বাড়ির খাবারে পরিমাণ মতো নুন খেলেও বাইরের খাবারে প্রায়ই পরিমাণ বুঝে নুন খাওয়া হয় না। গরম তেলেভাজা ও মশলাদার খাবারে নুনের পরিমাণ প্রয়োজনের তুলনায় বেশি থাকে। অনেকেই এই ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকেন না। এ ছাড়া বেশি খাওয়াদাওয়া থেকেও শরীরে নুনের পরিমাণ বাড়তে পারে। এখান থেকেই নানারকম রোগের শুরু।
নুন যেমন শরীরে সোডিয়ামের ভারসাম্য রাখতে দরকার, তেমনই অতিরিক্ত নুন থেকে শরীরের বিভিন্ন ক্ষতিও হতে পারে। নুনের পরিমাণ স্বাভাবিকের থেকে বেড়ে গেলে গুরুতর রোগ থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। সম্প্রতি একটি এডিনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা জানাচ্ছে, প্রয়োজনের তুলনায় বেশি নুন শরীরে গেলে প্রথমেই প্রভাব পড়ে মস্তিষ্কে। মস্তিষ্কের উপর অতিরিক্ত চাপ তৈরি হয়। এছাড়া স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণও বেড়ে যায়। পাশাপাশি কগনিটিভ কার্যক্ষমতার উপরেও প্রভাব ফেলতে পারে অতিরিক্ত সোডিয়াম। বিশেষজ্ঞের মতে, প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি নুন খাওয়া উচিত না।
- অতিরিক্ত নুন থেকে স্ট্রেস মাসিনা হাসপাতালের ডাঃ আলতামাশ শেখ জানাচ্ছেন, উচ্চ পরিমাণ নুনযুক্ত ডায়েটের ফলে মস্তিষ্কে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। প্রায় ৬০ থেকে ৭৫ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে এই হরমোনের মাত্রা। এর প্রভাবে মস্তিষ্কের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা কিছুটা শ্লথ হয়ে যায়। এ ছাড়াও কিছু নির্দিষ্ট জিন বেশি পরিমাণে সক্রিয় হয়ে ওঠে।
- মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে চিকিৎসক জানান, নুনের পরিমাণ ডায়েটে বেড়ে গেলে রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। এর থেকে স্ট্রোক বা প্যারালাইসিসের আশঙ্কাও বেড়ে যায়। অনেক বিশেষজ্ঞ বলেন, এর ফলে হৃদরোগের আশঙ্কাও বেড়ে যায় যা থেকে পরবর্তীকালে মস্তিষ্কের ক্ষতির আশঙ্কা বাড়তে থাকে।
- ডিমেনশিয়া উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা প্রায়ই বেশি নুন খেতে পছন্দ করেন। দেখা গেছে, উচ্চ রক্তচাপ ডিমেনশিয়ার একটি অন্যতম কারণ। ৬০ শতাংশ রোগীর মধ্যে এই প্রবণতা প্রায়ই দেখা যায়। তাই বেশি নুনের ডায়েট বেছে নিলে ভুলে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়তে পারে।
- আচরণের পরিবর্তন বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অতিরিক্ত নুনের কারণে মস্তিষ্কের কিছু অঞ্চলে রক্ত সঞ্চালনে ব্যাহত হয়। এর থেকে সেই অঞ্চলে স্বাভাবিক অক্সিজেনের মাত্রা কমে যেতে থাকে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে হাইপোক্সিয়া বলা হয়। হাইপোক্সিয়ার কারণে একজনের স্বাভাবিক আচরণে পরিবর্তন আসতে পারে।