Durga Puja 2024: গ্রামের মাঝে দুর্গা পুজো মানে সে অন্য এক দৃশ্য। সেখানের দৃশ্যের সঙ্গে শহরের দৃশ্যের আকাশপাতাল তফাত। আলোর সাজ থেকে রীতি রেওয়াজ সব মিলিয়ে যেন দুই ভিন্ন জগতের ছবি। দক্ষিণ দিনাজপুরের এই পুজোও ঠিক সেই কথা মনে করাবে। ১১৪ বছর ধরে এখানে পুজো হচ্ছে। আদতে একটি পরিবারের পুজো এটি। কিন্তু এক শতাব্দী আগে যে যে রেওয়াজ মেনে পুজো হত, আজও সেই রেওয়াজগুলি অমলিন রয়েছে। আর এভাবেই দুর্গাপুজো যেন প্রাচীন সময়ের একটা খণ্ডকে আগলে রেখে দিয়েছে নিজের আঙিনায়। বালুরঘাটের নাজিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বইদুল চৌধুরীর পুজো এই কারণেই বিখ্যাত।
আরও পড়ুন - Durga Puja 2024: মহালয়া-ভোরে মহিষাসুরমর্দিনীর কোন সংস্করণ শোনাবে আকাশবাণী? FB পোস্ট ঘিরে ধন্দ
চণ্ডীমঙ্গলের গানের আসর
গত শতকের ১৯১০ সালে এই পুজো শুরু হয়। দক্ষিণ দিনাজপুরের এই পুজোয় সেই সময় থেকেই রয়েছে চণ্ডীমঙ্গলের রেওয়াজ। চণ্ডীমঙ্গলের আসর বাংলার একটি বহুপ্রাচীন রীতি। মণ্ডপের আঙিনায় সকলে মিলে বসে উপভোগ করেন সেই গান। চণ্ডীমঙ্গল কাব্য থেকে একের পর এক গান পালার আকারে গাইতে থাকেন গাইয়ে। আসর কখনও কখনও চলে সারা রাত। চৌধুরী বাড়ির পুজো সেই বিশেষত্ব আজও টিকিয়ে রেখেছে। ষষ্ঠীর দিন থেকে চণ্ডীমঙ্গলের গানের আসরের রীতি রয়েছে। সেই অনুষ্ঠান চলে নবমীর রাত পর্যন্ত। পাশের গ্রামে তেমন কোনও পুজো হয় না। তাই পাশের গ্রাম থেকেও চলে আসেন গ্রামবাসীরা। চৌধুরী বাড়ির পুজোমণ্ডপে ভিড় জমান তারা। এভাবেই পুজোর চারদিন কেটে যায় তাঁদের।
আরও পড়ুন - Durga Puja 2024: দেবীর আত্মপরিচয়ই সভ্যতার উৎসমুখ, কালজুড়ে ছড়িয়ে থাক ‘তাঁর’ উদযাপন
একনলা বন্দুক থেকে গুলি ছুঁড়ে…
অষ্টমীর সন্ধি পুজোর সূচনা আবার চৌধুরী বাড়িতে বেশ অভিনব আকারে হয়। সন্ধিপুজোর ঠিক আগে একনলা বন্দুক থেকে গুলি ছোঁড়া হয়। তার মাধ্যমেই সূচনা হয় সন্ধিপুজোর। নবমীর দিন মহাভোগের আয়োজন হয় চৌধুরী বাড়ির দালানে। প্রায় দুই হাজার জন লোক জড়ো হন সেখানে। তাদের ভোগ খাওয়ানো হয়। প্রসাদ পরিবেশন করেন চৌধুরী পরিবারের সদস্যরাই। গ্রাম্য পরিবেশ, মাটির ঘর বারান্দা, পুজো মন্ডপের খিলান থেকে চৌধুরী বাড়ির আঙিনা যেন অপেক্ষা করে থাকে সারা বছর। এই পাঁচটা দিনের অপেক্ষাই থাকে সকলের। বর্তমানে চৌধুরী পরিবারে মোট ২৩টি পরিবার রয়েছে। প্রত্যেকেই পুজোর আয়োজনে যোগদান করেন।