দুর্গাপুজোর টানা ছুটিতে অনেকেই শহর থেকে বহু দূরের নিরিবিলিতে খানিকটা স্বস্তি, শান্তি খুঁজে নিতে চান। এদিকে, দেবীপক্ষে দিকে দিকে যখন পুজোর গন্ধ, তখন অনেকেই দেবী আরাধনাতেই দুর্গাপুজোর কিছুটা সময় কাটাতে পছন্দ করেন। এবারের দুর্গাপুজোয় এমনই কোনও জায়গায় যাওয়ার কথা ভাবছেন কি? কলকাতার কাছেই রয়েছে এমন এক সতীপীঠ। যেখানে শহরের কোলাহল থেকে দূরে, নদী, জঙ্গলে ঘেরা জায়গায় দেবী দর্শনে পৌঁছে যেতে পারেন।
কাছেই ঈশাণী নদী। চারপাশটা জঙ্গলে ঘেরা। কিছুটা দূূরে শ্মশান। পূর্ব বর্ধমানের অট্টহাসের মন্দিরের আশপাশটা এরকমই। নিরোলের দক্ষিণ ডিহি গ্রামে অবস্থিত এই সতীপীঠ ঘিরে নিত্য পূণ্যার্থীদের ঢল দেখা যায়। তারই সঙ্গে মেখে রয়েছে পাখির কলতান। রাতে প্যাঁচার ডাক কিম্বা শিয়ালদের ডাকও নাকি শোনা যায় ওই এলাকাজুড়ে। এই সতীপীঠ ঘিরে কথিত রয়েছে এক পৌরাণিক কাহিনি। কীভাবে যাবেন? রইল তার তথ্য।
কীভাবে যাবেন অট্টহাস মন্দিরে-
কলকাতা থেকে অট্টহাসের দূরত্ব বলতে প্রায় ১৮০ কিলোমিটার। যদি ট্রেনে এই এলাকায় পৌঁছতে হয়, তাহলে হাওড়া থেকে সরাসরি ট্রেনে কাটোয়া যেতে পারেন। আবার শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে সরাসরি কাটোয়া বা নৈহাটি - ব্যান্ডেল হয়ে কাটোয়া যাওয়া যাবে। কাটোয়া থেকে বোলপুর, অথবা কীর্ণাহার কিম্বা চাকটা বা সিউরিগামী বাসে উঠে নামুন নিরোল এলাকায়। সময় লাগবে ২৫ মিনিট থেকে ৩০ মিনিট। ট্রেনে যেতে চাইলে আজিমগঞ্জ লাইনের ট্রেন ধরে গঙ্গাটিকুরি স্টেশনে নামতে পারেন। কাটোয়া থেকে গাড়ি ভাড়া করেও অট্টহাস আসতে পারেন এই এলাকায়। ধর্মতলা থেকে নিরোলের সরকারি বাসও ছোটে।
অট্টহাস মন্দিরের রহস্যময় পৌরাণিক কাহিনি
দেবী এখানে চামুণ্ডা রূপে পূজিতা হন। কথিত রয়েছে, দক্ষ যজ্ঞে সতী শিবনিন্দা সহ্য করতে না পেরে দেহত্যাগ করেন। তখনই সতীর দেহ নিয়ে দেবাদিদেব মহাদেব মেতে ওঠেন তাণ্ডবনৃত্যে। এদিকে শ্রীবিষ্ণু সুদর্শন চক্র দিয়ে সতীর দেহ বিভিন্ন ভাগে খণ্ডিত করতে থাকেন, তখনই সতীর দেহাংশ যেখানে যেখানে পড়ে সেখানে গড়ে ওঠে সতীপীঠ। দেবীর ওষ্ঠের নিম্নাংশ বা অধঃওষ্ঠ (নিচের ঠোঁট) এই এলাকায় পড়ে বলে কথিত রয়েছে। সেই থেকেই এই পীঠের নাম অট্টহাস। পুরাতত্ত্ব নিয়ে আগ্রহীদের কাছে এই মন্দিরের গঠনশৈলী বেশ অবাক করার মতো।