শীতকাল এলেই বাজার ছেয়ে যায় নানান ধরনের রঙ-বেরঙের শাকসবজিতে। শীতকালে খাওয়া-দাওয়ার আনন্দই আলাদা। এই সময় যে সমস্ত মরশুমী ফল ও সবজি পাওয়া যায়, তা শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী হয়। আমরা যখনই শীতের সবজির নাম নিই, তখন সবার আগে মাথায় আসে পালকের নাম। সতেজ, সবুজ পালক পুষ্টিকর উপাদানের ভাণ্ডার। পালকে ২৩ ক্যালোরি থাকে, এতে জল থাকে ৯১ শতাংশ। পালকে প্রোটিনের পরিমাণ ২.৯ গ্রাম, কার্বস থাকে ৩.৬ গ্রাম, ২.২ গ্রাম ফাইবার ও ০.৪ গ্রাম ফ্যাট থাকে। এ ছাড়াও ভিটামিন এ, সি, কে১, ফোলিক অ্যাসিড, আয়রন ও ক্যালশিয়াম থাকে এই শাকে। শীতকালে পালক খেলে শরীর কী কী উপকার লাভ করে জেনে নিন—
চোখের জন্য উপকারী- জ্যাক্সেন্থিন ও ল্যুটিনে সমৃদ্ধ পালক শাক। এতে উপস্থিত ক্যারোটিনয়েড যা ক্ষতির হাত থেকে চোখকে বাঁচায়। একাধিক সমীক্ষা অনুযায়ী জ্যাক্সেন্থিন ও ল্যুটিন ছানি থেকে চোখকে রক্ষা করে। পালকে উপস্থিত ভিটামিন এ মিউকাস মেমব্রেন বজায় রাখতে সাহায্য করে। চোখের রশ্মির জন্য এটি উপযোগী।
ক্যান্সার রোধ করে- পালকে এমজিডিজি ও এসকিউডিজির মতো যৌগ থাকে, যা ক্যান্সার বৃদ্ধির গতিকে আটকে দেয়। সমীক্ষা অনুযায়ী টিউমারের আকৃতি কম করতে এই যৌগ সাহায্য করে থাকে। আবার পুরুষদের প্রস্টেট ক্যান্সারের সম্ভাবনাকেও কম করে পালক। এ ছাড়াও ব্রেস্ট ক্যান্সার থেকেও রক্ষা করে। পালকে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সার মোকাবিলায় সাহায্য করে।
উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের জন্য উপকারী- পালকে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট থাকে, যা রক্তচাপের ভারসাম্য বজায় রাখে এবং হৃদরোগ থেকে রক্ষা করে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, পালক খেলে রক্তচাপের স্তর কমতে থাকে, হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। এতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে ও সোডিয়াম থাকে কম পরিমাণে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের পালক খাওয়া উচিত।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে- শীতকালে সর্দি-কাশির সমস্যা সাধারণ। তাই এ সময় বেশি করে পালক শাক খাওয়া উচিত। কারণ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এই শাকটি। বিটা ক্যারোটিনের পাশাপাশি সমস্ত ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে পালকে। আবার ভিটামিন সি-তে পরিপূর্ণ হওয়ায় সংক্রমণ মোকাবিলায় শরীরকে সাহায্য করে।
হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে- যে ব্যক্তির হিমোগ্লোবিনের স্তর কম, সেই জাতকদের নিজের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই পালক শাক অন্তর্ভূক্ত করা উচিত। লোহিত রক্তকণিকা বৃদ্ধিতে সহায়ক ফোলেট পালকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে উপস্থিত থাকে।