লকডাউনের শেষে আবারও অফিস-কাজ মুখো সাধারণ মানুষ। ঘুরতে যাওয়া, শপিং করা, রেস্তোঁরায় জমিয়ে ভুরিভোজও শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে অনেকের মনেই কোভিড নিয়ে একটা ভয় কাজ করছে। আর সেটার জন্য এনেকেই গরম জল খাওয়া, স্টিম নেওয়া-র মতো একাধিক টোটকা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু গরম জল খাওয়া নয়, অত্যাধিক স্টিম নেওয়াও কিন্তু ঠিক নয়। এর ফলে দেখা দিতে পারে নানা সমস্যা।
এক গবেষণা বলছে ভেপার নেওয়ার ওষুধের চাহিদা করোনার সময়তে মানে ২০২১-২২-র মধ্যে ৪৫ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে। অনেকেই একটু নাক বন্ধ হলে বা হাঁচি হলেই বাজার থেকে ওষুধ এনে ভেপার নিচ্ছেন। আর এতেই নিজের ক্ষতিই করেছেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকেরই ধারণা স্টিম নিলেই নাকি করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব। এমনকী, সোশ্যাল মিডিয়াতে এরকম একগুচ্ছ পোস্টও চোখে পড়ে!
সত্যি কি তাই?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কিংবা সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন(CDC)-এর তরফে কখনোই বলা হয়নি, স্টিম থেরাপি আপনার শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখে দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ভেপার নিলে করোনার সময় হওয়া রেসিপরেটরি সিস্টেমে বেশ কিছু সমস্যার সমাধান হতে পারে, কিন্তু ভাইরাসকে প্রতিরোধ করা এভাবে সম্ভব নয়।
স্টিম থেকে কী কী ক্ষতি হয়?
সুস্থ মানুষ কোনও কারণ ছাড়া প্রায় প্রতিদিন ভেপার নিলে নাকের কোষে তার প্রভাব পড়তে পারে, সেগুলো নষ্টও হয়ে যেতে পারে। ঘ্রাণ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। নাকের ভিতরে থাকা অলফ্যাক্টরি কোষ আমাদের ঘ্রাণ নিতে সাহায্য করে। আর এটি খুবই সংবেদনশীল। অতিরিক্ত ভাপ নিলে এটি শুষ্ক হয়ে পড়ে ও কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নাকের ভিতরে অনেক সূক্ষ্ম রোম থাকে। যা ধুলো-বালি, দূষণ থেকে আপার রেসপিরেটরি সিস্টেমকে রক্ষা করে। বার বার স্টিম নিলে এগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আর তখন সহজেই ধুলো-বালি নাক দিয়ে ঢুকে শ্বাসযন্ত্রের ক্ষতি করে। নাকের ভিতরে থাকা গবলেট নামক কোষ স্বাভাবিকভাবে রোগ প্রতিরোধ করে। বার বার স্টিমের কারণে এটিরও ক্ষতি হয়।
কখন স্টিম নেবেন?
তার মানেই এই নয় যে স্টিম নেওয়া খারাপ। নাক বন্ধ থাকলে, খুব মাথা ব্যথা করলে বা শ্বাসনালীতে সমস্যা হলে অবশ্যই স্টিম নিন। তবে স্টিম নেওয়ার ওষুধ ব্যবহারের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না।