বাংলা নিউজ > টুকিটাকি > Suniti Kumar Pathak: তন্ত্রের এনসাইক্লোপিডিয়া, ছিলেন আর্মিতেও! সুনীতি-প্রয়াণে স্মৃতিচারণ বিশ্বভারতীর
পরবর্তী খবর

Suniti Kumar Pathak: তন্ত্রের এনসাইক্লোপিডিয়া, ছিলেন আর্মিতেও! সুনীতি-প্রয়াণে স্মৃতিচারণ বিশ্বভারতীর

সুনীতিকুমার পাঠক

HT Bangla Exclusive Suniti Kumar Pathak: প্রথমবারেই নির্ভুল তথ্য দেওয়ার আশ্চর্য ক্ষমতা ছিল তাঁর। বয়স স্মৃতিশক্তিকে দুর্বল করতে পারেনি। শেষ বয়সেও গবেষণা ছিল সঙ্গী। বঙ্গদেশ হারাল তাঁকে…

‘ডিকশনারি খুব ছোট শব্দ, বলা উচিত এনসাইক্লোপিডিয়া’। অবনপল্লীর বাড়িতে বুধবার রাত দশটায় প্রয়াত হয়েছেন বাংলার অন্য়তম শ্রেষ্ঠ বৌদ্ধ পণ্ডিত ও গবেষক সুনীতিকুমার পাঠক। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ১০১ বছর। কিন্তু শেষ জীবনেও গবেষণার কাজে ব্রতী ছিলেন। বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়ে ফিরছিলেন বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্দো-টিবেটান স্টাডিজের অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা। তখনই HT বাংলাকে ফোনে ওই কথা বললেন অধ্যাপিকা প্রকৃতি চক্রবর্তী। জানালেন, ‘বৌদ্ধধর্ম ও তিব্বতচর্চাবিষয়ক সবই ছিল ওঁর নখদর্পণে। যেকোনও বিষয় জানতে গেলেই তিনি সাহায্য করতেন। তাই ডিকশনারি শব্দটি দিয়ে ঠিক ব্য়াখ্যা করা যাবে না।’

তন্ত্রসাহিত্যে পণ্ডিত

বাঙালিদের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম ও তন্ত্র নিয়ে আগ্রহ বহুযুগ ধরেই। কিন্তু এই বিষয়ে সঠিক পড়াশোনার চেয়ে ভ্রান্ত ধারণারই চল বেশি। সিনেমা, সিরিজের দৌলতে ও সংকীর্ণ কারণে তন্ত্রচর্চার ফলে ভীষণভাবে বাজারিকরণ হয়েছে এই গূঢ় শাস্ত্রের।তন্ত্রের এই ভ্রান্ত তথা জনপ্রিয় ইমেজের বিপরীতে দাঁড়িয়ে যাঁরা সত্যি অর্থে তন্ত্রশাস্ত্র বিষয়ে জ্ঞানী তাঁদের একজন সুনীতিকুমার পাঠক। ইন্দো-টিবেটান স্টাডিজের আরেক অধ্যাপক শেডুপ তেনজিন জানাচ্ছেন, ‘তন্ত্রসাহিত্যে অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল পাঠক স্যরের সঙ্গে।’ বিভাগীয় প্রধান সঞ্জীবকুমার দাসের মতে, ‘বৌদ্ধতন্ত্রে অসামান্য় দখল ছিল সুনীতিদার।’

