অকালে চুল পড়তে আরম্ভ করলে তা পুরুষ-মহিলা উভয়ের কাছেই এক ভীষন বিড়ম্বনার ব্যাপার। নানা ধরনের ওষুধ, শ্যাম্পু ও টোটকা ব্যবহার করেও অনেক সময় সমস্যার সমাধানে সম্ভব হয় না। বর্ষাকালে আবার সমস্যা বাড়তে থাকে। কারণ বর্ষার আর্দ্রতায় এমনিতেই চুলের গোড়া নরম ও আলগা হয়ে যায়।
তার উপর যদি সমস্যা থাকে আপনার বাড়িতেই,অর্থাৎ বাড়ির কলের জল ‘হার্ড’ বা খনিজ সমৃদ্ধ হয়, তা হলে তো চুল পড়বেই। কারণ ‘হার্ড ওয়াটার’-এ পজিটিভ চার্জ যুক্ত ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। আমাদের চুল আবার নেগেটিভলি চার্জড। স্বাভাবিকভাবেই পজ়িটিভ আয়নের আকর্ষণে নেগেটিভ চুলের গোড়া আলগা হয়ে যায়। হাত দিলেই বুঝবেন যে চুলের আগের নরম-মসৃণ ভাব উধাও। জট পড়ছে বেশি, তা ছাড়াতে গেলে প্রচুর চুল উঠে যাচ্ছে।
এই পরিস্থিতি থেকে বেরোতে গেলে আপনার উপায় দুটো। এক, ওয়াটার সফটনার লাগানোর ব্যবস্থা করুন বাড়িতে। দাম একটু বেশি পড়বে, কিন্তু এই যন্ত্র আপনার ব্যবহার করা জল থেকে মিনারেল বাদ দিতে সক্ষম। অত অর্থব্যয় করতে অসুবিধা হলে শাওয়ার ফিল্টার লাগাতে পারেন। শাওয়ারের মুখে লাগিয়ে নিলে তা সব মিনারেল ধরে রাখবে। তবে নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, না হলে মিনারেলের সেডিমেন্ট পড়ে যাবে ফিল্টারের মুখে।
জলে থাকা ক্লোরিনও চুলের পক্ষে বেশ ক্ষতিকারক। ক্লোরিন এমনিতে জল জীবানুমুক্ত করে। কিন্তু অতিরিক্ত ক্লোরিন চুলের গোড়া আলগা করে দিতে পারে। তাই যাঁরা পুলে সাঁতার কাটেন, তাঁরা অবশ্যই শাওয়ার ক্যাপ পরে তবেই সাঁতার কাটুন এবং পুল থেকে উঠে চুল ভালো করে ধুয়ে নিন। জলে অতিরিক্ত নুন থাকলেও সেটা চুলের জন্য উপযোগী নয়। সমুদ্রে স্নানের সময় এই কথাটি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
কোনও ভাবেই যদি এই সমস্যার সমাধান করতে না পারেন, তা হলে কেনা জলে স্নান করার কথা ভেবে দেখতে পারেন। সেই সঙ্গে জোর দিন পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার উপরেও। আমলকী, বিট, ডিম, ফ্ল্যাক্সসিড ইত্যাদি খান।