ওজন কমানোর জন্য মানুষ কী না করেন! কেউ শুরুতেই জিমে ভর্তি হন। কেউ এক ধাক্কায় খাওয়া দাওয়া প্রায় ছেড়েই দেন। এর ফলে, যা হওয়ার তাই হয়। কয়েকদিন যেতে না যেতেই মানা সম্ভব হয় না কঠিন রুটিন। আসে বিরক্তি। সব ছেড়ে আবার তথৈবচ।
তাই মেদ ঝড়ানোর জন্য প্রয়োজন একটু বিজ্ঞান- নিজের শরীরটাকে বোঝা। আর সেই সঙ্গে অবশ্যই চিকিত্সকের পরামর্শ।
বিভিন্ন নামী জিম ইনস্ট্রাক্টর থেকে বলি তারকা, সকলেরই সুন্দর চেহারার রহস্য তাঁদের মর্নিং রুটিন। কীরকম কাঁটে তাঁদের সকাল? কী এমন করেন যাতে তাঁদের ওজন থাকে নিয়ন্ত্রণে? জানুন:
১. ঘুম থেকে উঠেই খালি পেটে কার্ডিয়ো
সেই রাতের পর থেকে সকাল পর্যন্ত আমরা কিছুই খাই না। ফলে পাকস্থলী অনেকটাই খালি থাকে। এই অবস্থায় দ্রুত শারীরিক কসরত করলে প্রয়োজনীয় ক্যালোরি আসবে আপনার দেহে সঞ্চিত ফ্যাট থেকে। ফলে ওজন কমবে সহজেই।
সকালে একটু তাড়াতাড়ি উঠুন। কার্ডিয়ো এক্সারসাইজ হিসাবে দ্রুত সাইক্লিং, সাঁতার, দৌড়, খালি হাতে HIIT ব্যায়াম করতে পারেন। মোটমাট এমন ব্যায়াম যাতে হার্টবিট বৃদ্ধি হয় ৩০ মিনিটের জন্য। তবে, সুগার, গ্যাস, মাথা ঘোরার মতো সমস্যা থাকলে খালি পেটে বেশি কসরত করবেন না।
আর ওয়েট ট্রেনিং করতে চাইলে সেটাও করতে পারেন। খুবই উপকারি। তাই জিম যান সকালেই। বলি তারকারাও কিন্তু তাই করেন।
২. অনেক সময় ধরে জগিং ভাল না কম সময়ে স্প্রিন্ট করা ভাল?
ধীর গতিতে অনেকক্ষণ জগিংয়ের তুলনায় দ্রুত গতিতে অল্প সময়ে দৌড় ঢের বেশি কার্যকর। একাধিক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় উঠে এসেছে এই তথ্য।
অর্থাত্ ১ ঘণ্টা ব্রিস্ক ওয়াক বা জগিংয়ের থেকে ২০ মিনিট খুব জোর দৌড়ান। একইভাবে খুব দ্রুতগতির অন্য কোনও ব্যায়ামও করতে পারেন। তবে কোনও শারীরিক সমস্যা থাকলে এটি প্রযোজ্য নয়।
৩. সকালের আহার রাখুন ব্যালান্সড
ব্যায়াম করে এসে স্নান সেরেই খাওয়া সারুন। সকালে পরিমিত পরিমাণে প্রোটিন, ফ্যাট ও কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খান। দামি ওটস-ই যে হতে হবে, তার কোনও মানে নেই। সাধারণ ভুষিসমেত লাল আটার রুটি, দুধ, কলা, ডিম সেদ্ধ, অঙ্কুরিত ছোলা, লাল মুড়ি, সবজির তরকারি ইত্যাদি রাখুন পাতে।
কমপ্লেক্স কার্ব- অর্থাত্ খোসা-ভুশিসমেত রুটি, ডাল, ওটস ইত্যাদি খান। পেট অনেকক্ষণ ভর্তি থাকবে। ক্যালোরিও কম ঢুকবে শরীরে। জুস এড়িয়ে চলুন। গোটা ফল খান। যাঁদের কাজের জন্য বাইরে খেতে হয়, তাঁরা লুচি-নুডলস-টোস্ট-এর বদলে রুটি-ডালের তরকারি খাওয়ার চেষ্টা করুন।
৪. জল পান করুন পর্যাপ্ত
সকালে ব্যায়াম করার আগে ও পরে পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খান। অল্প করে বারবার জল খান। শরীরে জলের অভাব হতে দেবেন না।
সবশেষে বলি, সকালে এগুলো সবই করবেন ভালবেসে। ওজন নিয়ে সমাজ কী বলল ভাববেন না। তবে মনে রাখবেন, ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে সুস্থ থাকবেন আপনিই। এনার্জি বাড়বে। এড়াতে পারবেন রোগের সম্ভাবনা। আর ফ্যাশানেবল ড্রেসেও বেশ মানাবে। বাড়বে আত্মবিশ্বাস।