ক্রমাগত জলবাযু পরিবর্তনের ফলে বাড়ছে বিপদ। যে এলাকা বন্যায় ভেসে যেত, সেই এলাকা এখন খরার মুখে পড়ছে। আইপিই গ্লোবাল এবং এসরি-ইন্ডিয়ার একটি নতুন প্রতিবেদন বলছে যে ভারতে আবহাওয়ার ধরনই পাল্টে যাচ্ছে। দেশের কিছু এলাকা, যেখানে প্রচুর বন্যা হতো সেগুলি এখন খরার সম্মুখীন হচ্ছে। যে জায়গাগুলিতে খরা ছিল সেখানে এখন খরার প্রকোপ পড়েছে।
বন্যা, খরায় জর্জরিত দেশ
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে অনেক অঞ্চল একই সময়ে উভয় ধরনের সমস্যা, অর্থাৎ বন্যা ও খরার সম্মুখীন হচ্ছে। আরও বলা হয়েছে যে গুজরাটে, গত ২০ বছরে ৮০ শতাংশেরও বেশি জেলায় আরও ভয়াবহ বন্যা দেখা গিয়েছে, যে কারণে এই বছর সৌরাষ্ট্রও এমন ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হতে পারে।
আরও পড়ুন: (Air Pollution in India: ভারতের ৯৫ শহরে বায়ু দূষণের মাত্রা কমেছে, তবে বিপদ এখনও কাটেনি! কী বলছে তথ্য)
বন্যার হাত থেকে রেহাই পেয়ে খরার প্রকোপে পরা জেলার সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে। তা খরা থেকে বন্যায় স্থানান্তরিত জেলাগুলির সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছে। যেমন শ্রীকাকুলুম, গুন্টুর, অন্ধ্রপ্রদেশের কুর্নুল, ওড়িশার কটক, মাহবুবনগর, তেলাঙ্গানার নালগোন্ডা এবং বিহারের পশ্চিম চম্পারনের মতো জেলাগুলি বন্যা থেকে প্রবল খরার সম্মুখীন হচ্ছে।
দক্ষিণ ভারতে, অন্ধ্র প্রদেশ, তামিলনাড়ু এবং কর্ণাটকের মতো রাজ্যগুলি আরও খরা দেখছে। কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু আরবান, মহারাষ্ট্রের পুনে, গুজরাটের আহমেদাবাদ, বিহারের পাটনা এবং উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজের মতো জেলাগুলি বন্যা এবং খরা, উভয়েরই প্রকোপেই চরম বিপাকের সম্মুখীন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: (Death from lightening: বাজ পড়ে প্রাণ হারিয়েছেন ৮৭ শতাংশ, ভারতে বজ্রপাতে মৃত্যুর প্রবণতা বাড়ছে)
আইপিই গ্লোবাল এবং এসরি-ইন্ডিয়া রিপোর্ট আরও দেখায় যে ভারতের দক্ষিণ, পশ্চিম এবং কিছু কেন্দ্রীয় অঞ্চলও খরা বা খরার মতো পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছে। গুজরাটের রাজকোট এবং সুরেন্দ্রনগর, রাজস্থানের আজমির এবং যোধপুর এবং মহারাষ্ট্রের ঔরঙ্গাবাদের মতো জেলাগুলি বন্যা এবং খরা উভয়েরই মুখোমুখি হয়েছে। ত্রিপুরা, কেরালা, বিহার, পাঞ্জাব এবং ঝাড়খণ্ডের জেলাগুলি সবচেয়ে চরম আবহাওয়ার সম্মুখীন হচ্ছে।
২০৩৬ সালের মধ্যে আরও কঠিন পরিস্থিতি নিশ্চিত
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভারতের ৮৫ শতাংশেরও বেশি জেলা বন্যা, খরা, ঘূর্ণিঝড় এবং তাপপ্রবাহের প্রবল ঝুঁকির মুখে রয়েছে। তাদের মধ্যে আবার ৪৫ শতাংশ জেলা ক্রমাগত একাধিক দুর্যোগের কোপে পড়ছে। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, এই চরম আবহাওয়ার ঘটনা চারগুণ বেড়ে গিয়েছে।
এ প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে, আইপিই গ্লোবালের গবেষক অবিনাশ মোহান্তি, বলেছেন যে গত ১০০ বছরে ০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে দশজনের মধ্যে নয়জন ভারতীয় প্রভাবিত হয়েছেন। তিনি এদিন বলেছেন যে ভারী বৃষ্টিপাত, বন্যা এবং খরার মতো চরম আবহাওয়াকে প্রভাবিত করছে এল নিনো। এটি দিন দিন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে।
মোহান্তির দাবি যে কেরালায় অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত থেকে ভূমিধস, গুজরাটে বন্যা, ওম পর্বতে তুষারপাতের ক্ষতি এবং হঠাৎ ভারী বৃষ্টিপাতই, ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের প্রমাণ দিচ্ছে। আর ২০৩৬ সালের মধ্যে, ১.৪৭ বিলিয়নেরও বেশি ভারতীয় গুরুতর জলবায়ু পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে বলে আশঙ্কা করছেন গবেষক।