রবীন্দ্রনাথ তাঁর 'প্রবাসী' কবিতায় মধুবন্দনা করেছেন। মধু পছন্দ করেন না এমন মানুষ বিরল। তবে আপনি যে মধু খাচ্ছেন সেটি খাঁটি নাকি ভেজাল বুঝবেন কীকরে?
পুষ্টিগুণ ও শারীরিক উপকারীতার বিষয় বিবেচনা করলে খাঁটি ও প্রাকৃতিক মধুর কোনও বিকল্প নেই। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতায় করেছেন মধুর গুণগান। অথচ বাজারে যে মধুগুলি পাওয়া যায় সেগুলির বিশুদ্ধতা নিয়ে রয়েছে পশ্ন।
প্রাচীনকাল থেকে মানুষ মধু ব্যবহার করে আসছে নানাভাবে। এমনকী ঋকবেদেও রয়েছে এর উল্লেখ। গোটা রাজ্যে প্রায় ১ লক্ষ মধুচাষি বাস করেন। জীবনের নানা ঝুঁকি নিয়ে তাঁরা করেন মৌচাক থেকে মধু সংগ্রহ। এক্ষেত্রে সুনাম রয়েছে সুন্দরবনের মধুর। শুধু রাজ্য নয় এর খ্যাতি বিশ্বজুড়েই। সুন্দরবনের মধু বিশ্বের দরবারে গর্বিত করছে আমাদের দেশকে। কিন্তু দিনে দিনে বাড়ছে গুণগত মানের আশঙ্কা। কেন?
সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রন্টমেন্ট এর গবেষকরা জানিয়েছিলেন, 'এদেশে বিক্রি হওয়া বেশ কিছু নামি ব্র্যান্ডের মধুতে চিনির সিরাপ বা বিভিন্ন কৃত্রিম সুইটনার দেওয়া হয় ভেজাল হিসেবে। সম্প্রতি এক ইংরেজি পত্রিকাও নকল মধু থেকে শারীরিক ক্ষতির কথা জানিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
তাহলে প্রশ্ন জাগে বাজারের সব মধুই কি ভেজাল? না! একদমই না, খারাপের মধ্যে ভালো থাকবেই। তবে তা খুঁজে নিতে হবে আপনার তীক্ষ্ণ নজর দিয়ে। ভেজালকারীরা অতিরিক্ত লাভের আশায় ভালো মধুর সঙ্গে চিনি, গুড় নানা কেমিক্যাল মিশিয়ে বাজারে চালিয়ে দেয়। বোকা বোনে যায় ক্রেতারা। তবে আপনি যদি হন এর বৈশিষ্ট্য সমন্ধে ওয়াকিবহাল, তাহলে প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও কম থাকে। কীভাবে চিনে নেবেন খাঁটি মধু?
এক গ্লাস জলে মধু মিশিয়ে দেখবেন তা মিশছে কিনা, মধু যদি মিশে যায় তাহলে তা নকল। উল্লেখ্য, এক্ষেত্রে আপনি ভিনিগারও ব্যবহার করতে পারেন।
সুন্দরবন-সহ পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য অঞ্চলের মধু খুবই নাম করা। এ বিষয়ে 'দ্য বেঙ্গল স্টোর' তার আভিজাত্য টিকিয়ে রেখেছে। এখানে পাওয়া যায় সুন্দরবন থেকে সরাসরি আনা ১০০% খাঁটি মধু। যা গন্ধে, বর্ণে সেরা।
সুন্দরবন রাজ্যে ১৬ হাজার মেট্রিকটনের ওপর মধু উৎপন্ন হয়। ধীরে ধীরে মধু নিয়ে গবেষণার পরিসরও বাড়ছে। এই বিষয়ে যথাযোগ্য সাহায্য করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সরকারি পদক্ষেপের মধ্যে সুন্দরবন মধু হাব রীতিমত আলোড়নও ফেলেছে। তবে, সরকারি নজরদারিতে ভেজাল মধু নিয়ে সমস্যা সমাধানে আশা রাখছেন মৌলিরা।