বেশ কয়েক মাস হলো গঙ্গায় কমে গেছে ইন্ডিয়ান মেজর কার্প, অর্থাৎ রুই, কাতলা, মৃগেলের মতো মাছগুলি। উত্তরাখণ্ডের নদীতে মহাশিরের সংখ্যাও যেন এখন তলানিতে এসে ঠেকেছে। নদী বক্ষে এইরকম বেশ কয়েকটি প্রজাতির মাছের বিলুপ্তি আটকানোর জন্য তাই ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা ওরফে এনএমসিজি প্রকল্পে জনসম্পদ মন্ত্রক নিল একটি বড় পদক্ষেপ।
আইসিএআর-সেন্ট্রাল ইংল্যান্ড ফিসারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিফরি) ব্যারাকপুর, বিভিন্ন প্রজাতির মাছকে বিলুপ্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য নিল একটি বিশেষ ভূমিকা। নমামি গঙ্গে প্রকল্পের প্রথম দফা এবং দ্বিতীয় দফায় গঙ্গার বিভিন্ন জায়গা বেছে কাজ শুরু করেছে সিফরি। মাছের প্রজাতি সংখ্যা নির্ণয়, বিপন্ন তালিকা এবং আই ইউ সি এন লিস্টে তাদের অবস্থান নির্ণয় করা, মাছের সংখ্যা কমার কারণ অনুসন্ধান করা এবং বিলুপ্তির রোধের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার দায়িত্ব নিয়েছে সিফরি।
(আরও পড়ুন: উইকেন্ডে হাসি কিন্তু মাস্ট! পড়ে নিন দিনের সেরা ৫ জোকস, আর শনিবার সকাল হোক মজার)
সিফরি - এর অধিকর্তা বিকাশ কুমার দাস বলেন, ‘আমরা দু দফায় মোট ২১৫ প্রজাতির মাছের বাসস্থান এবং গতিবিধি চিহ্নিত করতে পেরেছি। এর মধ্যে ১০ শতাংশ আইইউসিএন-এর লাল তালিকায় ছিল। রুই কাতলা, মৃগেলার মতো মাছগুলি যেভাবে কমে যাচ্ছে, তা সত্যি উদ্বেগ জনক।’
কীভাবে বাঁচানো হচ্ছে মাছগুলিকে?
মাছগুলিকে বাঁচানোর জন্য তাই রিভার র্যাঞ্চিং করা হচ্ছে। এর অর্থ হলো মাছগুলিকে নদীতে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় ছাড়া হয়, যার ফলে মাছগুলি বিলুপ্ত হয়ে যায় না। বাংলা ছাড়াও রিভার র্যাঞ্চিং করা হয়েছে উত্তর প্রদেশ, বিহার এবং ঝাড়খন্ডে। এর ফলে সুফলও পাওয়া যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
কেন কমে যাচ্ছে মাছের সংখ্যা?
সিফরির কর্মীরা জানিয়েছেন, প্রচুর পরিমাণে ডিমে ভরা মাছ জালে ধরে ফেলছেন মৎস্যজীবীরা, ফলে নতুন মাছ জন্ম নিতে পারছে না। এছাড়া ছোট ছোট চারা মাছগুলিও ব্যাপক আকারে ধরা পড়ছে জালে, যার ফলে মাছের সংখ্যা এত ব্যাপক আকারে কমে যাচ্ছে। কয়েক বছর আগে সরপুঁটির মতো মাছ সহজলভ্য ছিল, যা এখন দেখাই যায় না। চিতলের সংখ্যাও ব্যাপক হারে কমে গেছে।
(আরও পড়ুন: পার্টনারকে কি সত্যবাদী যুধিষ্ঠির মনে হয়? দেখুন তো এই ৬টি লক্ষণ মিলছে কি না)
এই প্রসঙ্গে পরিবেশ বিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেছেন, গঙ্গার বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করার জন্য শুধু রুই, কাতলা, মৃগেল না, অন্য মাছের উপস্থিতিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ কিছু মাছের অভাবে গঙ্গার স্বাস্থ্যের অবনতি হবে তাই প্রত্যেকটি মাছের প্রজাতি রক্ষা করা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।