ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় জনবহুল দেশ। কিন্তু আগামী ৭৮ বছরে ভারতের জনসংখ্যা ৪১ কোটি হ্রাস পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। তেমনই বলছে বেশ কিছু সমীক্ষা এবং পরিসংখ্যান।
কিন্তু জনসংখ্যা কমে যাওয়া মানেই যে তার সব কিছু ভালো— তেমনটি নাও হতে পারে। পরিস্থিতির চাপে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার নেতিবাচক হয়ে গেলে, জনসাধারণের জ্ঞান এবং জীবনযাত্রার মানে তার প্রভাব পড়বে বলেও মনে করেন বহু বিশেষজ্ঞ। ভারতের ক্ষেত্রেও তেমন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তেমনই বলা হয়েছে স্ট্যানফোর্ডের একটি গবেষণায়।
গবেষণার ফল বলছে, আগামী বছরগুলিতে ভারতের জনসংখ্যার ঘনত্ব উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। ভারত এবং চিনের জনসংখ্যার মধ্যে মিল থাকলেও জনঘনত্বে বিশাল ফারাক রয়েছে। এই ফারাক আগামী সময়ে কমে যেতে পারে এবং ভারতের জনঘনত্ব হ্রাস পেতে পারে বলেও মনে করছেন অনেকে।
ভারতে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে গড়ে ৪৭৬ জন মানুষ বাস করেন। চিনে প্রতি বর্গ কিলোমিটারে তা মাত্র ১৪৮ জন। ২১০০ সাল নাগাদ, ভারতের জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে 335 জনে নেমে আসবে বলে আন্দাজ করা হচ্ছে। ভারতের জনসংখ্যার ঘনত্বের পতন বেশ বেশি। সারা বিশ্বেই জনঘনত্বের হার কমতে পারে। কিন্তু ভারতে সেই হার অন্য যে কোনও দেশের চেয়ে বেশি হবে বলে আন্দাজ।
২০২২ সালে ভারতের জনসংখ্যা ১৪১.২ কোটি। ২১০০ সালে এটি ১০০.৩ কোটিতে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘের Population Division প্রকল্পের রিপোর্ট এমন আভাসই দিচ্ছে।
এদিকে, চিন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলিতেও একই ধরনের প্রবণতা দেখা যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। চিনের এখন জনসংখ্যা ৯৩.২ কোটি। ২১০০ সালের মধ্যে তা বিস্ময়করভাবে মাত্র ৪৯.৪ কোটিতে নেমে যেতে পারে।
কিন্তু জনসংখ্যা এভাবে কমার কারণ কী? রিপোর্ট বলছে, মানুষের মধ্যে বন্ধ্যত্বের হার বাড়ছে। আর এটিই কমিয়ে দেবে জনসংখ্যা। সারা পৃথিবী জুড়েই একই ছবি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, দেশগুলি যত ধনী হচ্ছে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ততই কমছে। কারণ কমছে প্রজননের হার। এমনও আশা করা হচ্ছে, এই শতাব্দীর শেষ থেকে আফ্রিকার দেশগুলিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার বাড়তে থাকবে। বিশেষ করে কঙ্গো, মিশর, ইথিয়োপিয়া এবং নাইজেরিয়াতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী হবে বলেও আশা অনেকের।