ভাষা পরিস্থিতি বদলের ক্ষমতা রাখে। অতি সহজেই সম্পর্ক ভাঙতে পারে। গড়তেও পারে। অতি সত্য কথা সবসময় মন থেকে মানা কঠিন। যেমন মোটা মানুষদের হঠাৎ করে 'স্থূলাকার বা মোটা' বলে ডাকলে বিষয়টা যথেষ্ট অস্বস্তিকর হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে এবার এই ধরনের ভাষা ব্যবহারের বিরুদ্ধেই পদক্ষেপ করল ব্রিটেন।
ব্রিটেনের অতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিদের জন্য 'মোটা বা স্থূল' শব্দটি ব্যবহার না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) কর্মীদের। এখানেই শেষ নয়, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্স শব্দের একটি তালিকা সহ একটি গাইড প্রকাশ করেছে, যেখানে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে কোন শব্দগুলো এড়ানো উচিত। কাউকে 'স্থূল' বলার পরিবর্তে 'স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তি' শব্দটি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: (এই ৫ ফলের চাটনি খেয়ে দেখুন, সুস্বাদ আর সুস্বাস্থ্য একসঙ্গে পাবেন)
দাবি করা হচ্ছে, 'স্থূল' এবং 'অ্যালকোহল' এর মতো শব্দগুলি এড়ানো শুধু যথার্থতাই নয়, ভাল আচরণ এবং সংবেদনশীলতার প্রমাণ দেয়। গাইডে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে রোগের চিকিৎসা করা হয়, ব্যক্তির নয়, এবং চিকিৎসা রোগকে প্রভাবিত করে, ব্যক্তিকে নয়। স্থূল ব্যক্তিদের জন্য শব্দটি পরিবর্তন করার পাশাপাশি, গাইড রোগীদের বর্ণনা করার জন্য 'ডায়াবিটিকস', 'সিজোফ্রেনিক্স' বা 'অ্যালকোহলিক' এর মতো শব্দ ব্যবহার না করার পরামর্শ দেয়।
এক্ষেত্রে ডায়াবিটিকস না বলে ডায়াবিটিস আক্রান্ত রোগী, সিজোফ্রেনিক্স না বলে সিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা, অ্যালকোহলিক না বলে যারা মাদক ব্যবহার করেন, এমন শব্দ ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছে। অনেকেই যদিও এমন ভাষা ব্যবহারের গাইড নিয়ে একমত নন। তাঁরা বলেছেন যে দেশের স্বাস্থ্যসেবা খাতের নেতারা আসলে স্বাস্থ্যসেবা উন্নত করার চেয়ে শব্দ পরিবর্তনের দিকে বেশি মনোনিবেশ করছেন। ড. ডোন্ট ডিভাইড আস গ্রুপের পরিচালক অলকা সেহগাল-করবেট এ প্রসঙ্গে বলেছেন, 'এনএইচএস নেতারা স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি বা কীভাবে জিনিসগুলি পরিচালনা করা হয় তার চেয়ে ভাষা নিয়ন্ত্রণে বেশি আগ্রহী বলে মনে হচ্ছে।' এদিকে, ফ্রি স্পিচ ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা লর্ড ইয়ং বলেছেন, আসলে স্থূলতায় আক্রান্ত ব্যক্তির আসলে যা প্রয়োজন তা নতুন লেবেল নয়, বরং ওজেম্পিকের প্রেসক্রিপশন পেতে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট।
আরও পড়ুন: (Kolkata Book Fair: মেলা বই, মেলা পাঠক! বইমেলার হিসেব কি শেষমেশ মেলে বই পড়ার সঙ্গে)
এই প্রথমবার নয় যে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর হেলথ অ্যান্ড কেয়ার এক্সিলেন্স তার গাইডের জন্য সমালোচিত হয়েছে৷ ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতেও, লিঙ্গ-নিরপেক্ষ ভাষা ব্যবহার করার জন্য কর্মীদের 'প্রেগন্যান্ট ওইমেন' এর পরিবর্তে 'প্রেগন্যান্ট পিপল' বলার পরামর্শ দেওয়ার জন্য ব্যাপক সমালোচনার স্বীকার হয় কর্তৃপক্ষ।