Sanjida Khatun Demise: শান্তিনিকেতনের আদর্শকে বহন করেছেন আজীবন। তখনও স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরি হয়নি। সাম্প্রদায়িকতায় জর্জরিত বাংলাদেশে বারবার আঁকড়ে ধরেছেন রবীন্দ্রনাথের মূল্যবোধ। আর সেই মূল্যবোধের জিয়নকাঠিই যেন ছুঁইয়ে দিয়েছেন গোটা বাংলার সংস্কৃতি ক্ষেত্রে। শুধু ওপার বাংলা নয়, এপার বাংলার সাংস্কৃতিক জগতেও এক উজ্জ্বল নাম সনজীদা খাতুন। তাঁর প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করলেন তাঁরই এককালের ছাত্রী তথা বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।
‘বাংলাদেশের রবীন্দ্রচর্চায় অপূরণীয় ক্ষতি’
সুদূর আমেরিকা থেকে ফোনে হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে গায়িকা জানালেন, ‘বাংলাদেশের রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে এক অপূরণীয় ক্ষতি হল। মাথার উপর এক মহীরুহের মতো ছিলেন। কঠিন সাংস্কৃতিক সংকটেও আগলেছেন বাংলাদেশকে। আমরা সকলে গানের সময় ওঁর পিছনে দাঁড়াতাম। মাথার উপর আজ ছায়াটা যেন সরে গেল।’
আরও পড়ুন - ‘স্মরণীয় প্রতিভা’ সঙ্গীতশিল্পী সনজীদা খাতুনের প্রয়াণে শোকাহত পবিত্র সরকার
‘তাঁর ছায়ানটেই সঙ্গীতশিক্ষা’
বাবা ছিলেন বাংলাদেশের শিক্ষাজগতের বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব জাতীয় অধ্যাপক কাজি মোতাহার হোসেন। ছোট থেকেই সাংস্কৃতিক পরিবেশে মানুষ ও শান্তিনিকেতনে স্নাতকস্তরের পড়াশোনা সনজীদার। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক জগতে বিপ্লব ঘটিয়েছিল তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘ছায়ানট’। রেজওয়ানার কথায়, ‘আমার সঙ্গীতশিক্ষা ছায়ানটেই শুরু। তখনও স্বাধীন বাংলাদেশ হয়নি। ১৯৬৭ সাল, পূর্ব পাকিস্তান। ক্লাস ফাইভ-সিক্সে ভর্তি হলাম ছায়ানটে। পরে শান্তিনিকেতন থেকে পড়াশোনা সেরে যখন ফিরলাম, তখন উনি জিজ্ঞেস করলেন, এবার কী করবি ভেবেছিস? আমি বললাম, এখনও তো ভাবিনি। তখন বললেন, ভাববার কী আছে। ছায়ানটে জয়েন কর। তখন ১৯৮১ সাল। ১৯৮১ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত ১০ বছর ছায়ানটেই শিক্ষকতা করেছি।’
‘তাঁর আশীর্বাদেই শুরু আমার প্রতিষ্ঠান’
সাম্প্রদায়িকতার বিদ্বেষ বিষের বিপ্রতীপে দাঁড়াতে সনজীদা বারবার সংস্কৃতিকেই অস্ত্র করে নিয়েছিলেন। রেজওয়ানার কথায়, ‘১৯৯১ সালে নিজের প্রতিষ্ঠান শুরু করার কথা যখন জানালাম, উনি বললেন, হ্যাঁ কর। একা ছায়ানট যথেষ্ট নয়। বাংলাদেশে এমন আরও প্রতিষ্ঠান দরকার রয়েছে। সেই আশীর্বাদ নিয়েই শুরু হল আমার সুরের ধারা’
আরও পড়ুন - ‘রবীন্দ্রনাথের আদর্শ ভালো বুঝি, আশা করি কোনও সমস্যা হবে না!’ HT বাংলায় Exclusive বিশ্বভারতীর নতুন উপাচার্য
‘ভীষণ স্নেহ করতেন’
রেজওয়ানার কথায়, ‘পিএইচডি শেষ করেছি শুনে ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। ছায়ানট ছেড়ে নিজের প্রতিষ্ঠান তৈরি করলেও বারবার ডাক পেয়েছি ওঁর। বহু অনুষ্ঠানে ডাকতেন, আমার উপর আস্থা রাখতেন ভীষণ। অন্যদের বলতেন, বন্যাকে ডাকো, বন্যা ভালো বলতে পারবে। তার এই স্নেহ, আস্থা ভোলার নয়। বড় শূন্যস্থান তৈরি হল।’