থ্যের দিকেও এই সময় যথেষ্ট নজর দেওয়া প্রয়োজন মায়ের। কারণ মায়ের মন ভালো থাকলে তাঁর স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে না। আর এই মন খারাপ হওয়ার মূল কারণ হল প্রসবোত্তর অবসাদ যাকে ইংরেজিতে পোস্টপার্টাম ডিপ্রেসন বলা হয়ে থাকে। কিন্তু বিষয়টা কী, কেন হয়, প্রতিকার কী আসুন দেখে নিই।
প্রসবোত্তর অবসাদ কী?
সন্তান জন্মানোর পর মহিলাদের মধ্যে এটা দেখা যায়। এই সময় তার মনে, শরীরে নানান পরিবর্তন আগে। হরমোনের ভারসাম্য থাকে না, যার ফলে তাঁদের নানান মানসিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়, অনেক উদ্ভট চিন্তা আসে। এটাকেই বলা হয় প্রসবোত্তর অবসাদ।
এটা হলে কী কী হয়?
এই অবসাদ হলে, মেজাজের পরিবর্তন হয় আচমকাই, হঠাৎ কষ্ট পাওয়া, রাগ হওয়া, কারও সঙ্গে কথা বলতে না চাওয়া, বিরক্তি, কান্না পাওয়া, একা থাকতে চাওয়া, অনেক সময় নিজের সন্তানকেই সহ্য করতে না পারা - এইসব লক্ষণ দেখা যায় প্রসবোত্তর অবসাদ হলে।
কতদিন থাকে এটা?
৭০ শতাংশ মহিলার মধ্যে এই সমস্যা দেখা দেয়। আর এগুলো এক থেকে দুই মাস পর্যন্ত থাকতে পারে। কিন্তু যে লক্ষণগুলো এই সময় দেখা যায় সেগুলো নিয়ন্ত্রণ না করা হলে সেগুলো থেকেই যায়। এর মধ্যে থাকতে পারে ঘুম না আসা, খিদে না পাওয়া, নিজেকে শেষ করে দেওয়ার প্রবণতা, শিশু কাঁদলে রাগ হওয়া, ইত্যাদি।
কেন হয় এমনটা?
মা হওয়া মানে অনেকটা দায়িত্ব কাঁধে এসে পড়া। পরিবার পাশে না থাকলে এটা হয় অনেক সময়। তার মধ্যে আবার শরীর দুর্বল থাকে, মনে নানান চিন্তা চলে। তাই এই অবসাদ ঘিরে ধরে।
এটার সমাধান কি?
এটার মূল চিকিৎসা হল পরিবারের আদর, যত্ন। পরিবার যদি সমর্থন করে এবং ভালোবাসে তাহলে দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যায়। স্বামীকে এই সময় স্ত্রীর পাশে থাকা উচিত। তাঁকে বোঝা উচিত। খাবার আর ওষুধ তো আছেই, তার সঙ্গে স্ত্রীর ছোটখাটো আনন্দ, খুশির দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। আর যদি অবস্থার আরও অবনতি ঘটে তাহলে কাউন্সিলরের পরামর্শ নেওয়া উচিত।