সারা দেশে নকল ওষুধের সমস্যা ক্রমশ বাড়ছে। গত এক বছরে গুণমান পরীক্ষায় প্রায় ১ হাজারটি ওষুধ ফেল করেছে। এর মধ্যে কলকাতার সেন্ট্রাল ড্রাগ ল্যাবের পরীক্ষায় ৩১২টি ওষুধের নমুনা মানহীন বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই পরিস্থিতির জন্য মানুষের সামগ্রিক স্বাস্থ্য নিয়ে দেখা দিচ্ছে সংকট। কিন্তু কীভাবে চিনবেন, কোন ওষুধটি আসল এবং কোনটি নকল?
এ বিষয়ে কয়েকটি নির্দেশিকা দিলেন, কলকাতার ফর্টিসের ইন্টারনাল মেডিসিন স্পেশালিস্ট, ডক্টর নারায়ণ ব্যানার্জী।
নকল ওষুধ চেনার উপায়
নকল ওষুধ সনাক্ত করতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে মনোযোগ দিন।
- প্যাকেজিং পরীক্ষা করুন: মূল ওষুধের প্যাকেজিং সাধারণত উচ্চমানের হয়। যদি প্যাকেটের রঙ, ফন্ট, বা লোগো অস্পষ্ট বা ভুল মনে হয়, তবে এটি নকল হতে পারে।
- মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ: ওষুধের মেয়াদ উত্তীর্ণ তারিখ এবং ব্যাচ নম্বর স্পষ্টভাবে মুদ্রিত থাকে। যদি এটি অস্পষ্ট বা অনুপস্থিত হয় তবে সতর্ক হোন।
- মূল্যের পার্থক্য: মূল ওষুধের তুলনায় যদি কোনো ওষুধের দাম অত্যন্ত কম হয়, তবে এটি নকল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- ওষুধের রং ও আকার: ওষুধের রং, আকার বা গন্ধে কোনো অস্বাভাবিকতা থাকলে, তা নকল হতে পারে। ওষুধ কেনার পর দেখুন, সেই ওষুধ সহজে ভেঙে যাচ্ছে কিনা অথবা সেই ওষুধের গায়ে ব্লিস্টার তৈরি হচ্ছে কিনা। ম্যানুফ্যাকচারিং এবং ওষুধ স্টোরেজের সময় সঠিক তাপমাত্রায় না রাখলে অনেক সময় ওষুধ ভেঙে যেতে পারে। ক্যাপসুলের ক্ষেত্রে দেখা যেতে পারে সেটি অসমতল কিনা।
- কিউ আর কোড স্ক্যান: ওষুধের পিছনের নথি থেকে কিউ আর কোড অবশ্যই স্ক্যান করে সেই ওষুধটির কম্পোজিশন ও কম্পানির তথ্য জেনে নিন। ওষুধটির ব্যাচ নাম্বার ও যথাযথ লাইসেন্স আছে কিনা তা চেক করে নিন।
আরও পড়ুন - Aloe Vera Side Effects: হাজারো গুণে ভরপুর অ্যালোভেরা, তবুও থাকে এই ৬ ক্ষতির সম্ভাবনা
যদি ব্র্যান্ডের ওষুধে ভেজাল থাকে তাহলে কী করবেন?
ডাক্তার বলছেন, সুগার হোক বা প্রেশার, যে ওষুধ নিয়মিত খান তা নকল কিনা তা বারবার স্যাম্পলিং ছাড়া বোঝার আর কোনও উপায় নেই। জীবনযাত্রার মান অপরিবর্তিত রেখে নির্দিষ্ট ওষুধটি খেয়ে প্রতিদিন সকালে প্রেশার চেক করতে পারেন। কারণ, একটি ওষুধ আপনার শরীরে কাজ দেবে কিনা তা অনেকগুলি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। কাজেই এভাবে প্রত্যক্ষ পর্যবেক্ষণ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।
যদিও প্রকৃত অর্থে ওষুধ ভেজাল কিনা তা পরীক্ষা করা একমাত্র ল্যাব টেস্টের সাহায্যেই সম্ভব। তাই দেশে ল্যাব সংখ্যা বাড়ানো প্রয়োজন। আমাদের দেশের নিম্নবিত্ত মানুষরা ওষুধের ক্ষেত্রে পুরোপুরি ভাবেই সরকারের উপর নির্ভরশীল। কাজেই সরকারকে এ বিষয়ে আরো বেশি তৎপর হয়ে মানুষের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হবে। বললেন, ডক্টর নারায়ণ ব্যানার্জী।
আরও পড়ুন - Dental Health: দাঁত হলুদ হয়ে যাচ্ছে? হাসার কনফিডেন্স নেই? এই ১ ট্রিকেই মুক্তো ঝরবে হাসিতে
পাঠকদের প্রতি: প্রতিবেদনটি চিকিৎসকের মতামতের ভিত্তিতে লেখা হয়েছে। এটি সমস্যাটি সম্পর্কে সাধারণ ধারণার উপর আলোকপাত করা মাত্র। ব্যক্তিবিশেষে প্রতিটি সমস্যার চিকিৎসা এবং নিরাময়ের পদ্ধতি পৃথক। তাই যে কোনও সমস্যায় শুধুমাত্র এই প্রতিবেদনের কথায় ভরসা না রেখে, ব্যক্তিগতভাবে চিকিৎসকের বা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।