দুর্গাপুজো ২০২৪ শুরু হতে আর ঠিক একমাস বাকি। লম্বা ছুটিতে শহরের কোলাহল থেকে দূরে অনেকেই নিরালায় কিছুটা সময় কাটাতে চান। আবার অনেকে ছুটিতে গেলে, একটু শপিং করার প্ল্যানে থাকেন। দুই জিনিসই এক যোগে পেয়ে যাবেন চান্দেরিতে। মধ্যপ্রদেশের এই চান্দেরির নাম হালে বলিউডের সুপারহিট ফিল্মেপ দৌলতে অনেকেই শুনেছেন। আবার শাড়ির জন্য এই এলাকার নাম জগদ্বিখ্যাত। ঝাঁসির খুব কাছে এই চান্দেরিতে আজও ইতিহাস ফিসফিস করে। রয়েছে বহু গায়ে কাঁটা দেওয়া ঐতিহাসিক ইমারত। দেখে নিন, এই চান্দেরিতে কী কী দেখার রয়েছে।
চান্দেরি শাড়ি কোথায় বোনা হয়-
চান্দেরির মূল শহর থেকে ৪ কি.মি দূরে রয়েছে প্রাণপুর। এই গ্রামই হল চান্দেরি শাড়ি বোনার কাজ! গ্রামবাসীদের নিপুণ বুনটে তৈরি হয় জগদ্বিখ্যাত চান্দেরি শাড়ি। এখানে গিয়ে চোখের সামনে দেখতে পাবেন, কীভাবে বোনা হয় শাড়ি। সদ্য গত বছর ২০২৩-এ কাটিঘাটে চান্দেরি ফেস্টিভাল সম্পন্ন হয়েছে।
চান্দেরি ফোর্ট-
প্রতিহার সাম্রাজ্যের চান্দেরি ফোর্ট শতাব্দী প্রাচীন নানা গায়ে কাঁটা দেওয়া ইতিহাসকে বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই দুর্গ বা ফোর্টের একটি দরজার নাম ‘খুনি দরওয়াজা’। এককালে এই দুর্গের মধ্যে ৬০০ জন রাজপুত মহিলা জহর ব্রত নেন। তাঁদের উদ্দেশে রয়েছে স্মারকও। 'মধ্যপ্রদেশ টুরিজম'-এর তথ্য অনুযায়ী, সেবার মুঘল সম্রাট বাবারের অত্যাচারের হাত থেকে রক্ষা পেতে সেই জহরব্রত ছিল।
কোশক মহল-
মালওয়ার সুলতান মেহমুদ শাহ খিলজির তৈরি এই কোশাক মহল। সুলতান মেহমুদ সালকির ওপর তাঁর বিজয় প্রাপ্তিকে স্মরণ করে এই মহল তৈরি হয়। ইসাগর-চান্দেরি রোডে এই মহল পড়ে।
কাটি ঘাট-
ভূমিতল থেকে ২৩৩ ফুট উপরে নির্মিত হয়েছে সুউচ্চ প্রবেশদ্বার কাটিঘাট। একটি পাথর কেটে এই প্রবেশদ্বার তৈরি হয়েছে। বুন্দেলখণ্ড আর মালওয়ার মাঝে যোগসূত্র এই কাটিঘাট। উচ্চতা ১০ মিটার, চড়া ২৫ মিটার।
আর কী কী দেখার রয়েছে?
ইতিহাস পরতে পরতে মেখে রয়েছে চান্দেরি জুড়ে। এখানে গেলে মিস করবেন না বাদল মহল, শেহজাদি কা রোজা। ওই দুই জায়গাতেই রয়েছে ঐতিহাসিক নানান কাহিনি। এছাড়াও জামা মসজিদ, রাজারানি মহল আজও চান্দেরির নানান ইতিহাসের কথা বলে।
চান্দেরির খাওয়া দাওয়া-
চান্দেরিতে গেলে বুন্দেলখণ্ডের খানাপিনা মিস করে গেলে চলবে না! মিষ্টির মধ্যে আনারসা, রস ক্ষীর চেখে দেখতে পারেন। তবে নিরামিষ পদ পাতে চাইলে, চেখে দেখুন, বুন্দেলি গোস্ত, কড়কনাড় মুরগা, কিমা কি টিক্কি!
চান্দেরি বেড়ানোর সেরা সময়-
মোটামুটি অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে চান্দেরি বেড়ানোর সেরা সময়।
চান্দেরির সবচেয়ে কাছের এয়ারপোর্ট-
গোয়ালিয়ার এয়ারপোর্টই একমাত্র চান্দেরির কাছের এয়ারপোর্ট।
চান্দেরির কাছের রেলস্টেশন-
চান্দেরির কাছে রয়েছে অশোকনগর ( চান্দেরি থেকে দূরত্ব ৬৩ কিমি), মুঙ্গাওলি, (চান্দেরি থেকে দূরত্ব ৩৮ কিমি), ললিতপুর (চান্দেরি থেকে দূরত্ব) ও ঝাঁসি (চান্দেরি থেকে দূরত্ব ১২৪ কিমি.) রেলস্টেশন।
ট্রেন, বাসের খবর- হাওড়া থেকে বহু এক্সপ্রেস ট্রেন রয়েছে জাঁসি পর্যন্ত যেতে চাইলে। বহু রিপোর্ট বলছে, চম্বল এক্সপ্রেস-এ ঝাঁসি স্টেশন পৌঁছানো যায়। আর ঝাঁসি থেকে এনএইচ ৪৪ ধরে গেলে ১০৭ কিমি মতো পড়ে দূরত্ব। এছাড়াও আরও রাস্তা রয়েছে। ঝাঁসি থেকে নিজস্ব গাড়ি বুক করে নিতে পারেন, কিম্বা বহু বাস ঝাঁসি-চান্দেরি রুটে চলে।
হোটেলের খরচ- চান্দেরি দেখতে গেলে, ঝাঁসিতে রাত যাপন করে একদিনে ঝাঁসি থেকে চান্দেরি গিয়ে দর্শনীয় স্থান দেখতে পারেন। ঝাঁসিতে থাকলে, পরের দিন ওরছা ফোর্টও ঘুরে নিতে পারবেন। ঝাঁসিতে বহু বাজেট হোটেল পেয়ে যাবেন। চান্দেরিতেও রয়েছে রিসর্ট থেকে হোটেল। ১০০০ থেকে ৫০০০ এর মধ্যে বহু থাকার জায়গা রয়েছে।