বলা হয়, সব সমস্যার সমাধান নাকি রান্নাঘরেই। যে কোনও বাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয় রান্নাঘরকে। এখান থেকেই আমরা খাদ্যের আকারে বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি পাই। অনেক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ভারতীয় রান্নাঘর প্রাকৃতিক প্রতিকারের কেন্দ্রস্থল। কারণ রান্নাঘরে উপস্থিত মশলা এবং খাদ্যদ্রব্যের আশ্চর্যজনক বৈশিষ্ট্য আপনাকে গুরুতর রোগ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
কিন্তু আপনি কি জানেন যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, এই একই রান্নাঘর ক্যানসারের মতো গুরুতর এবং মারাত্মক রোগের আবাসস্থল হয়ে উঠছে? বেশ কিছু গবেষণায়, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে আমাদের রান্নাঘরে এমন জিনিসের সংখ্যা বাড়ছে, যার অতিরিক্ত ব্যবহার ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
রান্নাঘরের কোন কোন জিনিসে ক্যানসারের ঝুঁকি বেশি
রান্নার জন্য ব্যবহৃত কিছু পাত্র থেকে শুরু করে রান্নাঘরে ব্যবহৃত অনেক জিনিসপত্র, এমন উপাদান চিহ্নিত করা হয়েছে যা আপনাকে ক্যানসারের ঝুঁকিতে ফেলতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যুর কারণ হওয়া এই রোগ বছরের পর বছর বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার কারণে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
নন-স্টিক বাসন ব্যবহার
অনেক গবেষণায় রান্নাঘরে ব্যবহৃত নন-স্টিক রান্নার বাসন স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বলে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই ধরনের পাত্রে পারফ্লুরোঅক্টানোয়িক অ্যাসিড (PFOA) থাকে, যা নন-স্টিক আবরণ তৈরিতে ব্যবহৃত একটি রাসায়নিক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে পারফ্লুরোঅক্টানোয়িক অ্যাসিড দীর্ঘমেয়াদে ক্যানসারের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
রান্নার সময় যখন খাবার উচ্চ তাপমাত্রার সংস্পর্শে আসে, তখন ক্ষতিকারক রাসায়নিক পদার্থ নির্গত হয় যা আমাদের চোখে নাও পড়তে পারে কিন্তু তা বিভিন্নভাবে শরীরের ক্ষতি করে। খাবারের সংস্পর্শে আসার পর এই রাসায়নিকগুলি আমাদের শরীরে পৌঁছায়। এটি হরমোনজনিত সমস্যা সৃষ্টি করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল করে এবং ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় বলে প্রমাণিত হয়েছে।
প্লাস্টিকের জিনিস
রান্নাঘরে থাকা প্লাস্টিকের বাসন, বোতল সমানভাবে বিপজনক। এই প্লাস্টিকের জিনিসপত্র তৈরিতে বিসফেনল এ (বিপিএ) নামক একটি রাসায়নিক ব্যবহার করা হয়েছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। বিসফেনল-এ (BPA) হল একটি শিল্প রাসায়নিক যা প্লাস্টিক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। খাবারের পাত্র, দুধের বোতল এবং প্লাস্টিকের জলের বোতলও এটি দিয়ে তৈরি করা হয়। গবেষকদের দাবি, এটি মস্তিষ্কের বিকাশ, থাইরয়েড হরমোনের পাশাপাশি প্রজনন স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই রাসায়নিকের কারণে ক্যানসারের ঝুঁকিও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।
ডিসক্লেমার: এই প্রতিবেদনের তথ্য সাধারণত পরামর্শমূলক। সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে এই খবর। বিস্তারিত জানতে, পরবর্তী যে কোনও পদক্ষেপ করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।