বয়স বাড়ার সঙ্গে আমাদের ত্বকে অনেক পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনগুলির ফলে ত্বক আলগা হয়ে যায়, বলিরেখা, কালো দাগ পড়ে যায় এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়। তবে, আজকাল বাজারে অনেক দামি অ্যান্টি-এজিং পণ্য পাওয়া যায়। কিন্তু এই পণ্যগুলির বেশিরভাগই রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে তৈরি। যার দীর্ঘমেয়াদী ব্যবহার ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
কিন্তু যদি আপনি এই দামি পণ্যগুলির পরিবর্তে ঘরোয়া প্রতিকার ব্যবহার করেন, তাহলে এগুলি কেবল সস্তাই নয় বরং আপনার ত্বককে আরও তরুণ দেখাবে। এমন পরিস্থিতিতে, আপনি ৪টি ঘরোয়া জিনিস ব্যবহার করে বাড়িতেই অ্যান্টি-এজিং ফেস মাস্ক তৈরি করতে পারেন। এই ফেস মাস্কটি আমাদের ত্বককে তরুণ এবং উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
বার্ধক্য কেন আসে
সূর্যের ক্ষতিকারক ইউভি রশ্মি ত্বকের কোষের ক্ষতি করে। এর ফলে ত্বকে বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে যেমন রোদের ট্যান, কালো দাগ, বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখা। সঠিক ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পর্যাপ্ত ঘুম এবং ব্যায়ামও বার্ধক্য রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মহিলাদের মেনোপজের সময় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে ত্বক আলগা এবং শুষ্ক হয়ে যেতে পারে। মানসিক এবং শারীরিক চাপও আপনার ত্বকের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। ত্বক সুস্থ রাখতে জল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে জলের অভাব হলে ত্বক শুষ্ক ও ক্লান্ত দেখায়। যার কারণে বার্ধক্যের লক্ষণ তাড়াতাড়ি দেখা দিতে পারে। এছাড়াও, ধূমপানের কারণে পরিবেশগত চাপের কারণেও বার্ধক্যের লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে।
অ্যান্টি-এজিং ফেস মাস্ক তৈরি করবেন কীভাবে
তিসির বীজ
তিসির বীজ তিসি নামেও পরিচিত। এটি বার্ধক্য প্রতিরোধের জন্য একটি দুর্দান্ত প্রাকৃতিক উপাদান। এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবার পাওয়া যায়। যা ত্বককে ভেতর থেকে পুষ্টি জোগায় এবং তরুণ রাখতেও সাহায্য করে। তিসির বীজ ত্বককে হাইড্রেটেড রাখতেও সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা এনে দেয়। এটি বলিরেখা এবং সূক্ষ্ম রেখাও কমায়। এছাড়াও ত্বকের স্থিতিস্থাপকতাও বৃদ্ধি পায়। এর জন্য তিসির বীজ ভালো করে পিষে গুঁড়ো করে নিন। আপনি অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে তিসির গুঁড়ো মিশিয়ে ফেস মাস্ক হিসেবে লাগাতে পারেন।
চালের গুঁড়ো
চালের গুঁড়ো আমাদের ত্বকের জন্যও খুব ভালো বলে মনে করা হয়। চালের গুঁড়োতে অ্যান্টি-এজিং বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায়, যা ত্বককে নরম করে তোলে। চালের গুঁড়োতে উপস্থিত পারদ এবং স্যাপোনিন ত্বককে টানটান করতে এবং বার্ধক্যের প্রভাব কমাতে সাহায্য করে। ত্বক থেকে মৃত কোষ দূর করে এবং ত্বককে পরিষ্কার ও উজ্জ্বল করে। এর জন্য নিয়মিত ফেস মাস্কে চালের গুঁড়ো মিশিয়ে লাগালে ত্বকে প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা আসে। তাছাড়া, এটি ত্বককে নরম ও মসৃণ করে তোলে।
ভিটামিন-ই
ভিটামিন ই একটি ভালো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ভিটামিন ই বার্ধক্যের লক্ষণ কমায়। এটি ত্বকের মেরামত এবং পুনর্জন্মকে উৎসাহিত করে। ভিটামিন ই ত্বককে হাইড্রেটেড রাখে এবং আর্দ্রতা বজায় রাখে। ভিটামিন ই বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই আপনার ত্বককে সূর্যের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং ত্বকের রং উন্নত করে। আপনি সরাসরি ভিটামিন ই ক্যাপসুল ব্যবহার করতে পারেন অথবা মাস্কের সাথে মিশিয়ে লাগাতে পারেন।
অ্যালোভেরা
ত্বকের যত্নের জন্য অ্যালোভেরা ভালো বলে মনে করা হয়। অ্যালোভেরায় উপস্থিত ভিটামিন সি এবং ই ত্বকের উন্নতি এবং তারুণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। এর প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটি ত্বককে স্বস্তি দেয় এবং আর্দ্র রাখে। অ্যালোভেরা ত্বকের ছিদ্রগুলিকেও শক্ত করে এবং সতেজতা প্রদান করে। এর জন্য তাজা অ্যালোভেরার পাতা থেকে জেল বের করে সরাসরি আপনার মুখে লাগান। অথবা অন্যান্য উপাদানের সাথে জেল মিশিয়ে একটি মাস্ক তৈরি করুন।
ডিসক্লেমার: এই প্রতিবেদনের তথ্য সাধারণত পরামর্শমূলক। সাধারণ তথ্যের ভিত্তিতে এই খবর। বিস্তারিত জানতে, পরবর্তী যে কোনও পদক্ষেপ করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।