জামাইষষ্ঠীর পর অরন্ধন উৎসব হল বাঙালির এমন একটি উৎসব যেখানে পাতে ইলিশ মাছ থাকবেই। বিশ্বকর্মা পুজোর পরের দিন গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে পালন হয় এই উৎসব যাকে চলতি ভাষায় বলা হয় রান্না পুজো। তবে এই বছরে রান্না পুজোয় বাঙালির হাতের কাছে নেই ইলিশ মাছ, তাই স্বাভাবিকভাবেই মন খারাপ সকলের।
গ্রামবাংলায় ঘরে ঘরে রান্না পুজোর সময় ইলিশ মাছ ভাজা, কচু শাক দিয়ে ইলিশ মাছের একাধিক পদ থাকে খাবারের তালিকায়। কিন্তু বিগত কয়েক বছরের মতো এই বছরেও রান্না পুজোর সময় ইলিশ মাছের বড়ই আকাল দেখা গেছে। শুধু তাই নয়, বারবার আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে মৎস্যজীবীরাও যেতে পারছেন না সমুদ্রে।
এই প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনাইটেড ফিশারমেন অ্যাসোসিয়েশনের সহকারী সম্পাদক বিজন মাইতি বলেন, ‘আশা ছিল এই বছর চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ইলিশের যোগান দেওয়া সম্ভব হবে। মৎস্যজীবীরাও সেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কিন্তু একের পর এক নিম্নচাপ আর সমুদ্রের খামখেয়ালিতে দিনের পর দিন নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে আসতে হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। প্রাকৃতিক দুর্যোগে একেবারে শূন্য হাতে ফিরে আসতে হচ্ছে তাঁদের।’
(আরও পড়ুন: স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েই ‘DIVORCE’ পারফিউম লঞ্চ, বড় ঘোষণা দুবাইয়ের রাজকুমারীর)
বিজন মাইতি আরও বলেন, ‘সামনেই রান্না পুজো। রান্না পুজোয় ইলিশ মাছের চাহিদা প্রতিবছর থাকে তুঙ্গে। কিন্তু দুর্যোগের ফলে গভীর সমুদ্র থেকে ইলিশ শূন্য ট্রলার নিয়ে ফিরতে হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। যে ক'টি ইলিশ পাইকারি বাজারে বিক্রি হচ্ছে তার দাম আকাশ ছোঁয়া। সাধারণ মানুষের ক্ষমতার বাইরে।’
বিজন বাবু আরও জানান, কয়েকদিন আগে দুর্যোগের সতর্কবার্তা পেয়ে কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবার, রায় দিঘি, নামখানা এবং ফ্রেজারগঞ্জের ঘাটে ঘাটে ভেড়া ট্রলারগুলিতে নামমাত্র ইলিশ মাছ এসেছে। খুচরো এবং পাইকারি বাজারে সেগুলি বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। তবে এখন আবহাওয়া অনুকূল হওয়ায় এবং সমুদ্রের রোষ কমায় মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে নামার ক্ষেত্রে আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা তুলে নেওয়া হয়েছে।
ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্র বাজার মাছের আরতদাররা জানিয়েছেন, পাইকারি বাজারে ২০০ থেকে ২৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ এসেছে যা বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩৬০ থেকে ৩৭০ টাকায়। ৪০০ থেকে ৫০০ গ্রাম ইলিশের মূল্য প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা। স্টোরের ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি কেজি ১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং আড়তে আসা এক কেজি ইলিশের বর্তমান দাম প্রতি কেজি ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
(আরও পড়ুন: পেটে ধাক্কা মেরে বৃদ্ধকে ঠেলে দিল ষাঁড়, ঠিকরে বেরোল অন্ত্র, অবস্থা গুরুতর)
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত থেকেই একের পর এক ট্রলার গভীর সমুদ্রের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। এই ট্রলারগুলি যদি ইলিশ নিয়ে ফিরতে শুরু করলে হয়তো রান্না পুজোর সময় ইলিশের আকাল কিছুটা হলেও মিটতে পারে।