ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এক যুগান্তকারী ওষুধ সম্প্রতি অনুমোদন পেয়েছে ভারতে। টাইপ ২ ডায়াবেটিস এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য এলি লিলি কোম্পানির তৈরি 'মাউঞ্জারো' (রাসায়নিক নাম টিরজেপাটাইড) ওষুধটি এই রোগ নিয়ন্ত্রণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে এমনটাই জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।
এই ওষুধটি শরীরের দুটি হরমোন, জিআইপি এবং জিএলপি-১-এর কার্যকারিতা অনুকরণ করে। এটি ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়ায়, লিভারে গ্লুকোজ উৎপাদন কমায়, হজম প্রক্রিয়া ধীর করে। ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং ঘন ঘন খিদে পাওয়া কমে গিয়ে ওজন হ্রাস সম্ভব হয়। এটি অন্যান্য ডায়াবেটিস ওষুধের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে HbA1c এবং ওজন কমাতে সক্ষম।
চিকিৎসক মনিকা মহাজনের মতে, "টাইরজেপ্যাটাইড হল একটি ইনজেকশন যা টাইপ ২ ডায়াবেটিস রোগীদের চিনি নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং স্থূলকায় ব্যক্তিদের ওজন কমানোর জন্য ত্বকের নীচের দিকে ব্যবহার করা হয়। চিনি নিয়ন্ত্রণের জন্য মাউঞ্জারো এবং ওজন কমানোর জন্য জেপবাউন্ড কার্যকরী।"
আরও পড়ুন - Pope Francis: হুইল চেয়ারে বসে হাত নাড়লেন পোপ ফ্রান্সিস! ছাড়া পেলেন হাসপাতাল থেকে
আমেরিকা এবং ইউরোপীয় দেশগুলিতে এই ওষুধটির চাহিদা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ফলত কালোবাজারি ও চিকিৎসকের সঠিক পরামর্শ ছাড়াই এই ওষুধ ব্যবহারের প্রবণতা বেড়েছে যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ। তাই চিকিৎসকের সঠিক পরামর্শ ছাড়া এই ওষুধ ব্যবহার না করাই ভালো।
সতর্কতা ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এই ওষুধটি গ্রহণের সময় যে বিষয়গুলি মাথায় রাখবেন -
- কম ক্যালোরিযুক্ত খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক কার্যক্রম বাড়ানো
- ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা পর্যবেক্ষণ
- সম্ভাব্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে সচেতনতা
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান নিশ্চিত করা
- থাইরয়েড ক্যানসারে ভুগলে এই ওষুধ এড়িয়ে চলুন।
ভারতে প্রায় ১০১ মিলিয়ন মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, এবং স্থূলতার কারণে রোগের ঝুঁকি আরো বাড়ছে। ইনজেকশনটি ২০২২ থেকে বিদেশে পাওয়া যাচ্ছে এবং আশা করা হচ্ছে শীঘ্রই ভারতেও এর অনুমোদন পাওয়া যাবে। ভারতেও এটির ব্যবহার চালু হলে ডায়াবেটিস ও স্থূলতা অনেকটাই বাগে আনা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এটি গ্রহণের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি।
আরও পড়ুন - Bloating And Gas: গ্যাসে ফুলে যাচ্ছে পেট! রান্নাঘরের এই মশলা চিবিয়ে নিলেই গ্যাসমুক্তি নিশ্চিত
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি চিকিৎসকের মতামতের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এটি সমস্যাটি সম্পর্কে সাধারণ ধারণার উপর আলোকপাত করা মাত্র। ব্যক্তিবিশেষে প্রতিটি সমস্যার চিকিৎসা এবং নিরাময়ের পদ্ধতি পৃথক। তাই যে কোনও সমস্যায় শুধুমাত্র এই প্রতিবেদনের কথায় ভরসা না রেখে, ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসকের বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।