সমীক্ষা অনুসারে প্রতিদিন হার্ট অ্যাটাকের কারণে ১০-১২ জন মানুষ মারা যান ভারতবর্ষে। এর মধ্যে বেশুরভাগ ক্ষেত্রেই যেটা ঘটে তা হল সঠিক সময়ে রোগ নির্নয় না হওয়া ও গাফিলতি। হার্টের ধমনীতে সমস্যায় ভোগেন অধিকাংশ। করোনারি বাইপাস সার্জারির মাধ্যমে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। তবে, বাইপাস সার্জারির নাম শুনলেই ভয় পান অধিকাংশ সাধারণ মানুষ। কিন্তু প্রয়োজন পড়লে সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য বাইপাস করাতেই হবে বলে জানালেন রুবি হাসপাতালের কার্ডিয়াক সার্জেন ডা. শঙ্খদ্বীপ প্রামাণিক।
বাইপাস সার্জারি কী ও কেন প্রয়োজন পড়ে?
হার্টের বেশ কিছু ধমনী অনেকসময় পুরোপুরি বা আংশিক ব্লক হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে ওই ব্লক সরিয়ে ধমনী থেকে রক্ত অন্য পথে হার্টে চালিত করা হয়। আর্টারিগুলো হার্টের পেশিতে রক্ত পৌঁছে দিয়ে তাকে সচল রাখতে সাহায্য করে। আর এই আর্টারিতেই অনেকের দুটো বা তিনটে ব্লক থাকে। যার ফলে রক্তপ্রবাহ ব্যহত হয়। বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা।
ডাক্তার শঙ্খদ্বীপ প্রামাণিক জানালেন, ‘হার্টে ব্লকেজ থাকলে বুকে ব্যথা বা অল্প পরিশ্রম করলেই হাঁপিয়ে ওঠার মত উপসর্গ দেখা যায়। এসব ক্ষেত্রে অনেকেরই বাইপাস সার্জারি করার প্রয়োজন পড়ে। সঠিক সময়ে সার্জারি করা হলে পুরোপুরি সেরে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। বাইপাসের পর রোগী পূর্ববর্তী সমস্ত লক্ষণ থেকেই মুক্তি পান। ১০ থেকে ১৫ বছর কোনও সমস্যা সাধারণত দেখা যায় না। তবে হ্যাঁ, কিছু সাবধানতা মেনে চলতেই হবে।’
বাইপাস সার্জারির পর একজন রোগীকে কী কী বিষয় মাথায় রাখতে হবে?
বাইপাসের অপারেশনের পর হার্টের সমস্যা থেকে সেরে ওঠার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে রোগীকে। এক কথায় বলতে গেলে পরিবর্তন আনতে হবে জীবনযাত্রায়। ডাক্তার শঙ্খদ্বীপ প্রামাণিক জানালেন—
- হোলদি ডায়েট মেনে চলতে হবে। খাবারে বেশি পরিমাণে শাক-সবজি থাকতে হবে। খুব বেশি তেল-মশলা যুক্ত খাবার বা ছাকা তেলে ভাজা খাবার খাওয়া চলবে না। যাদের প্রতিদিন দুধ খাওয়ার অভ্যাস আছে তাদের ডবল টোনড বা স্কিম মিল্ক খেলে ভালো।
- অপারেশনের পরবর্তীতে সেরে ওঠার জন্য বা পরবর্তীকালেও ডাক্তারের দেওয়া ওষুধ খেতে হবে নিয়ম মেনে। সেক্ষেত্রে কোনও গাফিলতি করলে রোগীরই ক্ষতি।
- ধূমপান ও মদ্যপান বন্ধ করে দিতে হবে পুরোপুরি।
- ওজন বাড়তে দেওয়া চলবে না খুব বেশি।
- প্রতিদিন নিয়ম মেনে শরীরচর্চা, হাঁটাচলা করতে হবে।
- সবথেকে বড় সমস্যা হল দুশ্চিন্তা। সেটা সবার আগে কমাতে হবে।