পুজো শুরু হতে আরও চার দিন বাকি থাকলেও কলকাতার ঠনঠনিয়ার দত্তবাড়ির অন্দরে কিন্তু শুরু হয়ে গেছে পুজো।প্রতি বছরের মতো এই বছরেও মহালয়ার সকাল থেকেই সেজে উঠেছে ১৭০ বছরের পুরনো দত্ত বাড়ির ঠাকুরদালান। পরিবারের সদস্য তো বটেই, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অতিথিরা আসেন এই পুজো দেখতে।
অন্য বনেদি বাড়ির পুজোর থেকে এই পুজো কিন্তু একেবারেই আলাদা। ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়ি তৈরি করেছিলেন সুবর্ণ বণিক দ্বারিকানাথ দত্ত নামের এক ব্যবসায়ী। তিনি প্রথমে হুগলির আদি সপ্তগ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। পরবর্তীকালে ব্যবসা সূত্রে তিনি উঠে আসেন ঠনঠনিয়া এলাকায়। ১৮৫০ সালে তৈরি করেন দত্ত বাড়ি।পুজো শুরু হয় আরও পাঁচ বছর পর অর্থাৎ ১৮৫৫ সাল থেকে শুরু হয় এই পুজো।
(আরও পড়ুন: রান্নাঘরে সিঙ্কের তলায় এসব কেউ জমায়! পুজোর আগে ঘর সাফাইয়ের গোড়ায় কী কী সরাবেন ওখান থেকে)
দত্ত বাড়ির পুজোয় মা কন্যা রূপে পূজিত হন। মহাদেবের কোলে বসে থাকতে দেখা যায় ছোট্ট পার্বতীকে। শাক্ত মতে নয় বরং বৈষ্ণব মতে পুজো হয় দত্ত বাড়িতে। তবে অষ্টমী এবং নবমীর সন্ধিক্ষণে মাকে চামুণ্ডা রূপে পুজো করা হয়।
একদিকে দত্তবাড়ি বৈষ্ণব বাড়ি, অন্যদিকে সেখানেই হয় চামুণ্ডা পুজো, এখানেই অন্য বনেদি বাড়ির থেকে একেবারে আলাদা হয়ে যায় ঠনঠনিয়ার দত্ত বাড়ির দুর্গাপুজো। তবে চামুন্ডা পুজো হলেও ভোগে দেওয়া হয় মাসকলাইয়ের ডাল। হিন্দি শব্দে ‘মাস’ শব্দটির অর্থ হলো মাংস, তাই পাতে না থাকলেও কথায় জড়িয়ে রয়েছে মাংস কথাটি।
(আরও পড়ুন: পুজোতেও পিঁপড়ের উৎপাতে অতিষ্ঠ? রেহাই দেবে এই সহজ ঘরোয়া উপায়)
তবে আরও এক দিক থেকে এই পুজোটি অন্য পুজোর থেকে একেবারে আলাদা। নবমীর দিন দত্তবাড়ির পুজোয় শুধু কুমারী পুজো নয়, করা হয় সধবা পুজোও। পুজোর চার দিনই ১৪ মন আতপ চাল এবং আড়াই মন চিনি দিয়ে তৈরি করা হয় মিষ্টি, যা নিবেদন করা হয় মায়ের কাছে।
দশমীর দুপুরে আঁশ খাওয়ার পর দেবীকে বরণ করা হয় এবং পরের বছরের জন্য নিমন্ত্রণ করা হয় মাকে। দুর্গা পুজোয় আর পাঁচটা পুজোর থেকে একেবারে আলাদা এই পুজো দেখার জন্য দর্শনার্থীদের ভিড় হয় দেখার মতো।