রোজকার হাজারও ব্যস্ততার মধ্যে সবচেয়ে বেশি যেটি উপেক্ষিত হয়, তা হল ঘুম। সাত সকাল থেকেই শুরু হয়ে যায় নানারকম কাজের ব্যস্ততা। অনেকসময় সেসব শেষ হতে হতে গভীর রাত হয়ে যায়। এরপর শুলেও প্রায়ই চোখে ঘুম আসতে চায় না। নানা ভাবনা মাথায় চলাফেরা করে। বিছানায় এপাশ ওপাশ করতে করতেই হয়ে যায় ভোর। ঘুমের সমস্যা এড়াতে সবাই ওষুধের উপরেও নির্ভর করতে চান না। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে হতে পারে অন্যান্য শারীরিক সমস্যা।
তবে, বিশেষজ্ঞদের মতামত, ওষুধ ছাড়াই এই সমস্যার সুরাহা করা সম্ভব। আমাদের দিনের ডায়েটে কিছু নির্দিষ্ট খাবার থাকলেই অনিদ্রার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে। এই খাবারগুলো শোওয়ার আগে শেষ খাবার হিসেবে খেলে সহজেই ঘুম আসে চোখে। বিশেষজ্ঞরা তাই এই খাবারগুলোকে ঘুমের ওষুধের বিকল্পও বলে থাকেন।
১. পাকা কলা: রাতের খাবারের সঙ্গে পাকা কলা খেলে রাতে ভালো ঘুম হয়। কলার মধ্যে রয়েছে ম্যাগনেশিয়াম। এই খনিজ পদার্থটি মাংসপেশিকে শিথিল করতে সাহায্য করে। এছাড়াও কলা শরীরের সেরাটোনিন ও মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণে সাহায্য করে। এই হরমোনগুলিই ঘুম আসার পিছনে মুখ্য ভূমিকা নেয়।
২. মধু: মস্তিষ্কে রয়েছে ওরেক্সিন নামক একটি গুরুত্বপূর্ণ নিউরোট্রান্সমিটার। এই নিউরোট্রান্সমিটারটি মস্তিষ্ককে সচল রাখতে সাহায্য় করে। এর ফলে ঘুমে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। মধু খেলে মস্তিষ্কে গ্লুকোজের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়। এই গ্লুকোজ ওরেক্সিনের উৎপাদন বন্ধ করে ঘুম আসতে সাহায্য করে।
৩. হালকা গরম দুধ: হালকা গরম দুধ ঘুমের ওষুধের অন্যতম বিকল্প হিসেবে কাজ করে। দুধের মধ্যে রয়েছে ট্রিপ্টোফ্যান নামক একটি প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিড । এই অ্যামিনো অ্যাসিডটিই ঘুম আসতে সাহায্য করে। এছাডাও দুধে থাকা ক্যালিসয়াম মস্তিষ্ককে এই ট্রিপ্টোফ্যান শোষণে সাহায্য করে। এর ফলে ঘুম আসার প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত হয়। পাশাপাশি দুধ মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। অনেকসময় দেখা যায়, মানসিক চাপের জন্য চোখে ঘুম নেই।
৪. সেদ্ধ বা রান্না করা আলু: দুধের মতো আলুতেও রয়েছে ঘুমের জন্য দরকারি ট্রিপ্টোফ্যান অ্যামিনো অ্যাসিডটি। ডিনারের তালিকায় তাই আলু থাকলে রাতে সহজে ঘুম আসবে।
৫. বাদাম: বাদামের মধ্যে মেলাটোনিনের পাশাপাশি রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ ও জিঙ্ক। এই খনিজ উপাদানগুলো ঘুম আসার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা নেয়।
৬. ওটমিল: ওজন কমাতে অনেকেই ওটমিল খেয়ে থাকেন। এর মধ্যে থাকা মেলাটোনিন ঘুমের সাহায্য করে। ফলে একদিকে যেমন ওজন ঠিক থাকে, তেমনই ঘুমও ঠিকমতো হয়।