করোনা বিশ্বে তার থাবা বসিয়েছে আড়াই বছর আগে, কখনও তার প্রকোপ বেড়েছে, কখনও বা কমেছে। বারবার নিজের প্রকৃতি পাল্টেছে এই ভাইরাস। একে একে আলফা থেকে ওমিক্রণ, ডেল্টা, ডেল্টাক্রণ, কোন রূপ না আসেনি এই ক'বছর! পৃথিবী জুড়ে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ।
নতুন করে বিশ্বে আবার করোনার জন্য মৃত্যুর সঙ্গে বাড়ছে। বিগত এক মাসে প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে মৃত্যুর হার। এক সপ্তাহে ১৫,০০০ জন মারা গিয়েছেন বলে জানানো হয়েছে হুয়ের তরফে। আর এমন অবস্থায় গবেষকরা জানালেন তাঁরা করোনার দুর্বল জায়গার হদিস পেয়েছেন! আর এই দুর্বল জায়গাটিকে কাজে লাগিয়েই নাকি তাঁরা বিভিন্ন ধরনের ভ্যারিয়েন্টকে বাগে আনা যায় এমন অ্যান্টিবডি ট্রিটমেন্ট তৈরি করতে পারবেন। নেচার কমিউনিকেশন পত্রিকায় এই গবেষণাপত্রটি বেরিয়েছে। কানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর শ্রীরাম সুবরামানিয়াম এবং পিটসবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর মিৎকো দিমিত্রভ এই গবেষণা করেছেন।
এই গবেষণায় কী বলা হয়েছে?
এই গবেষণা অনুযায়ী গবেষকরা ক্রায়ো মাইক্রোস্কোপি পদ্ধতি ব্যবহার করে করোনা ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনের অ্যাটমিক লেভেলের যে গঠন সেটা বের করেছেন, এবং তার নাম দিয়েছেন এপিটপ। জানা গিয়েছে সাধারণ মাইক্রোস্কোপে নাকি দেখাই যাবে না করোনা ভাইরাসকে সেটা এতটাই ছোট। আর এটার সাহায্যেই গবেষকরা মনে করছেন যে করোনা এবার যতই ভোল বদলাক এটার সাহায্যেই তাকে আটকানো যাবে। অনেকদিন ধরেই এমন অ্যান্টিবডির খোঁজ করা হচ্ছিল যার সাহায্যে ভাইরাসকে নিউট্রালাইজ করা যাবে।
করোনার দুর্বল জায়গা বলতে কী বোঝানো হয়েছে?
এক ধরনের অ্যান্টিবডি পাওয়া গিয়েছে করোনার, নাম ভিএইচ এবি৬। এই অ্যান্টিবডির সাহায্যেই আলফা, বিটা, ডেল্টা, গামা, সহ একাধিক ভ্যারিয়েন্টকে আটকানো যাবে। এই অ্যান্টিবডি স্পাইক প্রোটিনের এপিটপে আটকানো থাকবে যা এই ভাইরাসটাকে মানবদেহের কোষে ঢুকতে বাধা দেবে। এই অ্যান্টিবডি একাধিক ভ্যারিয়েন্টেই পাওয়া গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে এই গবেষণায়।
শ্রীরাম সুবরামানিয়াম জানিয়েছেন এই অ্যান্টিবডির সাহায্যেই এবার নতুন ডিজাইন এবং উন্নতমানের ওষুধ তৈরি করা যাবে যা করোনা চিকিৎসায় ভীষণই উপকারী হবে।