এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ৮ মার্চকে নারী দিবস হিসেবে পালন করে আসছে সারাবিশ্বের মানুষ। আন্তর্জাতিক নারী দিবসকে সংক্ষেপে আইডব্লিউডি বলা হয়ে থাকে। শ্রমিক আন্দোলন থেকেই উদ্ভূত হয় নারী দিবসের ধারণা। পরবর্তীতে দিনটি জাতিসংঘের স্বীকৃত পায় এবং প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী উদযাপিত হতে থাকে।
সমাজে নারীদের গুরুত্ব ও অবদানের কথা মনে করিয়ে দিতেই এই বিশেষ দিনটি পালনের শুরু। রাষ্ট্রসংঘের এবারের থিম প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে লিঙ্গসাম্য তৈরি করা। ইউনাইটেড নেশনসের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তেনিও গুতেরেস বলেন, লিঙ্গসাম্য একদিকে যেমন মানুষের মৌলিক অধিকারগুলি সুনিশ্চিত করে, তেমনই আরেকদিকে পৃথিবীর অনেক খুঁটিনাটি সমস্যারও সমাধান করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে মানুষের এই মৌলিক অধিকারই সুনিশ্চিত নয়। মৌলিক অধিকারের ক্ষতিসাধন করে পৃথিবীর কল্যাণের ক্ষতি করা হচ্ছে।’
কিন্তু এটা কি জানেন নারী দিবসের প্রতীক কেন বেগুনি?
আন্তর্জাতিক এই দিবসে কেন বেগুনি রঙের পোশাক পরা হয় কিংবা এই রঙের সঙ্গে নারী দিবসের সম্পর্ক কোথায় সে বিষয়ে কখনো ভেবে দেখেছেন? নারী দিবসের প্রতীক হলো বেগুনি রং। বিশ্ব শান্তি দিবস সবুজাভ নীল, বিশ্ব শ্রম দিবস বা মে দিবসে লাল, পরিবেশ দিবসে সবুজ রং ইত্যাদি। প্রতিটি দিবসে আলাদা রঙের প্রতীক হওয়ার পেছনেও আছে ভিন্ন ইতিহাস।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস মূলত বেগুনির সঙ্গে সাদার মিশেল কিংবা শুধুই বেগুনি। নারী দিবসের বেগুনি রং ভেনাসের। যা কি না নারীরও প্রতীক। কারণ বেগুনি নির্দেশ করে সুবিচার ও মর্যাদার। যা দৃঢ়ভাবে নারীর সমতায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম শেষে বেগুনি রং এখন নারীবাদীদের প্রতিবাদের এক অনন্য প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বেগুনি রঙের সংমিশ্রণ যার সবুজ ও সাদা দেখা হয় নারীর সমমর্যাদার প্রতীক হিসেবে। এর সূত্রপাত ঘটেছিল ১৯০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে নারীর সামাজিক ও রাজনৈতিক ইউনিয়ন থেকে। বেগুনিকে দেখা হতো নারীর ন্যায়বিচার ও সম্মানের প্রতীক। সবুজ হলো আশা ও সাদা বিশুদ্ধতার প্রতিনিধিত্ব করে। ২০১৮ সাল থেকে নারী দিবসের থিম কালার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে বেগুনি। ওই বছর আন্তার্জাতিক প্রতিষ্ঠান প্যান্টন বেগুনি রংকে নারী দিবসের রং হিসেবে ঘোষণা দেয়। এই বেগুনি দিয়ে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মিকে বোঝানো হয়। আর নারীরা হবে ঠিক অতিবেগুনি রশ্মির মতো শক্তিশালী।
নারী দিবসে আপনার পোশাকও হতে পারে বেগুনি
বেগুনি রং হল অর্জনের প্রতীক। আর এই বেগুনি পরেই নারী সামনে এগিয়ে যাবে, পথকে করে তুলবে মসৃণ। বৈষম্য ভেদ করে নারীরা অতিবেগুনি রশ্মিও পার করবে এটাই কাম্য। আর এই বিশেষ দিনটিতে বেগুনি গায়ে জড়িয়ে সমর্থন দিতে পারেন আপনিও।