করোনার অন্য সব রূপকে পিছনে ফেলে দৌড়ে সকলের আগে এখন ওমিক্রন। ডেল্টা বা অন্য রূপগুলির তুলনায় এটি অনেক তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পড়েছে। কিন্তু হঠাৎ ওমিক্রন এত শক্তিশালী হয়ে উঠল কেন? করোনা নিজেকে কতটা বদলানোর ফলে ওমিক্রন এমন মারাত্মক সংক্রামক হয়ে উঠল? নাকি এর পিছনে করোনার যতটা ভূমিকা রয়েছে, তার চেয়ে অন্যদের ভূমিকা বেশি? কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?
হালে University of Vermont-এর গবেষক এমিলি ব্রুস ওমিক্রনের সংক্রমণের হার নিয়ে একটি গবেষণা করছিলেন। সেখানে তিনি সারা পৃথিবী থেকে তথ্য জোগাড় করে বোঝার চেষ্টা করছিলেন, ওমিক্রন কেন এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। প্রাথমিক ভাবে তাঁর অনুমান ছিল, এ জন্য দায়ী ওমিক্রনের ভাইরাল লোড।
যাঁরা RTPCR পরীক্ষা করিয়েছেন এবং তার ফল পিজিটিভ এসেছে, তাঁরা অনেকেই জানেন, রিপোর্টে উল্লেখ থাকে ভাইরাল লোডের। ওমিক্রনের এত দ্রুত সংক্রমণ দেখে বিজ্ঞানীদের ধারণা হয়েছিল, ডেল্টা বা আগের রূপগুলির তুলনায় ওমিক্রনের ভাইরাল লোড অনেক বেশি। তাই এটি অতি দ্রুত ছড়াচ্ছে। সুইৎজারল্যান্ডের University of Geneva-র গবেষক বেঞ্জামিন মেয়ারের কথা উল্লেখ করে এমিলি ব্রুস লিখেছেন, সারা পৃথিবীর বেশির ভাগ বিজ্ঞানীই মনে করছিলেন, আসলে শরীরে মারাত্মক পরিমাণে বেড়ে যায় বলেই এত দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ওমিক্রন।
কিন্তু ধারণা বদলে দিয়েছে আমেরিকার National Basketball Association-এর দেওয়া তথ্য। এখানে নির্দিষ্ট সময় অন্তর খেলোয়াড়দের RTPCR করানো হয়। ফলে কার শরীরে কী পরিমাণে ভাইরাল লোড রয়েছে, তা সহজে অনুমান করা যায়।
সেই রিপোর্ট থেকে দেখা গিয়েছে, ওমিক্রনের ভাইরাল লোড মোটেই ডেল্টার চেয়ে বেশি নয়। তাহলে এই সংক্রমণটি এত দ্রুত ছড়াচ্ছে কেন?
প্রধান কারণ কী:
বিজ্ঞানীরা বলছেন, মানুষের গাফিলতি এবং সচেতনতার অভাব। যেহেতু ওমিক্রনে উপসর্গের পরিমাণ কম, তাই বেশির ভাগ সংক্রমিতই একে পাত্তা দেননি। শরীরে ওমিক্রন থাকা অবস্থাতেই বেরিয়ে পড়েছেন বাইরে। দায়িত্ব নিয়ে ছড়িয়ে দিয়েছেন ভাইরাসটিকে।
ওমিক্রনের প্রভাব সবচেয়ে মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছোয় পঞ্চম দিনে। অথচ উপসর্গের পরিমাণ তখনও এমন কিছু থাকে না। তাই বেশির ভাগ মানুষই ওই সময়ে অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করছেন এবং ভাইরাসটিকে ছড়াতে সাহায্য করছেন। এমনই মত চিকিৎসকদের।