পড়ুয়াদের পাশাপাশি ঋণী শিক্ষকরাও

১৯৫৪ সাল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন সুনীতিকুমার পাঠক। সি আর লামার সঙ্গে যৌথভাবে গড়ে তোলেন ইন্দো-টিবেটান স্টাডিজ বিভাগ। বিভাগের প্রতি শেষ জীবনেও ভালোবাসা ছিল অটুট। যেমন এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘বিশ্বভারতীই আমার সব।’ অধ্যাপিকা প্রকৃতি চক্রবর্তীর কথায়, ‘ওঁর মাথাকে আমরা কম্পিউটার বলতাম। সুনীতিদার একটা বড় গুণ, ওঁর ফিল্ডের যে বিষয়েই জিজ্ঞেস করা হোক না কেন, প্রথমবারেই নির্ভুল উত্তর দিতেন। আধুনিক, মধ্য বা প্রাচীন যেকোনও সময়ের বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বা ইন্দো-টিবেটান স্টাডিজে অগাধ জ্ঞান। শেষ দিকে বিশ্বভারতীতে সেমিনার হলে ওঁকে লেকচার দিতে আমন্ত্রণ করা হলে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি আমরাও উপকৃত হয়েছি।’

আরও পড়ুন - Suniti Kumar Pathak: প্রয়াত সুনীতিকুমার পাঠক, নক্ষত্রপতন বাঙালির বৌদ্ধচর্চায়! পিতৃহারা বিশ্বভারতীর টিবেটান স্টাডিজ

হিমালয়ের দুর্গম অঞ্চল থেকে পুঁথি সংগ্রহ

অধ্যাপিকা প্রকৃতি চক্রবর্তী জানাচ্ছেন, ‘সুনীতিদার অফুরান জ্ঞানের একটা বড় কারণ ছিল তাঁর সেলফ স্টাডি। নতুন কিছু শেখার জন্য একদম শিকড় পর্যন্ত চলে যেতেন। যে কারণে হিমালয়ের দুর্গম অঞ্চলেও তিনি গিয়েছেন। সংগ্রহ করেছেন বিভিন্ন দুষ্প্রাপ্য পুঁথিও। তিব্বতী ভাষা শেখার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংস্কৃতিকে জানার জন্য কালিম্পংয়ে স্থানীয় দোকানেও কাজ করেছেন সুনীতিদা।’ 

ভাষা শিখতে দোকানে কেনাবেচা

১৯৯৯ সাল। তখনও শেডুপ তেনজিন বিশ্বভারতীর ইন্দো-টিবেটান স্টাডিজের অধ্যাপক হননি। তিব্বতি ম্য়াগাজিন সম্পর্কে গবেষণার কাজে কালিম্পং থেকে কলকাতা এসেছিলেন। এখানেই এশিয়াটিক সোসাইটির লাইব্রেরির হলে দেখা হল সুনীতিবাবুর সঙ্গে। প্রথম সাক্ষাতেই শেডুপ মুগ্ধ হন সাবলীল তিব্বতি ভাষা শুনে। অধ্যাপক শেনডুপ তেনজিনের কথায়, ‘আমি সেই প্রথম এমন একজন ভারতীয় পণ্ডিতকে দেখলাম যিনি গড়গড়িয়ে তিব্বতি ভাষা বলে যাচ্ছেন। কালিম্পং দীর্ঘদিন ধরেই ভারত আর তিব্বতের মধ্যে একটি যোগসূত্র। পাঠক স্যর পরে আমাকে বলেছিলেন রাশিয়ান টিবেটোলজিস্ট জর্জ রোয়িকের থেকে তিনি তিব্বতি ভাষা শেখেন। জর্জ থাকতেন কালিম্পংয়ে। ওদিকে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। তিনিও উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ইন্দো-টিবেটান স্টাডিজের ছাত্রদের কালিম্পং পাঠান তিব্বতি শেখার জন্য। কালিম্পংয়ের বিভিন্ন মারোয়ারি দোকানে কেনাবেচা করতে করতে পাঠক স্যর ভাষাটি রপ্ত করেন।’

বিভাগের বর্তমান অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের সঙ্গে
বিভাগের বর্তমান অধ্যাপক-অধ্যাপিকাদের সঙ্গে (ছবিঋণ - প্রকৃতি চক্রবর্তী)

