ওমিক্রন নাকি প্রকৃতির তৈরি টিকা। এমনই দাবি উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। তার পিছনে যুক্তিও আছে। অনেকেরই মত, ওমিক্রন মারাত্মক আকার ধারণ করছে না। করোনার এই রূপটিকে সংক্রমিত হলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া এবং মৃত্যুর পরিমাণ এখনও কম। অথচ এই রূপটিতে সংক্রমিত হলে শরীরে করোনার অ্যান্টিবডিও তৈরি হয়ে যাচ্ছে। তাহলে এটা কি প্রকৃতির তৈরি টিকা?
শুধু সাধারণ মানুষ নন, এক সরকারি অফিসারও এমন মন্তব্য করেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। আর সেখান থেকেই প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে কি ওমিক্রন সংক্রমণ হয়ে যাওয়াই ভালো? এ প্রসঙ্গে কী বলছেন চিকিৎসকরা?
সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ শাহিদ জামিল এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, এ ধরনের ধারণা খুব ভুল এবং এটি বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাঁর মতে, অতিমারির দীর্ঘসূত্রিতা এবং তার থেকে তৈরি হওয়া মানসিক ক্লান্তি থেকেই এই সব তত্ত্ব জন্ম নিচ্ছে। এর পিছনে বৈজ্ঞানিক যুক্তি নেই।
দুটো বিষয়ের প্রতি তিনি নজর দিতে বলেছেন। প্রথমত, প্রাকৃতিক টিকায় ‘লং কোভিড’-এর মতো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু ওমিক্রনে তা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, ভারতরে মতো দেশে, যেখানে দারিদ্র-অপুষ্টি-দূষণ-ডায়াবিটিসের মতো সমস্যা প্রবল, সেখানে শুধুমাত্র আন্দাজের বশে প্রায় অজানা একটা ভাইরাসের সামনে নিজেদের ঠেলে দেওয়ার ঝুঁকি মারাত্মক।
আর এক নামজাদা চিকিৎসক গিরিধারা আর বাবুও একই কথাই বলেছেন সংবাদমাধ্যমের কাছে। তাঁর মতে, ভ্যাকসিনই পারে মৃত্যু এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি কমাতে। এখনও পর্যন্ত এমন কোনও প্রমাণ নেই যে, ওমিক্রন হার্ড ইমিউনিটিও তৈরি করতে পারে। ভবিষ্যৎ তার উত্তর দেবে।
চিকিৎসক সুচিন বাজাজেরও একই মত। তাঁর কথায়, ‘কোভিড সেরে যাওয়ার পরেও এর জীবাণু শরীরের নানা অঙ্গের ভিতর ৬ মাস পর্যন্ত থেকে যেতে পারে। ওমিক্রনের ক্ষেত্রেও তা হতে পারে। তার ফলে শরীরের কী কী ক্ষতি হতে পারে, এখনও সেগুলো পরিষ্কার নয়। ফলে একে কোনও ভাবেই প্রকৃতির তৈরি টিকা বলা যাবে না।’