ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং কী?
খুব সহজ করে বললে, ধরুন আপনি সকাল ৮টায় খুব ভারী ব্রেকফাস্ট করলেন। তারপর আবার সেই বিকেল ৪টেয় দুপুরের খাবার খেলেন। এই পুরোটা সময় অন্য কোনও খাবার খাওয়া যাবে না। এভাবেই দিনে একটানা অনেকক্ষণ উপোস করা হয় এই পদ্ধতিতে।
প্রথমে কম দিয়ে শুরু করলেও অনেকেই ১২-১৬ ঘণ্টা ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করেন। সেক্ষেত্রে রাতে তাড়াতাড়ি খেয়ে নেওয়া যেতে পারে। ফলে, ঘুমনোর সময়েই ৭-৮ ঘণ্টা এমনিতেই গ্যাপ হয়ে যাবে। আর সকালে সময় মতো খেলেই হল।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং-এর সুবিধা
আধুনিক যুগে বেশিরভাগ মানুষ একেকবার খাওয়ার সময়ে অনেকটা করে ক্যালোরি গ্রহণ করেন। সেই ক্যালোরি পুরোপুরি খরচ হওয়ার আগেই আবারও নতুন করে খাবার খাওয়া হয়ে যায়। ফলে, খাবার শরীরে ফ্যাট রূপে জমতে শুরু করে।
ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিংয়ের মাধ্যমে খাবারকে সম্পূর্ণ হজম হতে সময় দেওয়া হয়। ফলে, যে খাবারটা খেলেন, তাঁর বেশিরভাগ ক্যালোরি আগে খরচ হয়। এতে মেটাবলিজম স্বাভাবিক থাকে। হজমের সমস্যাও কম হয়।
এছাড়া অনেক বডিবিল্ডার ও সিনেমা তারকাই দেখবেন সকালে খালি পেটে এক্সারসাইজ করেন। এটাও কিন্তু একধরণের ফাস্টিং-এর উপর নির্ভরশীল প্রক্রিয়া। খালি পেটে কসরতের মাধ্যমে শরীরের ফ্যাট থেকে প্রয়োজনীয় শক্তি আসে। ফলে, ফ্যাট বার্ন হয়। ওজন কমে।
কীভাবে শুরু করবেন?
ফাস্টিংয়ের আগের ও পরের দুটি আহারই হবে সুষম। অর্থাত্ পর্যাপ্ত পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট ও প্রোটিন চাই। ওজন কমানোর চেষ্টায় থাকলে কার্বোহাইড্রেট সামান্য কম করা যেতে পারে।
তবে প্রচুর ফাইবারযুক্ত খাবার মিলের মধ্যে রাখতে হবে। মানে ধরুন সকালের খাবারে ওটস, বা ভুশিসমেত আটার রুটি রাখা যেতে পারে। সঙ্গে ডিম, কলা, ফল। মোটমাট ফাইবারযুক্ত হোল-কার্ব যত খাবেন, পেট তত বেশি ভর্তি থাকবে। হজম হবে ধীরে ধীরে। হজমের জন্য এনার্জি ক্ষয় বাড়বে। বাড়বে মেটাবলিজম। ফ্যাটও কমবে বসে বসেই।
একইভাবে ফাস্টিংয়ের পরের আহার করতে হবে। সেক্ষেত্রেও লাল আটার রুটি বা ব্রাউন রাইস খেতে পারেন। সঙ্গে অঙ্কুরিত ছোলা, চিকেন, অল্প তেলে রান্না মাছ, স্যালাড, সবজির তরকারি, ডিম ইত্যাদি খেতে পারেন।
তবে, একবারেই ১২ ঘণ্টা গ্যাপ দেবেন না। ধীরে ধীরে ৫-৬ ঘণ্টা থেকে বাড়াতে পারেন। তবে খাবার যেন সুষম হয়, সেদিকেও নজর রাখবেন।
তবে শুধু এতেই ওজন কমার আশা করবেন না। সকালে ঘুম থেকে উঠে অন্তত ২০ মিনিট খুব দ্রুতগতির কোনও কার্ডিয়ো, যেমন সাঁতার, দ্রুত দৌড়ানো, HIIT ব্যায়াম করুন। এক সপ্তাহেই পার্থক্য টের পাবেন।
কাদের ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং করা অনুচিত?
আগে অবশ্যই কোনও ডায়েটিশিয়ান বা চিকিত্সকের পরামর্শ নেওয়া ভাল। যাঁদের অনেকক্ষণ না খেলে সুগার, গ্যাস, দূর্বলতা, পেট জ্বালার মতো সমস্যা রয়েছে, তাঁদের এটির প্রচেষ্টা না করাই ভাল।