ভারতবর্ষ তথা সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে যেভাবে প্রতিনিয়ত ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ছে, তাতে করে আর কিছু বছরের মধ্যে এই রোগ পরিণত হয়ে যাবে মহামারীতে। প্রথমদিকে ধরা না পড়লে কর্কট রোগ থেকে রক্ষা পাওয়া প্রায় অসম্ভব। কিন্তু কেন বাড়ছে এই রোগ? কাদের মধ্যেই বা এই রোগের প্রবণতা বাড়ছে?
কারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন ক্যানসারে?
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ৩ দশকে ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মানুষদের মধ্যে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা সবথেকে বেশি বেড়েছে। ১৯৯১ থেকে ২০০০ একুশের মধ্যে ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সীদের মধ্যে পিত্তথলির ক্যান্সারের হার ২০০ শতাংশ, জরায়ুর ক্যান্সারের হার ১৫৮ শতাংশ, কোলন ক্যান্সারের হার ১৫৩ শতাংশ, কিডনির ক্যান্সারের হার ৮৯%, অগ্নাশয় ক্যান্সারের হার ৮৩ শতাংশ।
কেন বাড়ছে ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা?
ক্যান্সার হওয়ার প্রধান কারণগুলির মধ্যে যেগুলি রয়েছে সেগুলি হল অতিরিক্ত স্থূলতা, খারাপ খাদ্যাভাস, অতিরিক্ত জাঙ্ক ফুড, চিনি, চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া, শরীর চর্চার অভাব। পুরুষদের মধ্যে প্রস্ট্রেট, ফুসফুস ক্যান্সারের প্রবণতা বেড়েছে এবং অন্যদিকে মহিলাদের মধ্যে বেড়েছে ফুসফুস, স্তন, ক্যান্সারের প্রবণতা।
কোন কোন ক্যানসার চিকিৎসা যোগ্য?
জরায়ুমুখের ক্যানসার টিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিরোধ করা যায়। এছাড়া সারভিক্যাল ক্যান্সার প্রাথমিক স্তরে যদি ধরা পড়ে যায়, তাহলে তা চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তোলা যায়। তবে মস্তিষ্কের ক্যানসার প্রাথমিকভাবে ধরা পড়ে না তাই তা সেরে ওঠে না বেশিরভাগ সময়।
কীভাবে ক্যানসারের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব?
বর্তমানে চিকিৎসা ব্যবস্থার অনেক উন্নতি ঘটেছে। তেমনি জিনোমিক্স, বিগ ডেটা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ AI - এর মতো আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ঝুঁকি-ভিত্তিক স্ক্রিনিং করে ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। এছাড়াও নিজস্ব কিছু সচেতনতার মাধ্যমে ক্যান্সারের ঝুকিয়ে এড়ানো সম্ভব। শরীরে অস্বাভাবিকভাবে রক্তপাত, মাংসপিণ্ড অথবা ক্ষত দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। এভাবেই সময় থাকতে ক্যান্সারের সঙ্গে মোকাবিলা করা সম্ভব।