সন্তানকে ছোট থেকে মানুষ করার পর যদি বড় হয় সেই সন্তান বাবা মাকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়, তাহলে সেই কষ্টের থেকে বড় কষ্ট হয় তো আর কিছু হয় না। ভারতের বুকে এমন অনেক কথা আপনি শুনে থাকবেন। তবে সমস্ত কষ্টকে পেছনে ফেলে দিয়ে যিনি জীবন যুদ্ধে লড়াই করেন, তিনিই তো আসল যোদ্ধা।
ভারতে বৃদ্ধাশ্রমে থাকা বহু বৃদ্ধ বৃদ্ধার কথা শুনে থাকবেন আপনি। শুনে থাকবেন এমন অনেক বাবা-মায়ের কথা, যারা রাস্তায় বসে ভিক্ষা করেন বাড়ি থেকে বিতাড়িত হওয়ার পর। তবে দিল্লির বুকে দেখা গেল এমন এক মহিলাকে, যিনি ছেলের কাছ থেকে বিতাড়িত হয়েও ভেঙে পড়েননি। মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য বেছে নিয়েছেন উপার্জনের পথ।
(আরও পড়ুন: ঝাল ঝাল কিছু খেতে চাইছেন? চটপট বানিয়ে ফেলুন ডিম ভাপা, রইল রেসিপি)
আয়ুষ গোস্বামী নামের এক কনটেন্ট ক্রিয়েকটারের হাত ধরে খোঁজ পাওয়া গেল দিল্লির এক মহিলা অটোচালকের। আয়ুষের সঙ্গে ওই মহিলার কথোপকথনের ভিডিয়ো সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় হয়েছে ভাইরাল। আয়ুষের পোস্ট করা ভিডিয়োয় দেখা যাচ্ছে, ৫৫ বছর বয়সী ঐ ভদ্রমহিলা বলছেন, তিনি একা থাকেন বাড়িতে। বাড়ির আর্থিক প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে মধ্যরাতে অটো চালাতে বাধ্য হন তিনি।
ওই মহিলা জানান, তাঁর স্বামী মারা গেছেন এবং ছেলে তাঁকে নিজের কাছে রাখতে অস্বীকার করেছে। ছেলে তাঁর ভরণপোষণের জন্য কোনও রকম টাকা দেবে না বলে দিয়েছে। ছেলের কাছ থেকে সব রকম অসম্মান পেয়ে তাই অবশেষে পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন ওই মহিলা।
ওই মহিলা আরও জানান, মধ্যরাতে অটো চালাতে তাঁর কোনও ভয় নেই কারণ তিনি উপার্জন করতেই রাস্তায় বেরিয়েছেন। ভিক্ষা করার থেকে শ্রম করে অর্থ উপার্জন করা অনেক বেশি ভালো বলে মনে করেন তিনি। তবে সবশেষে ছেলের না দোষ দিয়ে তিনি নিজের লালন পালনের অভাবের দোষই দিয়েছেন।
(আরও পড়ুন: শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ছাত্রীদের বিক্ষোভ, ভেঙে চুরমার করা হল স্কুলের আসবাবপত্র)
সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা এই ভিডিয়োটি ইতিমধ্যেই বহু মানুষ দেখেছেন। এত বয়স্ক একজন মহিলাকে রাস্তায় বেরিয়ে কাজ করার দৃশ্য দেখে সকলেই ছেলের মানসিকতাকে ধিক্কার জানিয়েছেন। এক নেটিজেন লিখেছেন, ‘আপনার কঠোর পরিশ্রম এবং দৃঢ় সংকল্পের জন্য আপনাকে কুর্নিশ জানাই।’ অন্য একজন লিখেছেন, ‘আপনার প্রতি শ্রদ্ধা।’
এক নেটিজেন আবার লিখেছেন, ‘আপনার ছেলে পুরুষ হিসেবে ব্যর্থ।’ একজন বলেছেন, ‘আপনাকে দেখে অনেক কিছুই শেখার আছে।’ এইভাবেই কমেন্ট-এর মাধ্যমে ওই ভদ্রমহিলাকে নিজেদের ভালবাসা জানিয়েছেন নেট পাড়ার বাসিন্দারা।