একটা সেতুকে ঘিরে একটা গোটা দেশের এমন উচ্ছ্বাস বোধহয় আগে দেখা যায়নি কখনও। কোন সেতুর কথা বলছি? বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর কথা। দেড় মাস আগে ২৫ জুন উদ্বোধন করা হয়েছে পদ্মা সেতুর। বাংলাদেশের নাগরিকদের অনেক আশা, গর্ব মিশে আছে এই ব্রিজের সঙ্গে। সেতুটির উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে রীতিমত উৎসবের আমেজ দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশে। তবে এই সেতু নিয়ে, তার নির্মাণ নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। কিন্তু সব কিছুর পরেও গোটা বিশ্ব জুড়ে দারুন খ্যাতি অর্জন করেছে এই সেতু। আর এই সেতু নিয়ে কথা বলতে গিয়েই আবেগপ্রবন হয়ে পড়লেন অভিনেত্রী জয়া আহসান।
এপার-ওপার দুই বাংলার মানুষই জয়া আহসানের রূপ এবং অভিনয় দুইয়েই মুগ্ধ। তিনি সম্প্রতি কলকাতার একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। একটি ইন্টারভিউয়ে বিসর্জন-খ্যাত অভিনেত্রী জয়া আহসানকে এই পদ্মা সেতুর সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি আবেগপ্রবন হয়ে পড়েন। তিনি জানান এই সেতুর কথা ভাবলেই তাঁর মন ভালো হয়ে যায়। ভাবতে ভালো লাগে। তাঁর মতে দুই বাংলার সঙ্গেই এই সেতুর সম্পর্ক আছে। অনেক প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে গেছে এই সেতুর নির্মাণ। রেল পথে যোগাযোগ আর সঙ্গে এই পদ্মা সেতু দুটো মিলিয়ে দুই বাংলার মধ্যে যাতায়াতের রাস্তাকে অনেক সহজ করে তুলেছে বলে মনে করেন তিনি।
তবে আমরা যাঁরা সোশ্যাল মিডিয়া বা ইন্টারনেটে এই পদ্মা সেতুর ছবি দেখেছি তারা এর উচ্চতার কথা কল্পনা করতে পারব না বলেই জানিয়েছেন অভিনেত্রী। তিনি জানিয়েছেন, এই ব্রিজ যে কতটা বড়, কতটা উঁচু তা ছবি দেখে বোঝা সম্ভব নয়। অনেকটা মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে এই ব্রিজ। জয়া আহসান বাংলাদেশের জাতির জনকের সঙ্গে তুলনা করেন ঐতিহাসিক পদ্মা সেতুর। তিনি জানান তাঁদের জাতির জনক মাথা উঁচু করে দেশকে স্বাধীন করে দেখিয়ে দিয়েছেন, এই সুবিশাল ব্রিজটিকে দেখলে বা মনে পড়লে তাঁর সেই কথাই বারবার মনে পড়ে। গর্ব অনুভব করেন তিনি।
গোটা বাংলাদেশের গর্ব এই পদ্মা সেতু। একা অভিনেত্রী জয়া আহসান নন, প্রত্যেকটি বাংলাদেশের নাগরিকের গর্ব এই সেতু। এই বিষয়ে উল্লেখযোগ্য ৯.৮৩ কিলোমিটার লম্বা এই সেতু, রয়েছে দুটি তলা। এই সেতুতে রেলের ডাবল স্টেক কন্টেনার লোড মূল ব্রিজে খরচ হয়েছে ১২ হাজার ১০০ কোটি টাকা। নদী শাসনে খরচ হয়েছে ৯ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অন্যদিকে ২ হাজার ৭০০ হেক্টর জমির জন্য খরচ হয়েছে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। সর্বোপরি ১২ লেনের সংযোগকারী রাস্তায় খরচ হয়েছে ১হাজার ৯০৭ কোটি টাকা। এছাড়া রয়েছে কনসালট্যান্ট ফি, সেনা নিরাপত্তা, ইত্যাদির খরচ। এসব খাতে আরও ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ব্যবহৃত হয়েছে ৩ ডায়ামিটারের একটি ১২২ মিটার লম্বা পাইপ, এটি একটি বিশ্ব রেকর্ড কারণ এর আগে কোনও ব্রিজে এত লম্বা পাইপ ব্যবহার করা হয়নি।