অ্যালকোহল খাওয়ার পরে হ্যাংওভার হয়ই। এই প্রভাব রুখতে তাই বিজ্ঞানীরা তাই একটি হ্যাংওভার প্রতিরোধকারী জেল তৈরি করেছেন, দুধের প্রোটিন এবং সোনার ন্যানো পার্টিকেল থেকে। ইতিমধ্যেই ইঁদুরের উপর এটির পরীক্ষা নিরীক্ষা সফল হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। সুইজারল্যান্ডের ইটিএইচ জুরিখ ইউনিভার্সিটির ম্যাটেরিয়ালস ডিপার্টমেন্টের গবেষকদের তৈরি জেল অনেকাংশে উপকার করবে। গবেষকদের মতে, এই ওষুধটি অ্যালকোহল ডিটক্সিফিকেশনে খুব কার্যকর হতে পারে।
- ইঁদুরের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে কী জেনেছেন বিজ্ঞানীরা
ইঁদুরের উপর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেছেন যে এই জেলযুক্ত অ্যালকোহল অনেক অঙ্গের ক্ষতিও প্রতিরোধ করে। নিম্নলিখিত পর্যায়ে এমনটাই প্রমাণিত হয়েছে।
১) পরীক্ষার জন্য, বিজ্ঞানীরা কিছু ইঁদুরকে অ্যালকোহল মেশানো এই জেল দিয়েছিলেন। জেল যুক্ত অ্যালকোহল পান করার ৩০ মিনিটের মধ্যে ইঁদুরের রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা ৪০ শতাংশ কমে গিয়েছিল।
২) ৫ ঘণ্টার মধ্যে রক্তে অ্যালকোহলের মাত্রা ৫০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস লক্ষ্য করা গিয়েছে।
৩) এছাড়াও যে ইঁদুরগুলোকে প্রতিদিন এই অ্যালকোহল দেওয়া হতো তাদের ওজন কমে গিয়েছিল।
৪) তাদের লিভারের ফ্যাট মেটাবলিজমও অন্যান্য ইঁদুরের তুলনায় অনেক ভালো ছিল।
- জেলটি মানুষের শরীরে গিয়ে কীভাবে উপকার করবে
অ্যালকোহল খাওয়ার পরে, এটি সাধারণত লিভারের ক্ষতি করে। বিপাক করে অ্যাসিটালডিহাইড তৈরি করে। এই অ্যাসিটালডিহাইডকে অনেক হ্যাংওভার উপসর্গের কারণ বলে মনে করা হয়। যেমন হ্যাংওভারের এই লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, মাথাব্যথা, শুষ্ক মুখ, নিম্ন রক্তচাপ, হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি , ত্বকের তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং মুখ থেকে দুর্গন্ধ বের হওয়া। কিন্তু নতুন জেল মিশিয়ে অ্যালকোহল খেলে তা লিভারের পরিবর্তে পাচনতন্ত্রে সোজা চলে যাবে, যার দরুণ লিভার ক্ষতিগ্রস্থ হবে না, হ্যাংওভারও হবে না, কম হলেও ক্ষতিকারক অ্যাসিটিক অ্যাসিড তৈরি করতে পারে এই জেল। এরপর আমাদের শরীর এই অ্যাসিড ভেঙ্গে জল ও কার্বন ডাই অক্সাইডে পরিণত করে।
কিন্তু এই জেল তখনই কাজে আসে যখন অ্যালকোহল পরিপাকতন্ত্রে পৌঁছে যায়। কারণ অ্যালকোহল একবার রক্তে প্রবেশ করলে, জেল ক্ষতিকারক প্রভাব কখনওই বন্ধ করতে পারবে না। তাই সবটা দেখে গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা বলেছেন , 'মদ্যপান স্বাস্থ্যের জন্য মোটেও ভালো নয়। যাইহোক, এই জেল তাঁদের মধ্যে আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে পারে, সেই সমস্ত মানুষের জন্য কার্যকরী হতে পারে, যাঁরা অ্যালকোহল পুরোপুরি ছেড়ে দিতে চান না ঠিকই, আবার শরীরের উপরও খুব বেশি চাপও দিতে চান না। যদিও মানুষের জন্য এই জেল বাজারে লঞ্চ করতে আরও কিছুটা সময় লাগবে বলে জানা গিয়েছে।