ভারত তো বটেই, কলকাতায় hMPV আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। আক্রান্তের সংখ্যাও বেড়েছে (অনেকেই সেরে উঠেছেন)। সেটা আরও বাড়তেও পারে। কিন্তু তাতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও ব্যাপার নেই বলে স্পষ্টভাবে জানালেন মহামারী বিশেষজ্ঞ পর্ণালী ধর চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, এখন যদি টেস্ট করা হয়, তাহলে অনেকেরই hMPV রিপোর্ট পজিটিভ আসতে পারে। আর সেটা একেবারেই স্বাভাবিক। কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না। হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস সাধারণ শ্বাসনালীর সংক্রমণকারী ভাইরাস। যা আড়াই দশক ধরে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়েছে। আমেরিকায় তো প্রতি বছর ২০,০০০ শিশু গুরুতর hMPV-তে আক্রান্ত হয়। তাঁর কথায়, ‘এখনও পর্যন্ত যা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, সেটার ভিত্তিতেই বলা হচ্ছে যে আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। এটা কোনও নতুন ভাইরাস নয়।’
'hMPV রিপোর্ট পজিটিভ আসতে পারে, আতঙ্কের ব্যাপার নেই'
বিষয়টি আরও ব্যাখ্যা করে মহামারী বিশেষজ্ঞ বলেছেন, 'hMPV প্যানেলে যদি আমরা আরটি-পিসিআর টেস্ট করি, তাহলে দেখা যাবে যে অনেকেরই রিপোর্ট পজিটিভ আসছে। রিপোর্ট পজিটিভ এলেই যদি বলা হয় যে এই hMPV ছড়িয়ে পড়েছে, সকলের মধ্যে ছড়িয়ে যাবে, আতঙ্কিত হন, (তাহলে সেটা ঠিক হবে না)। এরকম কোনও ব্যাপার নেই। hMPV অত্যন্ত পরিচিত ভাইরাস একটা।'
'প্রতি তিন বছরে hMPV আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়'
তিনি আরও বলেছেন, ‘জন্মের ১২ মাসের মধ্যেই অনেক বাচ্চা hMPV-তে আক্রান্ত হয়। সেই সংখ্যাটা ৮০ শতাংশের মতো। তাদের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে যায়। আর পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা প্রায় সকলেই hMPV-র শিকার হয়ে যাই। এটা তো সাধারণ শ্বাসনালীর সংক্রমণকারী ভাইরাস। তিন বছরের মধ্যে একবার হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়।’
মহামারী বিশেষজ্ঞের মতে, এখন hMPV আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। তাতেও আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। তিনি বলেছেন, ‘এখন যদি একটা গবেষণা করা হয়। ধরুন ভারতে ২০টি শহর নেওয়া হল। ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভরতি থাকা ছোট এবং ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে থাকা প্রবীণদের টেস্ট করা হল (ব্রঙ্কাইটিস বা সিওপিডির মতো থাকলে)। অনেকের ক্ষেত্রে পজিটিভ আসবে। বা অ্য়ান্টিবডি টেস্ট করা হলে সেটা পাওয়া যাবে। তাই আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’
সতর্কতাও অবলম্বন করতে হবে, পরামর্শ বিশেষজ্ঞের
তবে সাধারণ ভাইরাস বলেই যে সতর্কতা অবলম্বন করার কোনও দরকার নেই, ব্যাপারটা সেরকম নয় বলেও স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন মহামারী বিশেষজ্ঞ। তাঁর মতে, ‘অ্যান্টবডি আছে বলেই সতর্ক হব না, তা নয়। সতর্কতা অবশ্যই অবলম্বন করতে হবে। সাধারণ জ্বর বা ইনফ্লুয়েঞ্জায় যেমন সতর্কতা লাগে, সেই সতর্কতা নিতে হবে। হাঁচি-কাশি হলে একটু দূরত্ব বজায় রেখে চলুন।’