মহালয়ার পরের দিন, অর্থাৎ প্রতিপদে ঘটে জল পড়ার মধ্যে দিয়েই শুরু হয় দুর্গাপুজো। এই রাজবাড়িতে দেবী দুর্গা পূজিত হন পটে। তবে এখন এই রাজবাড়ি তার জৌলুস, প্রতিপত্তি সবই হারিয়েছে। কালের ভারে সে এখন ন্যুব্জ। কিন্তু হলে কি হবে? পুজো কিংবা তার নিয়মে কোনও ফাঁক নেই।
ভগ্নপ্রায় মন্দিরেই পুজো পান দেবী পটেশ্বরী। বর্ধমান রাজবাড়িতে যখন রাজা রাজত্ব করতেন তখন সাড়ম্বরে পূজা পেতেন দেবেন পটেশ্বরী। কিন্তু এখন সেই পুজোর জৌলুস খানিকটা মলিন হয়েছে। অতীতে বহু মানুষ এই পুজো দেখতে ভিড় জমাতেন। দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসত এই বাড়ির পুজো দেখতে। বর্ধমান রাজার তৈরি লক্ষ্মীনারায়ণ জিউ ঠাকুরের বাড়িতে পুজো হতো।
এই পুজোতে বাড়ির মহিলারা কখনই সবার সামনে আসতেন না। গোপন রাস্তা দিতে তাঁরা মন্দিরে আসতেন এবং সেখানকার দ্বিতলে বসে পুজো দেখতে। পুজোটা আজও হয়। কিন্তু যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মন্দির প্রায় ভেঙে গিয়েছে। গত দুই বছর করোনার কারণে জনসাধারণ এই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেনি।
রাজবাড়ি তার জৌলুস হারালেও পুজোর রীতি নীতি, জৌলুস কোনওটাই কমেনি আজও। অতীতের নিয়ম মেনেই পূজিত হন দেবী পটেশ্বরী। প্রতিপদ থেকে এই পুজো শুরু হয়ে যায়। এই পুজো নাকি বর্ধমানের রাজা মহাতাব চাঁদ শুরু করেছিলেন। কাঠের পটের উপর নানান রঙ দিয়ে আঁকা হতো দশভূজাকে। এখানে কেবল গণেশের দুটি চোখ দেখা যায়। বাকি সকলেরই দেখা যায় একটি করে চোখ। এমন ভাবেই আঁকা হয় এই পট। এই বাড়িতে আজও আছে বলি প্রথা। তবে পাঁঠা নয়, বলি হয় মিষ্টির। আগে অবশ্য কুমড়ো বলি হতো। নবকুমারীর পুজোও হয় এই বাড়িতে অষ্টমীর দিন।