Durga Puja 2024: নদীয়ার বিখ্যাত পুজোগুলির মধ্যে মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পুজোর নাম না করলেই নয়। প্রতি বছর কৃষ্ণনগর রাজবাড়িতে শুধু এই পুজো দেখতে ভিড় জমান কাতারে কাতারে মানুষ। মা দুর্গার অবশ্য এই পুজোয় অন্য নাম। রাজ রাজেশ্বরী নামে পূজিত হন দেবী। রাজবাড়ির (Krishnanagar Rajbari Puja) পুজো মানেই গোটা নদীয়ার কাছে এক আবেগ।
কীভাবে শুরু হয়েছিল রাজবাড়ির পুজো?
সেই কাহিনিই বেশ চমকপ্রদ বলা যায়। কারণ রাজবাড়িতে রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের আমলে পুজোর চল ছিল না। শোনা যায় একদিন রাজা দশমীর দিন নদীপথে ফিরছিলেন। সেই সময় নদীতে একের পর এক দুর্গাপ্রতিমা (Durga Puja) বিসর্জন দেখেন। তাঁর ফেরার পরেই রাজবাড়ির দীঘি থেকে একটি দুর্গাপ্রতিমার কাঠামো উদ্ধার হয়। একটি জেলে দীঘিতে জাল ফেললে মাছের বদলে এটি উঠে আসে। সেদিন রাতেই রাজা স্বপ্নাদেশ পান মায়ের থেকে। মা নির্দেশ দেন, এই কাঠামোতেই তাঁকে পুজো করতে হবে। এর পর সেই কাঠামোতেই তৈরি করা হয় দুর্গাপ্রতিমা। নাটমন্দিরে স্থাপন করা হয় দেবীকে। শুরু হয় পুজো। সেই শুরুয়াতের পর থেকে আজও প্রতি বছর নিয়ম করে আয়োজিত হয় দুর্গা পুজো।
আরও পড়ুন - Durga Puja 2024: সরকার নিরাপত্তার আশ্বাস দিলেও বাংলাদেশে অনেক পুজো বাতিল, ভয়ে উদ্যোক্তারা
নয়দিন ধরে জ্বলে হোমকুণ্ড
মহালয়ার দিনই বোধন ঘরে হোমকুণ্ড জ্বালিয়ে শুরু হয়ে যায় দুর্গা পুজো। মা রাজরাজেশ্বরীর পুজোর জন্য নিবেদিত এই হোমকুণ্ড মহালয়া থেকে নবমীর দিন পর্যন্ত একই ভাবে জ্বলতে থাকে।
দেবীর ভোগের বিশেষত্ব
প্রতিপদে দেবীকে খিচুড়ি, পোলাও, পাঁচরকম ভাজা,আলুর দম এছাড়া পটলের দোর্মা, চাটনি, পাপড়,পায়েস ও মিষ্টি সহযোগে ভোগ দেওয়া হয়। মহাসপ্তমীতে মায়ের প্রাণপ্রতিষ্ঠা করা হয়। এর পর নবমী পর্যন্ত মা রাজরাজেশ্বরীর সামনে দেওয়া হয় অন্নভোগ। দশমীর দিন মা শীতল ভোগ পান। কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির রাজমাতা অমৃতা রায় জানাচ্ছেন, মহাসপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত নদীয়া জেলার পাশ্ববর্তী বিভিন্ন জেলার সেরার সেরা মিষ্টিগুলি এক-একদিনের ভোগে দেওয়া হয়ে থাকে। নবমীর দিন মায়ের ভোগ হিসেবে থাকে তিন রকমের মাছ। এর মধ্যে প্রধানত থাকে ইলিশ, চিংড়ি। এছাড়াও থাকে রুই মাছ। দশমীর দিন মা রাজরাজেশ্বরী কে নিজের হাতে বরণ করে বিদায় জানান রাজবাড়ির সদস্যরা। উপস্থিত থাকেন এলাকার বাসিন্দারাও। তবে বিদায় জানানোর পাশাপাশি ফের শুরু হয় পরের বছরের জন্য প্রতীক্ষা।