আপনি নিশ্চয়ই বাড়ির বড়দের বলতে শুনেছেন যে বিছানায় বসে কখনই খাবার খাওয়া উচিত নয়। তিনি সবসময় মেঝেতে বসে খাওয়ার পরামর্শ দেন। এর পিছনে তাদের যুক্তি হল যে বিছানায় বসে খাওয়া দেবী লক্ষ্মীকে অপমান করে এবং তাকে ক্রুদ্ধ করে। এর পেছনে ধর্মীয় কারণ থাকলেও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকেও আপনার এই অভ্যাস ঠিক নয়। আপনি যদি আরামের জন্য বিছানায় আরাম করে বসে খাওয়া উপভোগ করেন, তবে এই অভ্যাসটি আপনার স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। আসলে, আমরা কী খাচ্ছি তার সাথে আমরা কীভাবে খাচ্ছি তাও খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে চলুন আজ জেনে নেওয়া যাক কেন বিছানায় বসে খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলবেন।
হজমের উপর খারাপ প্রভাব ফেলে
আরাম করার জন্য, আপনি সাধারণত শুয়ে বা বিছানায় বসে খাবার খান। আপনি মেঝেতে যে ভঙ্গিতে বসেন তার চেয়ে বিছানায় ভঙ্গিটি আরও আরামদায়ক হয়ে ওঠে। খাওয়ার সময় এই দুটি ভঙ্গিই আপনার হজমের জন্য ভালো নয়। এটি আপনার পাচনতন্ত্রের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। কখনও কখনও এটি পেটে ভারীতা এবং অ্যাসিড রিফ্লাক্সের কারণ হতে পারে। এমন অবস্থায় যদি বিছানায় বসে খাবার খেতে হয়, তাহলে সোজা বসে এবং সঠিক ভঙ্গিতে খেতে হবে।
ঘুমকে প্রভাবিত করে
প্রতিদিন বিছানায় খাবার খাওয়া আমাদের ঘুমের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। আসলে যা ঘটে তা হল আমাদের শরীর একটি নির্দিষ্ট স্থান এবং তার সাথে সম্পর্কিত কার্যকলাপগুলি খুব ভালভাবে চিনতে পারে। বিছানা যেমন সবসময় ঘুমের সাথে জড়িত তেমনি পড়াশোনার টেবিল সবসময় পড়াশুনার সাথে জড়িত। কিন্তু আপনি যখন বিছানায় শোয়ার পরিবর্তে খাবার খান, তখন আপনার মনে একটু বিভ্রান্তি লাগতে পারে। প্রতিদিন এটি করার ফলে, আপনি কখনও কখনও বিছানায় ঘুমাতে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন।
স্থূলতা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে
বিছানায় খাবার খেলেও আপনার ওজন দ্রুত বাড়তে পারে। এর পিছনে একটি খুব মজার মনস্তাত্ত্বিক কারণ রয়েছে। আসলে, আপনি যখন বিছানায় বসে রিল্যাক্স মুডে খাবার খান, তখন সাধারণত টিভি বা মোবাইলে বিনোদনও তার সাথে চলতে থাকে। আপনি যখন এমন আরামদায়ক এবং আরামদায়ক অবস্থানে খাবার খান, অনেক সময় আপনি দুইজনের ক্ষুধার্ত অবস্থায় চারটি চাপাতি খেয়ে শেষ করেন এবং তা টেরও পান না। প্রতিদিনের এই সামান্য অতিরিক্ত ক্যালোরি আপনার ওজন বৃদ্ধির কারণ।
অ্যালার্জি এবং সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়তে পারে
বিছানায় বসে খাবার খাওয়ার সময় যতই যত্ন নেওয়া হোক না কেন, খাবারের কিছু কণা বিছানায় থেকে যায়। এই ছোট কণাগুলো বিছানা ও চাদরে অনেক দিন থাকে। এ কারণে বিছানায় ছত্রাক সংক্রমণ ও অ্যালার্জি হওয়ার আশঙ্কা থাকে। অনেক সময় খাবারের কণার কারণে তেলাপোকা ও পিঁপড়ার বিছানায় আসার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এতে সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা বাড়ে।