Durga Puja 2024: মহালয়া মানেই মহিষাসুরমর্দিনীর বিখ্যাত অনুষ্ঠান। যার আশায় আপামর বাঙালি এখনও সারা বছর ধরে অপেক্ষা করেন। এখন সোশ্যাল মিডিয়ার যুগ। ইউটিউব, ফেসবুক ঘাঁটলে সহজেই পাওয়া যায় বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ভরাট কণ্ঠের চণ্ডীপাঠ। কখনও সিগনালে বাজে সেই পাঠ, কখনও আবার পুজোমণ্ডপের উদ্যোক্তারা দিন নেই রাত নেই করে চালিয়ে দেন চণ্ডীপাঠ। তার পরেও মহালয়া (Mahalaya 2024) তিথির দিন ভোর চারটেয় উঠে ফোন বা রেডিয়োর নির্দিষ্ট বেতার তরঙ্গে মহিষাসুরমর্দিনী শোনার আকর্ষণ আজও অমলিন। তবে এই বিশেষ অনুষ্ঠানটি যার হাত ধরে এত জনপ্রিয়, সেই নেপথ্যনায়ক বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের ব্যক্তিগত জীবন কিন্তু খুব সুখের ছিল না। শেষ জীবনে নানা কষ্ট পোয়াতে হয়েছে বাঙালির নস্টালজিয়ার নায়ককে। এমনকি সেসব কারণে তাঁর অভিমানও নেহাত কম ছিল না।
মেলেনি প্রাপ্য সম্মান
নাতনি মন্দিরা ভদ্র চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, শেষ দিকে অনেককেই চিনতে পারতেন না বীরেন্দ্রকৃষ্ণ (Birendra Krishna Bhadra)। এমনকি কাছের মানুষদেরও চিনতে ভুল হত। নিজে হাতে দাদুর মুখে জল দিয়েছেন মন্দিরা। নাতনির কথায়, বেতার থেকে প্রাপ্য সম্মান পাননি দাদু। জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ পর্যন্ত আক্ষরিক অর্থ সমস্ত দায়িত্ব সামলেছেন। কিন্তু অবসরের পর পেনশন-গ্র্যাচুয়িটির টাকা পাননি। কারণ বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ছিলেন ‘সামান্য’ স্টাফ আর্টিস্ট। চিরকাল সেই পদেই থেকে গিয়েছেন। তখনকার দিনে স্টাফ আর্টিস্টরা পেনশন-গ্র্যাচুয়িটি পেতেন না। পেতেন প্রভিডেন্ট ফান্ডের সামান্য অর্থ!
আরও পড়ুন - Durga Puja 2024: চণ্ডীপাঠে ডাহা ফেল করেন মহানায়ক! বেতার অফিস ভাঙচুরের পর কী হয়েছিল সেই মহালয়ায় ?
রেডিয়োর প্রতি মায়া ছিল অটুট
আজকের প্রজন্মের কাছে রেডিয়োর অস্তিত্ব অন্যান্য মাধ্যমের তুলনায় অনেকটাই ক্ষীণ। তার পরেও বাঙালি সন্তানেরা অনেকে মহিষাসুরমর্দিনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রেডিয়োকে চেনেন। রেডিয়োর কথা উঠলে একগুচ্ছ গানের পাশাপাশি এই বিশেষ অনুষ্ঠানটির কথা অনেকেই উল্লেখ করবেন। ২০২৪ সালে দাঁড়িয়ে বলাই যায়, কাল পেরিয়ে কালজয়ী হয়েছে বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের মহিষাসুরমর্দিনী। কিন্তু এই অনুষ্ঠানের নেপথ্যনায়ক রেডিয়ো থেকে অবসর নিলেও মায়া কাটাতে পারেননি। তাই অবসর গ্রহণের পরেও নিয়মিত বেতার অফিস যেতেন। এ ঘর ও ঘর ঘুরে বেড়াতেন, কাজকর্ম দেখতেন। রেডিয়োকে নিজের হাতে তৈরি করেছিলেন — এমনটাও বলতেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘রেডিয়োকে জন্ম দিয়েছি আমি’। কিন্তু জন্মদাতার প্রতি অবহেলা কম ছিল না বেতার অফিস আকাশবাণীর!