ভীষণ নম্র ও স্নেহপরায়ণ

ব্যক্তিগত জীবনে ভীষণ নম্র মানুষ ছিলেন সুনীতিকুমার। ফোনে কথা বলতে বলতে তাই শেডুপ তেনজিন বারবার বলে ফেলছিলেন, ‘আমাকে ভীষণ স্নেহ করতেন। ভীষণ নম্র ছিলেন।’ ভারতে বর্তমানে যে দুজন শ্রেষ্ঠ টিবেটোলজিস্ট রয়েছেন, তাদের মধ্যে একজন সুনীতিকুমার পাঠক, অন্যজন লোকেশ চন্দ্র।অধ্যাপক শেডুপের কথায়, ‘শারীরিক কারণে বেশি চলাফেরা করতে পারতেন না। কিন্তু কোনও দরকার হলেই আমরা চলে যেতাম তাঁর কাছে। সবসময় সাহায্য পেতাম। শেষ জীবনেও পাঠক স্যর যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন গবেষণার কাজে। তাঁর প্রয়াণে অনেকটাই ক্ষতি হল ভারত-তিব্বত চর্চার।’

পুঁথির সংরক্ষণ হবে কীভাবে

দীর্ঘদিন সুনীতিকুমার পাঠক সেন্টার অব হাইয়ার টিবেটান স্টাডিজের বোর্ড বোর্ড মেম্বার ছিলেন। নিয়মিত যাতায়াতও ছিল। অধ্যাপক সঞ্জীবকুমার দাসের সঙ্গে সুনীতিবাবুর আলাপ সেই সূত্রেই। সঞ্জীববাবু তখন সেখানে পাঠরত। ১৯৯০-৯১ সাল থেকে দীর্ঘ ৩৪ বছর তাঁকে দেখেছেন ইন্দো-টিবেটান স্টাডিজের বর্তমান বিভাগীয় প্রধান। কথায় কথায় তিনিও জানান, ‘হিমালয় ছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানাসময় দুষ্প্রাপ্য পুঁথি সংগ্রহ করে এনেছিলেন তিনি।’ সেই পুঁথিগুলির কী হবে? এই প্রসঙ্গে সঞ্জীববাবুর বক্তব্য, ‘তাঁর পুত্র রাজি থাকলে সেগুলি আমরা এনে লিপিকাকে হস্তান্তরিত করব সংরক্ষণের জন্য। এর আগে যখন রজতকান্ত রায় বিশ্বভারতীর অধ্যক্ষ ছিলেন, তখন বিভাগের সব পুঁথি ওভাবেই সংরক্ষিত হয়েছে।’

সেনাবাহিনীতেও ছিলেন সুনীতি

২০০৭ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রতিভা পাতিল সুনীতিকুমার পাঠককে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে ভূষিত করেন। ২০১৮ সালে বিশ্বভারতী দেশিকোত্তমে সম্মানিত করে। এছাড়াও, এশিয়াটিক সোসাইটি, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন সুত্তবিশারদ স্বর্ণপদক, পুরাণরত্ন স্বর্ণপদক সম্মাননা। গবেষণার পাশাপাশি নিজের লব্ধ জ্ঞানকে দেশসেবার কাজেও লাগিয়েছিলেন সুনীতিকুমার পাঠক। ১৯৬১ সালে ভারত সরকারের নির্দেশে সেনাবাহিনীতে অনুবাদক হিসেবে যোগ দেন। তিব্বতী ভাষার বিভিন্ন তথ্য সেনাবাহিনীর জন্য ইংরেজিতে অনুবাদ করার কাজে নিযুক্ত হন। দুশোর বেশি প্রবন্ধ ছাড়াও বহু গভীর দৃষ্টিসম্পন্ন নিবন্ধের রচয়িতা তিনি। বাংলা, ইংরেজি, হিন্দি, সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, তিব্বতী, চিনা, মঙ্গোলিয়া এই নটি ভাষাতেই সাবলীল ছিলেন। প্রতি ভাষাতেই নিজের লেখকসত্ত্বার পরিচয় রেখে গিয়েছেন। তাঁর প্রয়াণে একজন বৌদ্ধ পণ্ডিত ছাড়াও পরিশ্রমী গবেষককে হারাল বঙ্গদেশ।

