দুর্গা প্রতিমায় প্রতি বছরই কিছু না কিছু নতুনত্ব দেখা যায়। তবে এই নতুনত্বের দিক থেকে শুধুমাত্র কলকাতা নয়, এগিয়ে রয়েছে কলকাতার পার্শ্ববর্তী এলাকার বিভিন্ন দুর্গা পুজো কমিটি। এবার অষ্টধাতু দিয়ে মায়ের প্রতিমা তৈরি হতে চলেছে ব্যারাকপুর এভারগ্রিন ক্লাবে, শিল্পী হাবড়ার ইন্দ্রজিৎ।
হাবড়ার ইন্দ্রজিৎ পোদ্দার একজন নামী শিল্পী। কখনও মুক্তো, কখনও হীরে, কখনও আবার সোনার প্রতিমা গড়েছেন তিনি। এবার অষ্টধাতু দিয়ে প্রতিমা গড়ছেন ইন্দ্রজিৎবাবু। প্রায় দু মাসের বেশি সময় ধরে চলছে প্রতিমা তৈরীর কাজ। তবে শুধু অষ্টধাতু নয়, বাড়ির এবং বিভিন্ন যানবাহনের ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়েও তৈরি হচ্ছে প্রতিমা নির্মাণ।
(আরও পড়ুন: ভিড় এড়াতে পুজোয় বন্ধ থাকবে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি হাট! মনমরা ব্যবসায়ীরা)
শিল্পী ইন্দ্রজিৎ বাবু বলেন, ‘প্রতিমা গড়তে সব থেকে বেশি ব্যবহার করা হয়েছিল লোহা। কমবেশি সমস্ত ধাতু মিলিয়ে মোট প্রতিমার ওজন দেড়শ কুইন্টাল। মায়ের মুখ আর হাত তৈরি করা হয়েছে কপার দিয়ে, মায়ের শরীর তৈরি করা হয়েছে সাইকেল এবং বাইকের ফেলে দেওয়া পার্টস দিয়ে। লক্ষ্মী তৈরি করা হয়েছে পিতল দিয়ে, সরস্বতী তৈরি করা হয়েছে দস্তার, কার্তিককে তৈরি করা হয়েছে ব্রোঞ্জ দিয়ে, গণেশ রুপো দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘সোনা, রুপো ব্যবহার করা হয়েছে ঠিকই কিন্তু সোনার ব্যবহার অপেক্ষাকৃত কম করা হয়েছে। দেব দেবীদের অলংকার রুপো এবং তামা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। পরিবেশ সচেতনতা নিয়েও কিছু কথা বলেছেন তিনি।’
(আরও পড়ুন: রেস্তরাঁর মতো নবরত্ন বিরিয়ানি এবার বাড়িতেই, জমে উঠুক অষ্টমী রাত)
মণ্ডপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের যেমন প্রচুর পরিমাণে গাছ রোপন করতে হবে তেমন কমাতে হবে জল অপব্যবহার। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা বন্যা বা ভূমিকম্প যে কারণে তৈরি, সেদিন কিন্তু আমাদেরই ভুলের ফলে হয়। তাই আমাদের নিজেদেরই সতর্ক থাকতে হবে অনেক বেশি, এই ভাবনা চিন্তাকে মাথায় রেখেই মণ্ডপ সজ্জা করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, দেড়শ কুইন্টালের এই প্রতিমা বিসর্জনের দিন ডাকা হবে ক্রেন। কোনও মানুষের পক্ষে এত ভারী প্রতিমা নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, তাই অগত্যা মেশিনের মাধ্যমেই প্রতিমাকে নিয়ে যাওয়া হবে বিসর্জনের সময়।