রণবীর ভট্টাচার্য
সিনেমা বা ডকুমেন্টারি নিয়ে কলকাতা যে ভাবে তার প্রমাণ কয়েকদিন আগেই কলকাতা আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফ্যাস্টিভেলে পেয়েছে যেখানে ঝিল্লি, মানিকবাবুর মেঘের মত সিনেমা বড় পর্দায় চমকে দিয়েছিল। এবার চার বন্ধু সৌরভ মুখার্জি, অন্তরা ব্যানার্জি, পূর্বা চক্রবর্তী এবং বিশাল গুপ্তর হাত ধরে আসছে মীরার গল্প।
মীরা শুনলেই মনে পড়ে সেই ষোড়শ শতাব্দীর শুরুর দিকে রাজস্থানের মার্তা এলাকার চৌকারী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্ম নেওয়া মীরার কথা। সেই কৃষ্ণপ্রেমে বিভোর হওয়া মীরার কথা সকলেই কম বেশি জানেন। মীরা ভজন গাওয়ার সময় এতই ধ্যানমগ্ন হয়ে যেতেন যে চেতনা হারিয়ে ফেলতেন এবং গভীর মোহ ও কল্পনার রাজ্যে চলে যেতেন। তবে কলকাতার চার বন্ধুর মীরা কিন্তু সেই মীরা নন।
মীরা একটি মেয়ের গল্প যাকে গন্ধ বিশেষ ভাবে প্রভাবিত করে। তবে এর সাথে কোন পাগলামো নয়, বরং আর্থ সামাজিক বাস্তব জড়িয়ে। তার অস্তিত্ব, স্মৃতি, আশপাশের সাথে তার সম্পর্ক গন্ধের সাথে জড়িয়ে।। সাধারণ হয়েও সে আলাদা, স্বকীয়, তবে সেটা তার জন্য ভালো না খারাপ, সেটা ভবিষৎ বলবে। বলাই বাহুল্য, গল্পের টানাপোড়েন এগিয়ে নিয়ে যাবে মীরার জীবন নিয়ে, যেখানে অবশ্যই অবাক করে দেওয়ার মত দিক রয়েছে দর্শকদের জন্য।
তবে এই মীরার গল্প বড়পর্দায় আনার ক্ষেত্রে শুধু এই চার মূর্তি নয়, বরং অনেকেই ভূমিকা নিতে পারেন। গণঅর্থায়নের মাধ্যমে এই ছোট ছবিতে প্রযোজনা করতে পারেন অনেককেই। বার্তা দেওয়া হয়েছিল বন্ধু, আত্মীয়দের, আর এখন মীরার স্বপ্নে পাড়ি দিয়েছেন অনেকেই। তবে এই চারমূর্তি যে সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রে অপটু এমনটা নয়। এদের আগের কাজ ‘Et tu, Mr. Gonzalves?’ ন্যাশনাল ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের ইন্ডাস্ট্রি স্ক্রিনিং সেকশনে দেখানো হয়েছিল গত বছর নভেম্বর মাসে। মীরার পরিচালক সৌরভ মুখার্জি যথেষ্ট আশাবাদী সিনেমাটি নিয়ে। নিজেদের হাতখরচের টাকা দিয়ে শুরু করে আজ পোস্ট প্রোডাকশনের দিকে এগিয়ে গেছে তারা। আশা করছে আরেকটু অর্থের সংস্থান হলেই তারা বিভিন্ন ফেস্টিভালে পাঠাবে মীরার গল্প।
তথাকথিত প্রযোজকের ছক ভেঙে অনেকেই আজ এগিয়ে আসছে ভালো কাজ নিয়ে আর গণঅর্থায়ন প্রমাণ করে যে ভালো কাজের প্রতি মানুষের আজও আগ্রহ রয়েছে। সিনেমাদর্শকদের প্রতি দায়বদ্ধতা সব সময়েই ছিল, থাকবে। তাই বড়পর্দায় মীরাকে দেখা জন্য অপেক্ষার আর বেশিদিন নেই বলা চলে!