বাবা-মা কাকে বেশি ভালোবাসে, ছোটদের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন এটি। বিশেষত যারা সিঙ্গল চাইল্ড নয়, নিজেদের ভাই বা বোন রয়েছে, তাদের জন্য এটা একটি উদ্বেগের বিষয়ই। এবং বাবা-মা সাধারণত বলেন যে তাঁরা সবাইকে সমানভাবে ভালোবাসেন। কখনও কখনও, ভাইবোনেরা এমনকি ঠাট্টা-তামাশা করে, একে অপরকে নিয়ে কৌতুক করে।
কিন্তু সাইকোলজিক্যাল বুলেটিনে প্রকাশিত একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে বাবা-মায়েরাও সন্তানদের মধ্যে কোনও একজনকে বেশি পছন্দ করেন। অধ্যয়নটি কিছু আশ্চর্যজনক তথ্য দেখিয়েছে যে কীভাবে একটি শিশুর জন্মের ক্রম, অর্থাৎ সে প্রথম সন্তান না দ্বিতীয় বা তৃতীয়, তার লিঙ্গ কী এবং তাঁর ব্যক্তিত্বের মতো বিষয়গুলির উপর বাবা-মায়ের আচরণ নির্ভর করে। বাবা-মা হয়ত কখনও কখনও এটি বুঝতে পারেন না, কিন্তু এই পক্ষপাতিত্ব করেই থাকেন তাঁরা, যা ছোটদের মনের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে।
আরও পড়ুন: (UTI among men: মূত্রে রক্ত, সঙ্গে জ্বালাভাব? UTI আক্রান্ত হচ্ছে ছেলেরাও! কারণ জানালেন ডাক্তার)
সন্তানদের মধ্যে কীভাবে ভাগ হয় বাবা-মায়ের ভালোবাসা
সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে যে বাবা-মায়ের পক্ষপাত সন্তানের জন্মের ক্রম, লিঙ্গ এবং ব্যক্তিত্বের উপর ভিত্তি করে হতে পারে।
- জন্মের ক্রমের কথা বললে, ছোট ভাইবোনদের সঙ্গে প্রায়ই আরও সুন্দর আচরণ করা হয়, যখন বড় ভাইবোনরা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়ের কাছ থেকে আরও দূরে চলে যায়, অনেকসময় নিয়ন্ত্রণের বাইরে বেরিয়ে যায়।
- লিঙ্গ বিশেষে দেখতে গেলে, বাবা-মায়েরা তাদের ছেলেদের চেয়ে তাঁদের মেয়েদের একটু বেশি পছন্দ করেন। যদিও বাচ্চারা এটা লক্ষ্য নাও করতে পারে, এমনকি বাবা-মায়েরাও অনেকসময় বোঝেন না।
- অবশেষে, যখন ব্যক্তিত্বের কথা আসে, যে শিশুরা সদয়, দায়িত্বশীল এবং সহজে মিশতে পারে তাদের প্রায়শই পছন্দ করেন বাবা-মায়েরা।
বাবা-মায়েদের জন্য পরামর্শ
অধ্যয়নের লেখক, অ্যালেক্স জেনসেন, ব্যাখ্যা করেছেন কীভাবে ছোটবেলার সম্পর্কগুলো আমাদের ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সমীক্ষাটি আরও তুলে ধরেছে যে বাবা-মায়েদের তাঁদের সন্তানদের কথা শোনাও জরুরি। বিশেষ করে যদি তাঁরা পক্ষপাতিত্ব করে বসেন। কারণ যদি কোনও শিশু এটা লক্ষ্য করে যে তাদের সঙ্গে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে, তাহলে ওই শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে। এ ক্ষেত্রে বাবা মায়েদের উচিত ওই শিশুর কথা আরও বোঝার চেষ্টা করা, তার পাশে থাকা।
আরও পড়ুন: (Republic Day 2025 Wishes: প্রজাতন্ত্র দিবসে আজই শুভেচ্ছা জানান প্রিয়জনদের, কী লিখবেন জেনে নিন)
প্রসঙ্গত, বাবা-মায়েরা প্রায়শই তাঁদের প্রত্যেক সন্তানের সঙ্গে একই আচরণ করার চেষ্টা করেন, তবে প্রতিটি শিশু আলাদা এবং তাঁদের নিজস্ব এনার্জি রয়েছে। তাই প্রত্যেক সন্তানের সঙ্গে একই আচরণ করার পরিবর্তে, বাবা-মায়ের উচিত প্রতিটি সন্তানের ব্যক্তিত্ব, আগ্রহ এবং আবেগের প্রতি মনোযোগ দেওয়া। এইভাবে, তাঁরা শিশুর মানসিক পরিস্থিতির খেয়াল রাখতে পারবেন।