Latest News

লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে, বিভীষিকায় ভারাক্রান্ত বাতাস ‘কী নির্মম পেশাদার এই ব্যান্ডটা…’! ফসিলসের চন্দ্রামৌলির মৃত্যুতে লিখলেন ব্লগার বুমরাহ টেস্ট অধিনায়ক হলে বাড়বেই ওয়ার্কলোড! তাই পন্তকে নিয়ে নতুন ভাবনায় বোর্ড… ৭ দিনে ৩ বার, এবার জোড়া বাঘের আতঙ্ক ঘুম উড়ল মৈপীঠের, রাতে জঙ্গল ঘেরা হল জালে 'তালিবানি শাসনকে বৈধতা দেবেন না', মুসলিম বিশ্বের কাছে আবেদন মালালার ‘৬-৭ মাস খেলার সুযোগ পাইনি’! টানা দুরন্ত পারফরমেন্সের পর নীরবতা ভাঙলেন করুণ Bangla entertainment news live January 13, 2025 : ‘কী নির্মম পেশাদার এই ব্যান্ডটা…’! ফসিলসের প্রাক্তন চন্দ্রামৌলির মৃত্যু, স্টেজে রূপম গাইছে ‘একলা ঘর’, কী লিখলেন ব্লগার ‘ট্রু লাভ’র সঙ্গে ছবি দিল বনি! দুবাইতে কে সাহায্য করে শ্রীদেবীর মরদেহ ভারত আনতে চট্টগ্রামে ৩ দিন ধরে নিখোঁজ হিন্দু ব্যবসায়ী, আতঙ্কিত পরিবার, তদন্তে পুলিশ জেলে বসে একবছরে আয় ২২৪১০ কোটি, নির্মলাকে চিঠি সুকেশের, আয়কর বাবদ দিলে চাইলেন...

IPL 2025 News in Bangla

পিছিয়ে যাচ্ছে IPL, ইডেনের ভাগ্যে কি কোপ পড়বে? প্রথম ম্যাচ ও ফাইনাল কোথায় হবে? IPLর থেকে ঢাকা প্রিমিয়র লিগ কঠিন! অদ্ভূত কারণ দেখালেন পারভেজ রসুল!শুনে হাসি পাবে MCGতে হারের পরই অবসরের সিদ্ধান্ত নেন রোহিত! তবে মত বদলানোয় অখুশি ছিলেন গম্ভীর? ‘মাথায় হাত থাকলে সুযোগের পর সুযোগ, আর না থাকলে… ’! BCCI আর গম্ভীরকে খোঁচা মনোজের অশ্বিনের পথে হেঁটে অবসরে জাদেজাও? রহস্যজনক পোস্টে বাড়ল জল্পনা! দেখে নিন সেই ছবি ২০২৫ IPLএ অধিনায়ক বিরাট? জল্পনা জিইয়ে রাখলেন ফ্লাওয়ার! বললেন,এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি কাউন্টি খেলে ইংল্যান্ডে টেস্টের প্রস্তুতি নেবেন বিরাট? RCB না চাইলে প্রায় অসম্ভব ১১ জানুয়ারি আগরকরদের বৈঠক! বাদ যেতে পারেন জাদেজা! শামিকে দিতে হবে পরীক্ষা পিছিয়ে গেল PSL 2025-র ড্রাফটের তারিখ! লড়াইয়ে IPL 2025-এর অবিক্রিত ক্রিকেটাররা স্টার্ক-কামিন্সদের বিরুদ্ধে ৩৯১ রান! যশস্বীর প্রশংসায় অজি ওপেনার! কুর্নিশ ভনেরও…

Copyright © 2024 HT Digital Streams Limited. All RightsReserved.