ভারত শিক্ষার ক্ষেত্রে ক্রমশ এগিয়ে চলেছে। প্রযুক্তিগত দক্ষতায়ও এখন দেশের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য হয়ত এখনও অনেকটাই পথ পেরিয়ে যেতে হবে। জীবনের এগিয়ে যাওয়ার জন্য যদি একইভাবে আমরা স্বাস্থ্য শিক্ষায়ও মনোযোগ দেই, তাহলে শুধু রোগের চিকিৎসা নয়, রোগকে প্রতিরোধ করারও নানান টেকসই উপায় বেরিয়ে আসতে পারে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এই কারণে ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের জীবন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে
এইচটি লাইফস্টাইলের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকারে, জান্দ্রা হেলথকেয়ারের ডায়াবেটোলজির প্রধান এবং রং দে নীলা উদ্যোগের সহ-প্রতিষ্ঠাতা, ডাঃ রাজীব কোভিল, জানিয়েছেন যে দুঃখের বিষয় হল ১০ জন ভারতীয়ের মধ্যে ৯ জনের মধ্যে স্বাস্থ্য সাক্ষরতার খুব অভাব। অর্থাৎ কীভাবে স্বাস্থ্য সুন্দর হবে, সেটা বেশিরভাগই ভাবেন না। এই জ্ঞানের অভাবই ব্যক্তি এবং অর্থনীতির জন্য গুরুতর সমস্যার কারণ হতে পারে। এমনকি ভারতের জিডিপিকেও প্রভাবিত করতে পারে।
অথচ এই ভারতীয়রা, প্রত্যেকেই যদি রক্তচাপ, রক্তে শর্করার ভারসাম্য এবং ট্রাইগ্লিসারাইডের মতো মৌলিক স্বাস্থ্য বিষয়গুলো বুঝতে পারতেন, তাহলে পুরো ব্যাপারটাই আলাদা হতে পারত, বলে দাবি করেছেন তিনি। আমাদের প্রতিদিনের খাবার অভ্যাসও এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন: (দিনে কতটা নুন খাওয়া উচিত? WHO-র এই উপদেশ হার্ট-কিডনির রোগ থেকে বাঁচাবে আপনাকে)
স্কুলের মতো করে, স্বাস্থ্যকর খাবার কোনগুলো, তা জানাবোঝা শুরু করা উচিত। ডাঃ রাজীব কোভিল বলেছেন যে স্বাস্থ্যকর খাওয়াই যথেষ্ট নয়, আমরা কি খাচ্ছি তাও আমাদের বুঝতে হবে। তিনি পরামর্শ দেন যে পরের বার আপনি যখন কোনও দোকানে বিস্কুট বা পানীয় কিনতে যাবেন, সেই খাবারে কতটা পুষ্টি আছে, সেদিকে মনোযোগ দিন। প্যাকেটে লেখা পুষ্টির তথ্যগুলি চেক করুন।
যেমন, ২০০ মিলি বোতলে কতটা চিনি আছে? 'স্বাস্থ্যকর' জলখাবারে কতটা নুন আছে? সবটা দেখে বুঝে তারপর কিনতে হবে। কারণ এমন অনেক খাবার রয়েছে, যেগুলো নিজেদের স্বাস্থ্যকর বলে দাবি করলেও, এতে শর্করা, চর্বি বা প্রিজারভেটিভও লুকোনো থাকতে পারে। এগুলো সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আপনার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে দিতে পারে। তাই এমন খাবারগুলি এড়ানোর জন্য, আগে খাবারের প্যাকেটের লেবেল পড়তে শিখতে হবে।
ডাঃ রাজীব কোভিল আরও বলেন, এক বাটি ডালে কত প্রোটিন আছে বা সফট ড্রিঙ্কে কতটা চিনি আছে তা জেনে রাখা ভালো। এই জ্ঞান আমাদের শরীরে সুষম খাবার পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। এইভাবে খাবারের লেবেল দেখে খাবার কেনার অভ্যাস হয়ে গেলে, প্রসেসড ফুড খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। এর পরিবর্তে বেশি করে ফল, শাকসবজি এবং গোটা শস্য খেলে, তা আমাদের স্বাস্থ্যের ব্যাপক উন্নতি করতে পারে।
আরও পড়ুন: (Sleep Divorce: রোম্যান্সের অভাবে বাড়ছে বিপদ, সঙ্গীর চেয়ে প্রিয় এখন অন্য কিছু! কী এই স্লিপ ডিভোর্স?)
আপনার স্বাস্থ্য সাক্ষরতা আছে কিনা, জানুন এই প্রশ্ন করে
আপনি আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে কতটা জানেন তা দেখতে, নিজেকে এই প্রশ্ন করুন:
১) আপনার রক্তচাপ কেমন হওয়া উচিত?
২) আপনার রক্তে শর্করার মাত্রা কেমন হওয়া উচিত?
৩) আপনার শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা কেমন হওয়া উচিত?
৪) আপনি কি খাবারের লেবেল পড়ে বলতে পারেন, কোন জিনিসে কত চিনি বা নুন আছে?
৫) আপনি প্রতিদিন যে সাধারণ খাবার খান, যেমন ভাত বা সফট ড্রিঙ্কের মধ্যে প্রধান উপাদানগুলি কী কী আছে?
এই প্রশ্নগুলি কেবল আপনার স্বাস্থ্য সাক্ষরতার পরীক্ষাই করবে না। এগুলি আপনাকে আপনার স্বাস্থ্য সম্পর্কে আরও চিন্তা করতে এবং এটি সম্পর্কে সচেতন থাকতেও সহায়তা করবে।